বাজার ব্যবস্থাপনার মান বাড়িয়ে দ্রব্যমূল্য কমিয়ে মানুষকে স্বস্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি। তারা বলেছে, বিশ্ববাজারের দোহাই দেয়া হলেও অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক পণ্যের দাম বেশি। বাজারে পণ্য নিয়ে যারা কারসাজি করে তাদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে।
নতুন ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট সামনে রেখে সোমবার এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এ পরামর্শ দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘জীবনযাত্রার ব্যয় ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েই যাচ্ছে। পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমছে, কিন্তু সেগুলোর সুফল আমরা পাচ্ছি না। শুধু বিদেশি পণ্য নয়, দেশি পণ্যের দামও বেড়ে যাচ্ছে। দাম বাড়ার অনেক কারণ দেখানো হয়, এর কোনোটা যৌক্তিক কোনোটা যৌক্তিক নয়।
‘আমাদের যে বাজার ব্যবস্থাপনা, যে করের ব্যবস্থাপনা, সেখানে কমিয়ে এনে কিছুটা স্বস্তি দেয়া যেতে পারে। এছাড়া বাজার ব্যবস্থাপনা বলতে যেটা থাকার কথা, সেটা আমরা দেখছি না। যার ফলে যেকোনো সংকট হলে, সেটার সুযোগ নেয়া হচ্ছে।’
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি বাড়ানো দরকার। আর এই পণ্য যাদের দরকার তারা যেন পায়। আরও বেশি পণ্য বিক্রি করা দরকার। প্রতিযোগিতা কমিশনের কাজ বাড়াতে হবে। বাজারে পণ্য নিয়ে যারা কারসাজি করে তাদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে।
‘প্রতিযোগিতা আইনকে শক্তিশালী করে একচেটিয়া ব্যবসাকে ঠেকাতে হবে। প্রত্যক্ষ অর্থ সহায়তা দেয়া দরকার, যেন সেটা গরিব মানুষের হাতে যায়।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আমরা ২৮টি পণ্য পেয়েছি, যেগুলোর ওপর কর কমাতে হবে। যদিও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বলবে কর আহরণ কমে যাবে। তবু আমরা মনে করি, কর কমিয়ে জনগণকে স্বস্তি দিলে সেটা সামগ্রিক কর আহরণে তেমন একটা প্রভাব ফেলবে না।’
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশে চালের দাম থাইল্যান্ড অথবা ভিয়েতনামের চেয়ে বেশি। সয়াবিন তেলের দাম বিশ্ববাজারে নিচের দিকে। কিন্তু বাংলাদেশে বেশি আছে। বাংলাদেশে চিনির দাম বিশ্ব বাজারের তুলনায় বেশি। আমরা গুরুর মাংস আমদানি করি না। তারপরও বাংলাদেশে গুরুর মাংসের দাম বিশ্ব বাজারের তুলনায় বেশি। আমরা যে সবসময় বিশ্ববাজারকে দোষ দেব সেটা নয়।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আমরা হিসাব করে দেখেছি, ঢাকা শহরে চার সদস্যের একটি পরিবার যদি পুরো মাস ভালো খায়, তাহলে তাদের খরচ হবে ২২ হাজার ৬৬৪ টাকা। কিন্তু বেশির ভাগ খাতেই যারা কাজ করছেন তাদের আয় এই খরচের তুলনায় কম। যদিও মূল্যস্ফীতির হার কম, কিছু কিছু পণ্যের দাম বেড়ে গেছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে বাজারের পণ্যের দামের মিল নেই। আমরা দেখেছি বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম গড়ে ২৪ শতাংশ বেড়েছে।’