মাছ, মাংস আর সবজির দাম যে কয়েক দফা বেড়েছিল, দ্রুতই তা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হচ্ছে। কিছু কিছু মাছ আর সবজির দাম অল্প অল্প করে আরও বাড়তে শুরু করেছে।
ভোক্তাদের অনেকেই ধারণা করেছিলেন, কয়েক রমজানের পর থেকে এসব পণ্যের দাম কমবে। কিন্তু তার কোনো চিহ্ন বাজারে নেই। বাধ্য হয়ে তাই এসব কেনাই কমিয়ে দিয়েছেন কেউ কেউ।
শুক্রবার রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির যে চড়ামূল্য রমজানের শুরুতে ছিল, সেটিই এখনো বহাল আছে। আর গরু ও খাসির মাংসের দামও কমার নামগন্ধ নেই। পাশাপাশি উত্তাপ ছড়াচ্ছে মাছের বাজারও।
ব্রয়লার মুরগি নিয়ে কিছুদিন হট্টগোল লেগে ছিল, এর কয়েকদিন পার হলেও সেই চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার। বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়। পাশাপাশি সোঁনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, এ ছাড়া লাল কক লেয়ার মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি গরুর মাংসের দামও সেই আগের মতোই চড়া আছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি, আর ছাগলের মাংস ১০৫০ টাকা কেজি।
ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন, ঈদের আগে এ দাম আরও একটু বাড়তে পারে। তবে দাম বাড়ার ফলে অনেকেই মাংস কেনা কমিয়ে দিয়েছেন বলেও জানিয়েন মাংস বিক্রেতারা।
বাড্ডা বাজারের মাংস বিক্রেতা কালু কসাই বলেন, ‘দাম তো আর আমরা বাড়াই না। গরুর খাবারের প্রত্যেকটার দাম বাড়ছে। মাসে একটা গরুর পেছনে ৮ হাজার টাকার খাবার চলে যায়। এতে তো মাংসের দাম এমনিতেই বেড়ে যায়।
‘দাম কম থাকলে কাস্টমার বেশি থাকে। এতে তো আমাদেরই লাভ, এখন তো কাস্টমার অনেক কম। বেচাবিক্রিও কম।’
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সবগুলো সবজিই গত সপ্তাহের তুলনায় অপরিবর্তিত দরে বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে কোনোটার দাম কিছুটা বাড়তির দিকেও রয়েছে।
বাজারে বেগুন প্রতি কেজি অপরিবর্তিত ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, টমেটো ৫০ টাকা কেজি, করলা ১০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা কেজি, আলু ২৫ টাকা কেজি ও কাঁচামরিচ ১০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার চড়া
মাংস আর সবজির পাশাপাশি মাছের বাজারও গত সপ্তাহের তুলনায় অপরিবর্তিত ও চড়া রয়েছে। প্রতি কেজি রুই ২০ টাকা বেড়ে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, পাঙ্গাশ প্রতি কেজি ২০ টাকা বেড়ে ২২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ইলিশ প্রকারভেদে ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
রামপুরা বাজারে সাইফ ইবনে সাত্তার নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘সবকিছুর এই চড়া দামে আমরা ভোক্তারা পিষে যাচ্ছি। একটা বা দুইটা জিনিসের দাম যদি বেশি থাকতো তাহলে মনটাকে বোঝানো যেত, কিন্তু সবকিছুর দামই বেশি।
‘কীভাবে আমরা খেয়ে বেঁচে থাকব? এভাবে চলতে থাকলে কয়দিন পর না খেয়ে থাকতে হবে। যে হারে সবকিছুর দাম বাড়ছে, সে হারে তো বেতন বাড়ে নাই। বেতন বাড়লে এই চড়া দাম তখন গায়ে লাগত না।’