টানা পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার সিলেটের সব বন্দর দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি শুরু হয়েছে। এর আগে রোববার বিকেলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমদানিকারকদের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে আমদানি শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
জানা যায়, অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ২ ডলার বাড়ানোর প্রতিবাদে বুধবার থেকে সিলেট বিভাগের সব স্থল বন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেন আমদানিকারকরা। অথচ এসব বন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে মূলত বড় পাথর (বোল্ডার) এবং চুনাপাথর আমদানি হয়। কয়েকটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি হয়।
এ অবস্থায় পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেয়ায় অচল হয়ে পড়ে স্থল বন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো। আমদানি বন্ধে বিপাকে পড়েন শ্রমিকরা। সরকারও হারায় রাজস্ব।
এ অবস্থায় রোববার সিলেটে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আমদানিকারকরা। বৈঠকে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ২ ডলারের পরিবর্তে ৭৫ সেন্ট বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরপর আমদানি শুরুর সিদ্ধান্ত নেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার দুপুরে তামাবিল স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, বন্দরে ফিরে এসেছে আগের কর্মচাঞ্চল্য। ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে পাথরবাহী ট্রাক। পাঁচদিন পর কাজে ফিরতে পেরে খুশি শ্রমিকরাও।
তামাবিল চুনা পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন ছেনু বলেন, ‘কাস্টমসের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে চুনাপাথরের ডিউটি (ইমপোর্ট অ্যাসেসমেন্ট রেট) সাড়ে ১১ ডলার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১৩ ডলার এবং বড় পাথরের (বোল্ডার) রেট ১১ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৩ ডলার করার কথা জানানো হয়। তাতে করে ট্রাক প্রতি ব্যয় ১২ থেকে ১৩শ’ টাকা বেড়ে যাবে। তাই আমরা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছিলাম।’
তামাবিল চুনা পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, ‘যে কোনো সিদ্ধান্তই আমাদের সঙ্গে আগেভাগে আলোচনা করে নিলে ভালো হয়। হঠাৎ করে কিছু চাপিয়ে দিলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা খারাপ। তার ওপর টন প্রতি ২ ডলার করে ডিউটি বাড়িয়ে দেয়া একেবারে অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। তবে শেষ পর্যন্ত কাস্টমস কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় আমরা খুশি। দেশের স্বার্থে আমরাও কিছুটা ছাড় দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে কাস্টমসের সিলেট অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার সোলাইমান হোসেন বলেন, ‘অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে নেয়া হয়েছিল। তবে ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে এটা পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে। আগের ৮৪ টাকার পরিবর্তে এখন ডলারের মূল্য ১০৯ টাকা। ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণেই শুল্ক বেড়েছে।’
প্রসঙ্গত, সিলেট বিভাগে তামাবিল স্থলবন্দর ছাড়া আরও ১২টি শুল্ক স্টেশন রয়েছে। সেগুলো হলো- কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের বাগলি, বড়ছড়া ও চারাগাঁও এবং ছাতকের ইছামতি ও চেলা স্টেশন। এগুলো দিয়ে মূলত চুনাপাথর ও বোল্ডার আমদানি হয়।