আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে নেয়া ঋণকে ‘ব্রিদিং স্পেস’ বা কিছুটা স্বস্তির উপলক্ষ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের হোটেল রিজ কার্টলে শনিবার আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা সাক্ষাৎ করতে এলে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা আপনাদের যে লোনটা নিয়েছি আইএমএফের, একটা ‘ব্রিদিং স্পেস’ হিসেবে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইএমএফ এমডি প্রধানমন্ত্রীর অভূতপূর্ব প্রশংসা করেছেন। পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশ রোল মডেল (সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে)। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি এই কোভিডের পরেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রেখেছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (আইএমএফ এমডি) প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের খুবই প্রশংসা করেছেন; বলেছেন সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে এই ধরনের ভিশন, এই ধরনের লিডারশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
আবদুল মোমেন জানান, ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ভালো কানেকটিভিটি ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, বিশেষ করে এই করোনার মধ্যেও স্থিতিশীলতা ধরে রাখার প্রশংসা করেন আইএমএফের এমডি।
আইএমএফপ্রধানের সঙ্গে আলাপে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের এই উন্নয়ন রাতারাতি হয়নি, এটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ফসল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যখন জেলে ছিলেন তখন বাংলাদেশকে কীভাবে উন্নত করবেন সেই পরিকল্পনাগুলো করেছেন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা এবং নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, গত ১৪ বছরে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে আইএমএফ সবসময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে। বাংলাদেশ কখনও এটি (পরামর্শ) থেকে বিচ্যুত হয়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে আইএমএফের সঙ্গে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশ মাত্র ২ সপ্তাহের আলোচনায় এটি পেয়েছে, যেখানে বহু দেশ বছরের পর পর আলোচনা করেও এই লোন পায় না।
আইএমএফপ্রধানকে উদ্ধৃত করে আবদুর রউফ বলেন, আইএমএফ ভবিষ্যতেও এই ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় আইএমএফের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আশা প্রকাশ করেছেন ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যহত থাকবে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করে।
বাংলাদেশ ৪২ মাসে ৭ কিস্তিতে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার পাবে। এ ঋণের গড় সুদ ২ দশমিক ২ শতাংশ।