বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। এতে রেপো হার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক ঋণের সুদ হারের সীমা তুলে দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার রোববার বেলা ৩টার দিকে এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন।
সুদ হার সীমার বদলে প্রতিযোগিতামূলক ও বাজারভিত্তিক সুদ হার কার্যকর হবে। অবশ্য তার মার্জিন থাকবে। ব্যাংক ঋণের সুদ হারে এত দিনের ৯ শতাংশের সীমা তুলে দিয়ে ‘রেফারেন্স রেট’ অনুযায়ী সুদ হার নির্ধারণের নতুন নিয়ম চালু হচ্ছে।
এর মধ্য দিয়ে সমাজে অতিরিক্ত মুদ্রার সরবরাহে রাশ টানা হবে; মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায়ও এই সিদ্ধান্ত কাজে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গভর্নর জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেপো হার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। এতে রেপো হার ৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশে উঠবে। সেই সঙ্গে রিভার্স রেপো হার ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে ৪ দশমিক ২৫ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে তা হবে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
রেপো সুদহার হিসেবে পরিচিত নীতি সুদ হার বাড়ানোর অর্থ হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করতে এখন বাড়তি সুদ দিতে হবে ব্যাংকগুলোকে। ব্যাংকগুলো সাধারণত এক থেকে সাত দিনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এমন সুদে টাকা ধার করে থাকে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে তারল্য ও বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে সুদ হারে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়, তাকে বলে ব্যাংক রেট। আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে বাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় গত বছর থেকেই রেপো হার বাড়াতে শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে তখন থেকেই বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণের সুদ হার সীমা তুলে নেয়ার আলোচনা হচ্ছে।
নীতি সুদ হার বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ হার সীমাও তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মুদ্রানীতিতে ঘোষণায় বলা হয়।