‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’ নামে ১০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের আকার বাড়ল ৫ গুণ। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে গঠিত এই তহবিল বাড়িয়ে ৫০০ কোটি টাকা করেছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন বিভাগ রোববার এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে।
সরকারের ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন এবং দেশের সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে তাদেরকে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার লক্ষ্যে গত বছরের জুনে বাংলাদেশ ব্যাংক ১০০ কোটি টাকার একটি আবর্তনশীল পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে।
ওই সার্কুলারে বলা হয়, ‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’ নামে এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পাবেন গ্রাহকরা। এ তহবিল থেকে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল অ্যাপস, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, ই-ওয়ালেট ইত্যাদি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে তফসিলি ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত তহবিলের মেয়াদ হবে ৩ বছর। প্রথম পর্যায়ে ৫০ কোটি টাকা দেয়া হবে। ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৫০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দেয়া হবে। তখন আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে চাহিদা বিবেচনায় এ পুনঃঅর্থায়নের পরিমাণ বাড়ানো হবে।
সবশেষ রোববার জারি করা নতুন সার্কুলারে তহবিলের আকার বাড়ানো বিষয়ে বলা হয়, ‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সম্প্রসারণ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ত ও উৎসাহিত করার মাধ্যমে সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রাকে আরও ত্বরান্বিত করতে তহবিলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হলো।’
তফসিলি ব্যাংকগুলো এ তহবিল থেকে অর্থ নিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা শিডিউল অফ চার্জেস সংক্রান্ত বিদ্যমান নীতিমালায় বর্ণিত চার্জ বা ফি ছাড়া গ্রাহকের কাছ থেকে অন্য কোনো ধরনের চার্জ বা ফি আদায় করতে পারবে না ব্যাংক। ব্যাংক এবং গ্রাহক উভয় পর্যায়ে ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৬ মাস। গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করা ঋণ আদায়ের সব দায়-দায়িত্ব ঋণ বিতরণকারী ব্যাংক বহন করবে।
অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলো প্রতি তিন মাস অন্তর বাংলাদেশ ব্যাংককে সুদসহ আসল ফেরত দেবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুদসহ পুনঃঅর্থায়িত অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চলতি হিসাব বিকলন করে তা আদায় করা হবে।
গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণকৃত ঋণ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক আদায় করবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ আদায়ের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাওনাকে সম্পর্কিত করা যাবে না।
ঋণ বিষয়ক যাবতীয় ঝুঁকি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বহন করবে। অর্থায়নকারী ব্যাংক এ তহবিলের আওতায় বিতরণকৃত ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করবে।