সপ্তাহের শেষ দিনে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইতে প্রধান সূচক বেড়েছে প্রায় সাত পয়েন্ট। সূচক কতটুকু বেড়েছে, তার চেয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে দিনশেষে তা ইতিবাচক ছিল কি না। কেননা, কয়েকদিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই সকালে ইতিবাচক থাকা সূচক লেনদেনের শেষ ভাগে এসে নেতিবাচক হতে দেখা যায়।
সদ্য শেষ হওয়া সপ্তাহে সূচকের বড় কোন উত্থান-পতন চোখে না পড়লেও লেনদেন কমেছে বেশ খানিকটা।
ডিএসইর হিসেব বলছে, শেষ হওয়া সপ্তাহের পাঁচ কর্মদিবসে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ২ শ’ ৫৬ কোটি টাকা। এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিলো ৪ হাজার ৭ শ’ ৩৫ কোটি টাকা। সদ্য শেষ হওয়া সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬ শ’ ৫১ কোটি টাকার কিছু বেশি। তার আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন ছিলো ৯ শ’ ৪৭ কোটি টাকা। সদ্য শেষ হওয়া সপ্তাহের কিংবা দিনের হিসাব- দুই ক্ষেত্রেই লেনদেন কমেছে ৩১ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ কমে এসেছে মোট লেনদেন।
টাকার অংক থেকে বের হয়ে লেনদেনর সংখ্যার দিকে তাকালে দেখা যায়, ডিএসইতে সদ্য শেষ হওয়া সপ্তাহে মোট ৭১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা লেনদেন করেছে বিনিয়োগকারীরা। যা তার আগের সপ্তাহে ছিল ১ শ’ ১৯ কোটির চেয়েও বেশি। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমায় লেনদেন সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে এ সপ্তাহে।
লেনদেন কমার এমন অস্বস্তির মধ্যে অবশ্য ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্সে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। শেষ হওয়া সপ্তাহের পাঁচ কর্মদিবসে সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের শুরুতে ৬ হাজার ৩ শ’ ৬৫ পয়েন্টে থাকা সূচকটি শেষ করেছে ৬ হাজার ৩ শ’ ৩৯ পয়েন্টে এসে।
অবশ্য এই সপ্তাহে খানিকটা বেড়েছে বাজার মূলধন। সপ্তাহের শেষ দিনে এসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজারের বাজার মূলধন ১ শ’ ১ কোটি টাকা বেড়ে দাড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮ শ’ ৯৮ কোটিতে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ৩১ শতাংশ লেনদেন কমে যাওয়াকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দূর্বলতা হিসেবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আল-আমিন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা শেয়ার কেনা যাচ্ছে ব্লক মার্কেটে। যার কারণে বড় বিনিয়োগকারীরা মূল বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রেও বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন ৫ লাখ টাকা লেনদেন করার বিধান থাকায় ছোট বিনিয়োগকারীরা ব্লক লেনদেন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
যেকোনো নিয়ম শেষপর্যন্ত ছোট বিনিয়োগকারীদের বিপক্ষে যায় বলেও মন্তব্য করেন আল-আমিন।