বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ে সুসংবাদ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে প্রবৃদ্ধি নিয়ে হতাশার কথা শুনিয়েছে সংস্থাটি।
আইএমএফ বলছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে ২০২২ সালের তুলনায় চলতি ২০২৩ ও আগামী ২০২৪ সালে দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কমবে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ২০২২ সালে যেখানে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল, সেখানে চলতি বছরে তা কমে ৩ শতাংশে নেমে আসবে। আর ২০২৪ সালেও প্রবৃদ্ধি হবে ৩ শতাংশ।
এদিকে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদহার বাড়ানোর ফলে তা তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সেই সুবাদে বৈশ্বিক গড় মূল্যস্ফীতি কমে চলতি ২০২৩ সালে ৬ দশমিক ৮ শতাংশে এবং ২০২৪ সালে আরও কমে ৫ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসবে, যা ২০২২ সালে ছিল ৮ দশমিক ৭ শতাংশ।
আইএমএফের ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক আপডেট: নিয়ার টার্ম রেজিলিয়েন্স, পারসিসট্যান্ট চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ে এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। সংস্থাটির এবারের পূর্বাভাস, গত এপ্রিলের ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ বা বিশ্ব অর্থনৈতিক পূর্বাভাস’ নামের প্রতিবেদনের চেয়ে সামান্য বেশি।
তবে নতুন প্রাক্কলনটি ঐতিহাসিক মানদণ্ড বিবেচনায় দুর্বলই রয়ে গেছে। যেমন-২০২৩ ও ২০২৪ সালের জন্য বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে হারে প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে, তা ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বার্ষিক গড়ের চেয়ে কম। তখন বিশ্ব অর্থনীতিতে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
আইএমএফের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি ও আগামী বছর উদীয়মান ও উন্নয়নশীল এশীয় দেশগুলোর মধ্যে চীনে ৫ দশমিক ২ ও ৪ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ভারতে ৬ দশমিক ১ ও ৬ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
২০২৩ ও ২০২৪ সালে উন্নত দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ১ দশমিক ৮ ও ১ শতাংশ, জার্মানিতে মাইনাস দশমিক ৩১ ও ১ দশমিক ৩, জাপানে ১ দশমিক ৪ ও ১ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে দশমিক ৪ ও ১ শতাংশ এবং মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবে ১ দশমিক ৯ ও ২ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হলেও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কিছু বলা হয়নি। তবে গত ১১ এপ্রিল প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। আর গত ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে বলে আভাস দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থাটি। জুলাইয়ের আউটলুকে যেহেতু বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে কোনো আপডেট দেয়া হয়নি, তার মানে এপ্রিলের আপডেটই বহাল রেখেছে আইএমএফ।