বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘বাজেট মানেই আরেক দফা দাম বৃদ্ধি’

  •    
  • ৪ জুন, ২০২৩ ২১:১২

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা মারিয়া রহমান বলেন, ‘বাজেট হলো ঘোষণা দিয়ে জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বাড়ানোর প্রক্রিয়া। আমার কাছে অন্তত তা-ই মনে হয়। সারা বছরই বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়ে। আর বাজেট ঘোষণা হলে সব জিনিসের দাম একসঙ্গে বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরাও একটা অজুহাত পেয়ে যান। আবার যেসব পণ্যের দাম কমার কথা সেগুলোর দামও কমে না।’

‘সরকার কবে বাজেট দেয় হেইডা জানি না। তয় সিগারেটের দাম বাড়লেই বুঝি বাজেট আইতাছে। গত ১ মাস আগে থাইকাই সিগারেটের দাম বাড়ছে। তহনই বুঝছি সরকার সামনে বাজেট দিবো। শুধু সিগারেটই না, বাজেট অইলেই সব জিনিসের দাম বাড়ে। এহন তো সব জিনিসেরই দাম বাড়ছে।’

জাতীয় বাজেট নিয়ে এভাবেই নিজের ভাবনা নিউজবাংলার কাছে তুলে ধরেছেন রাজধানীর কারওয়ান বাজারের চা-সিগারেট বিক্রেতা সুমন মিয়া।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

প্রস্তাবিত এই বাজেট নিয়ে নিউজবাংলার কাছে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা মারিয়া রহমান বলেন, ‘বাজেট হলো ঘোষণা দিয়ে জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বাড়ানোর প্রক্রিয়া। আমার কাছে অন্তত তা-ই মনে হয়। সারা বছরই বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়ে। কিন্তু বাজেট ঘোষণা হলে সব জিনিসের দাম একসঙ্গে বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরাও একটা অজুহাত পেয়ে যান। আবার যেসব পণ্যের দাম কমার কথা সেগুলোর দামও কমে না।

‘তবে নিউজে দেখলাম এবার সরকার বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বাড়িয়েছে। যেমন প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা ইত্যাদি। এটা একটা ভালো পদক্ষেপ।’

আশরাফুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘গণমাধ্যমে নিউজ দেখে যতটুকু বুঝলাম তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে এই বাজেটের একটা ইতিবাচক দিক হলো, দেশে উৎপাদিত পণ্যের দাম কমছে। আর বিদেশ থেকে আমাদানি করা পণ্যের দাম বাড়ছে। এটা ভালো দিক। কারণ বিদেশি পণ্যের দাম বাড়লে, দেশি পণ্যের ব্যবহার বাড়বে। তাতে দেশে কলকারখানা প্রতিষ্ঠা হবে। কর্মসংস্থানও বাড়বে।

বেসরকারি চাকরিজীবী আতাউর রহমান বলেন, ‘এবারের বাজেট হলো সরকারের ইনকামের বাজেট। সবকিছু থেকেই সরকার আয় করতে চাচ্ছে।

আরেকটি বিষয় হলো, ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে বাজেটের যেটুকু সুফল জনগণ পাওয়ার কথা সেটুকুও পাবে না। কারণ একটু খেয়াল করলেই দেখবেন যে বাজেটে যেগুলোর দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলোর দাম রাতারাতি বেড়ে গেছে। আবার যেসব পণ্যের দাম কমানোর কথা প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলোর দাম কবে কমবে বা আদৌ কমবে কিনা আমরা জানি না। এসবই ব্যাবসায়ীদের কারসাজি।’

মোবাইল ফোন সেটের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সোহানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নিউজে দেখলাম মোবাইল ফোন সেটের দাম বাড়ছে। অথচ সরকার ঘোষণা দিচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ করার, স্মার্ট বাংলাদেশ করার। এই দুটোর জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মোবাইল ফোন। সেখানে মোবাইল সেটের দাম বাড়ানোর কোনো যুক্তি অন্তত আমি খুঁজে পাই না। এটা ডিজিটাল বাংলাদেশের বক্তব্যের সঙ্গে যায় না।’

রিটার্ন জমার প্রস্তাব নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াই বেশি

বিশেষত নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো এই রিটার্ন জমা দিলেই বাধ্যতামূলকভাবে ২ হাজার টাকা আয়কর দেয়ার বিষয়টি। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াই বেশি।

চাকুরিজীবী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবরে দেখলাম রিটার্ন জমা দিলেই দুই হাজার টাকা কর দিতে হবে। করযোগ্য আয় না থাকলেও কর দিতে হবে- এটা কোনো কথা হতে পারে না। আমি চাকরি করি, আমার একটা টিআইএন আছে।

‘বাধ্যতামূলকভাবে রিটার্ন জমা দেই তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ধরুন কাল আমার চাকরি চলে গেল। পরবর্তী এক বছর আমাকে বেকার থাকতে হলো। এ অবস্থায় উপার্জন না থাকলেও টিআইএন থাকার কারণে আমাকে ২ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। এটা সম্পূর্ণ বাস্তবতাবর্জিত প্রস্তাব।’

জাহাঙ্গীর আলম নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘লেখাপড়া শেষ করে ব্যবসা করার জন্য টিআইএন সার্টিফিকেট খুলেছিলাম। কিন্তু তার কিছুদিন পরই করোনা সংক্রমণ চলে আসায় আমার আর ব্যবসা করা হলো না। এখনও আমি বেকার। অথচ যেহেতু টিআইএন আছে তাই আমাকে বাধ্যতামূলক ২ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। সরকার এটা কী করলো বুঝলাম না। আমার কোনো আয় নেই অথচ আয়কর দিতে হবে!’

তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেন বেসরকারি চাকুরে ওবায়দুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে প্রতিটি সক্ষম ব্যক্তিরই উচিত আয়কর দেয়া। যে ব্যক্তির টিআইএন আছে তার কাছে বছরে ২ হাজার টাকা আয়কর দেয়া বড় কোনো বিষয় নয়।

‘বিষয়টি নিয়ে শুধু শুধুই বিতর্ক করা হচ্ছে। টিআইএন তো রিকশাওয়ালারা করে না, যাদের সামর্থ্য আছে তারাই করে। বর্তমান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বছরে ২ হাজার টাকা তো আমাদের রিকশাওয়ালারাও দিতে পারে। সেখানে টিআইএনধারীরা দিতে পারবে না কেন?’

এ বিভাগের আরো খবর