আমদানিতে কঠোরতা আরোপ করা সত্ত্বেও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএনবি।
২০২২ অর্থবছরে এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত অর্থবছরে (জুলাই-জুন) বাংলাদেশ ৬৯ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এ সময়ের মধ্যে ৫২ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১৭ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
২০২৩ অর্থবছরে আমদানি কমেছে ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ, যেখানে রপ্তানি বেড়েছে ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি হওয়ায় বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আশানুরূপ হচ্ছে না, বৈদেশিক বিনিয়োগ কমছে, এর প্রভাবে বাণিজ্য ঘাটতির মধ্যে পড়ছে বাংলাদেশ।
২০২৩ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি সামগ্রিক বাণিজ্য ভারসাম্যে একটি বড় ব্যবধান তৈরি করেছে। এ ঘাটতির পরিমাণ ৮ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
সামগ্রিক চলতি হিসাবে ঘাটতি বৃদ্ধির অর্থ হলো- বিভিন্ন উৎস থেকে দেশে আসা বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ, যা পরিশোধ করা হচ্ছে তার চেয়ে বেশি। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৩ অর্থবছরে ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন বিক্রি করেছে। আগের অর্থবছরে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এভাবে ডলার বিক্রির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। চলতি বছরের ২৫ জুন পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে।
২০২৩ অর্থবছরে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ কমে ৪ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা ২০২২ অর্থবছরে ছিল ৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার।
২০২৩ অর্থবছরে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে বাংলাদেশ, যা ২০২২ অর্থবছরে ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, রপ্তানির চেয়ে বেশি আমদানি, রেমিট্যান্সের মন্দা এবং এফডিআই প্রবাহের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ।