বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হালাল খাবার আর বেহালার শহর পিংগু

  •    
  • ৩ এপ্রিল, ২০২৩ ২০:৩৬

হালাল খাবার উৎপাদনের জন্য চীনের রাজধানী বেইজিং থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরের জনপদ ‘পিংগু’ বিশেষ একটি পরিচিতি পেয়েছে। এর আরেকটি বিশেষ পরিচিতি রয়েছে ‘বেহালার শহর’ হিসেবে। এখানে একটি কারখানায় তৈরি বেহালা ৩০টির বেশি দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে।

চীনের রাজধানী বেইজিং থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরের জনপদ ‘পিংগু’। ইতোমধ্যে হালাল খাবারের জন্য আলাদাভাবে পরিচিতি পেয়েছে এই স্থান।

নানা কারণেই বিশ্বে হালাল খাবারের আলাদা চাহিদা তৈরি হয়েছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার যোগান দিতে বাড়ছে এই খাতে বিনিয়োগও।

চীনের পিংগু বিভাগে হালাল খাবার তৈরির কারখানা তৈরি করেছে জিনজিগুয়ান ফুড টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড। বিনিয়োগের পরিমাণ ১২০ মিলিয়ন ইউয়ান। বিশাল এলাকা জুড়ে স্থাপিত এই কারখানায় ৮ হাজার ৮০০ মিটার জুড়ে চলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের কাজ।

সুপরিসর এই কারখানায় প্রধানত মাংস, মসলা, হিমায়িত পাস্তা ও চালের পণ্য, গরম-প্রক্রিয়াজাত পেস্ট্রি এবং আগে থেকে তৈরি খাবার প্রক্রিয়াকরণ করা হয়।

কারখানাটির উৎপাদন কেন্দ্র দুই ভাগে ভাগ করা- পেস্ট্রি ওয়ার্কশপ ও রান্না মাংস ওয়ার্কশপ। পেস্ট্রি ওয়ার্কশপে প্রধানত মন্টো, ভাজা রুটি, বাদামি চিনি ও তিলের পেস্ট দিয়ে বাষ্পযুক্ত বান এবং আঠালো চালের কেক তৈরি করা হয়।

এছাড়া গরুর মাংসের পাই, চীনা হ্যামবার্গার, ডাম্পলিংস, ওয়ানথন, টাটকা নুডলস ও আধা শুকনো নুডলস তৈরি করা হয়।

এখানে প্রতি ঘণ্টায় মন্টো ও ভাজা রুটি তৈরি হয় ৬ হাজার এবং বাস্পযুক্ত বান তৈরি হয় ৪ হাজার পিস।

কারখানাটিতে তৈরি করা হয় একটি চীনা ঐতিহ্যবাহী নাস্তা, যার নাম জেনগাও। এটি আঠালো ভাত, খেজুর বা মিছরি দিয়ে ভাপানো হয়। একটি লোহার পাত্রে খেজুর, লাল মটরশুটি ও কিসমিস দিয়ে ভাপানো খাবার। প্রতিটি শস্যদানা কোনো ধরনের ফাটল ছাড়াই সম্পূর্ণরূপে সিদ্ধ করা হয়।

কারখানাতে স্বয়ংক্রিয় প্যাকেজিং মেশিনের মাধ্যমে, অনলাইন ওজন ও লেবেলিং মেশিন এবং অনলাইন ডিটেক্টরের মাধ্যমে প্রাক-প্যাকেজিং, ওজন এবং লেবেলিং করা হয়। বিভিন্ন ধরণের প্যাকেজিং সরঞ্জাম রয়েছে। যেমন বালিশ-টাইপ প্যাকেজিং মেশিন, মাল্টি-হেড লম্বালম্বি প্যাকেজিং মেশিন, প্রসারিত ফিল্ম প্যাকেজিং মেশিন এবং ইনফ্লাটেবল প্যাকেজিং মেশিন।

মার্কেট ওয়াচের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী হালাল খাদ্যের বাজারে লেনদেন ছিল প্রায় ১৫ লাখ ২২ হাজার ১৭০ মিলিয়ন ডলার। ২০২৮ সাল নাগাদ ৪ দশমিক ৩ শতাংশ চক্র বৃদ্ধি হারে তা ১৯ লাখ ৫৯ হাজার ৬১০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।

মূলত মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা হালাল খাদ্য গ্রহণ করে। তবে বর্তমানে অমুসলিম ভোক্তাদের মাঝেও এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী হালাল খাদ্যের বাজারে জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক রেস্তোরাঁ এবং ফাস্টফুড চেইনের মধ্যে কেনটাকি ফ্রাইড চিকেন (কেএফসি), ম্যাকডোনাল্ডস অন্যতম।

পিংগুতে হালাল খাবার তৈরির প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, খাবারের মান যাচাইয়ের জন্য এখানে রয়েছে গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ, পরিদর্শন ল্যাব এবং মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব খাদ্য উন্নয়ন বিভাগ। সম্পূর্ণ যন্ত্রের মাধ্যমে হালাল উপায়ে বিভিন্ন খাবার তৈরি করা হয় এখানে। সব ঋতুতে খাদ্যের উত্পাদন প্রক্রিয়া ও গুণমান নিশ্চিত করতে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় তাপ নিরোধক যন্ত্র।

পিংগু শহরে বেইজিং হুয়াডং মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট কোম্পানিতে তৈরি হচ্ছে বেহালা। ছবি: নিউজবাংলা

বেহালার শহর

বাংলায় বেহালা। ইংরেজিতে বলে ভায়োলিন। এক ধরনের বাদ্যযন্ত্র যা ধনুক তন্তুর সম্মিলনে সুর সৃষ্টি করে। ভায়োলিন এমন এক বাদ্যযন্ত্র, যার সুর মোহিত করবে সবাইকে।

চীনের পিংগু শহরে দেখা মিলবে নানা রকমের বেহালার। এখানে হরেক রকমের বেহালার সমাহার সবার দৃষ্টি কাড়ে।

১৯৮৮ সালে বেইজিং হুয়াডং মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে বিশ্বমানের বেহালা তৈরির কারখানা। ১৪ হাজার ২০০ বর্গমিটার এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই কারখানা। এখানে রয়েছে ভায়োলিন কালচার এক্সপেরিয়েন্স হল, টপ-নোচ ভায়োলিন বৈশিষ্ট্যযুক্ত শো-রুম এবং পার্টি ও গ্রুপ অ্যাক্টিভিটি রুম।

গেল ৩৩ বছরের প্রচেষ্টায় এই উৎপাদক কোম্পানি একটি পেশাদার এবং নেতৃস্থানীয় বেহালা তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেছে। এখানে তৈরি বেহালার ব্যাপক চাহিদা চীন জুড়ে। পিংগু শহরের ডংগাওকুননে অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানকে ‘বেহালা উৎপাদন কেন্দ্র’ বলা হয়ে থাকে।

কোম্পানির একাধিক কর্মকর্তা জানান, এখানে তৈরি ৮০ শতাংশ বেহালা ৩০টিরও বেশি দেশে বিক্রি হয়। প্রধানত ইউরোপ, আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এখানকার বেহালার চাহিদা বেশি।

কোম্পানিটি বেহালা রপ্তানির মাধ্যমে আয় করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। পাশাপাশি ডংগাওকুন শহরকে বেহালা তৈরির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবেও খ্যাতি এনে দিয়েছে এই শিল্প।

এ বিভাগের আরো খবর