ভারতের পর এবার মিয়ানমারও চাল রপ্তানিতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরিকল্পনা করছে। অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
দেশটির রাইস ফেডারেশনের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এ মাসের শেষ থেকে ৪৫ দিনের জন্য চাল রপ্তানি আমরা সাময়িকভাবে সীমিত করতে চাই।’ অভ্যন্তরীণ বাজারের চালের দাম চড়তে থাকায় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক মিয়ানমার বছরে ২০ লাখ টনের বেশি চাল রপ্তানি করে থাকে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়।
বাসমতি নয়, এমন চাল রপ্তানিতে গত মাসে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক ভারত, তাতে বিশ্ব বাজারে চাল সরবরাহ কমেছে এক কোটি টন বা ২০ শতাংশ।
আগের ১২ মাসে ভারতে খুচরা বাজারে চালের দাম সাড়ে ১১ শতাংশ বেড়ে গেছে বলে সরকারের থেকে জানানো হয়। তার মধ্যে কেবল জুনেই দাম বাড়ে ৩ শতাংশ।
মুম্বাইভিত্তিক এক রপ্তানিকারক রয়টার্সকে বলেন, ‘চালের বাজারে ভারত বা থাইল্যান্ডের মতো বড় খেলোয়াড় মিয়ানমার নয়, কিন্তু এমন একসময় নিষেধাজ্ঞা আসছে, যখন বিশ্বে পণ্যটির সরবরাহ কমে গেছে।’
এই ব্যবসায়ী মনে করেন, মিয়ানমারের এই পদক্ষেপে বৈশ্বিক চালের বাজার আরও অস্থির হবে, উদ্বেগ বাড়াবে ক্রেতাদের। চাল রপ্তানিতে ভারতের লাগাম টানার সিদ্ধান্তে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামের মতো শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশও পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
সরবরাহ কমে যাওয়ায় গত সপ্তাহে এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ দাম উঠে যায় ভিয়েতনামের চালের, দাম চড়েছে থাই চালেরও।
ভিয়েতনামের চালের (৫ শতাংশ ভাঙা) দাম বেড়ে প্রতি টন দাঁড়িয়েছে ৬৫০ থেকে ৬৬০ ডলারে। থাইল্যান্ডেও এ মানের চালের দাম বেড়ে প্রতি টন ৬৩০ ডলার হয়েছে, যেখানে আগের সপ্তাহে এই দাম ছিল ৬১৫-৬২০ ডলার।
এল নিনোর প্রভাবে উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়ার মতো আমদানিকারক দেশ চালের সংগ্রহে হন্যে হয়ে ছুটছে। তাতে বাজারে আরও অস্থিরতার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।