ভারত থেকে আমদানি শুরুর পর দেশের বাজারে কাঁচামরিচের দাম দ্রুত কমে আসছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি গত এক সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৪০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। ঈদে কাঁচা মরিচের এই কয়েক গুন বাড়তি দামের জন্য বিপাকে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষের।
পর্তুগিজদের হাত ধরে এই উপমহাদেশে আসা মরিচ এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। মরিচ ছাড়া রান্নার আয়োজন অসম্পূর্ণ। কিন্তু হঠাৎ করেই কাঁচামরিচের দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। কাঁচামরিচের দামে এই উল্লম্ফন এক সপ্তাহ ধরে খবরের শিরোনাম হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে আলোচনা, সমালোচনা ও ট্রল।
কাঁচামরিচের দামে এমন ঊর্ধ্বগতিতে লাগাম টানতে সরকার পণ্যটি আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। এর ধারবাহিকতায় রোববার প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি শুরু হয়।
আমদানির সুবাদে বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঁচামরিচের দাম কমে আসছে। রাজধানীর বাজারে তিনদিনের ব্যবধানে কাঁচামরিচের কেজি ৬০০ টাকা অর্ধেকে নেমে এসেছে। মঙ্গলবার ঢাকায় প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ২৪০ থেকে ৩২০ টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে কাঁচামরিচের দাম দ্রুত কমে আসার চিত্র পাওয়া যায়।
মোহাম্মদপুর বসিলা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা সজীব সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) সকালে দেশি কাঁচামরিচ কিনেছি ১ হাজার ৩০০ টাকা পাল্লা (পাঁচ কেজি)। সে হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়েছে ২৬০ টাকা। আর বিক্রি করছি ৩২০ টাকা কেজি দরে। আগের দিন সোমবার মরিচের আমদানি ভালো ছিল। সে সুবাদে ২০০ টাকা কেজি দরে কিনে ২৮০ টাকায় বিক্রি করেছি।’
তবে খুচরা বাজারের তুলনায় কারওয়ান বাজার থেকে কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কমে কাঁচামরিচ কেনা যাচ্ছে। আর এক দিন আগের মরিচ মিলছে ২০০ টাকা কেজি দরে।
কারওয়ান বাজারের রাস্তায় কাঁচামরিচ বিক্রি করেন মো. ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আজকে কাঁচামরিচ কিনেছি ২৩০ টাকা কেজি দরে। বিক্রি করছি ২৪০ টাকা কেজি। আমরা খুবই কম লাভে বিক্রি করি। লাভ কম করি, বিক্রি বেশি করি। এটা গতকালের চেয়ে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি।’
পাশের দোকানদার মো. রনি বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্যে কাঁচামরিচ কিনেছিলাম। কারণ গতকালের মরিচ ভালো ছিল না। পচা-ভালো মরিচ মেশানো ছিল। ওই মরিচ রেখে দিলে সব পচে যেত। তাই কিছুটা কম দামেই বিক্রি করতে হয়েছে।
‘ইন্ডিয়া থেকে আনতে বেশি সময় লেগে যাওয়ায় কাঁচামরিচ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বাজারে এখন বেশিরভাগই ইন্ডিয়ান মরিচ। ২৩০ টাকা কেজি দরে মরিচ কিনে আজকে ২৪০ টাকায় বিক্রি করছি।’
তবে কারওয়ান বাজারের ভেতরে দোকানিরা একটু বেশি দামে কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন। এখানে কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি।
কারওয়ান বাজারের ভেতরের কাঁচামরিচ বিক্রেতা মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আজ মরিচ বিক্রি করছি ২৮০ টাকা কেজি। ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ কিনেছি আজ। ভালো-মন্দ মিলিয়ে অনেক রকম কাঁচামরিচ পাওয়া যায় কারওয়ান বাজারে। দুই-চারটা পচা থাকলে ওই মরিচের দাম কম। আমার মরিচ একদম ফ্রেশ।’
তিনি বলেন, ‘দেশি মরিচ বিক্রি করছি ২৮০ টাকা কেজি। আর ইন্ডিয়ান মরিচ বিক্রি করছি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি। গতকাল (সোমবার) ২০০ টাকা কেজিও বিক্রি করেছি। আজকে আমদানি কম, তাই দাম একটু বেশি। কাঁচামালের দামের কোনো ঠিকঠিকানা নাই।’