বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভুয়া এলসিতে পণ্য রপ্তানি করে ৩৭৯ কোটি টাকা পাচার

  •    
  • ১৪ মার্চ, ২০২৩ ১৮:৩৮

ভুয়া এলসি খুলে পণ্য রপ্তানি করে অর্থ পাচার করেছে ঢাকার মোল্লার টেকের ‘সাবিহা সাইকি ফ্যাশন’, কাকরাইল এলাকার ‘এশিয়া ট্রেডিং করপোরেশন’, দক্ষিণখান এলাকার ‘ইমু ট্রেডিং করপোরেশন’ ও উত্তরার ‘ইলহাম’। আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একইভাবে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।

চট্টগ্রামে ভুয়া এলসি খুলে ১৮ হাজার ২৬৫ টন তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ৩৭৯ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে চার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান।

সম্প্রতি রপ্তানিমুখী ১১৮ টন পণ্য জব্দের পর কাস্টমসের তদন্তে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের বিষয়টি উঠে এসেছে।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাকিল খন্দকার মঙ্গলবার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান।

কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, রপ্তানি দলিলাদি জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকার মোল্লার টেকের সাবিহা সাইকি ফ্যাশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান পণ্য রপ্তানির নামে বিদেশে অর্থপাচার করছে- এমন খবর পায় কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

গোপন এই খবরের ভিত্তিতে ৩১ জানুয়ারি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এসএপিএল কন্টেইনার ডিপোতে অভিযান চালায় গোয়েন্দারা। অভিযানে সাবিহা সাইকি ফ্যাশনের ১৫টি পণ্য চালানের রপ্তানি দলিলাদি পরীক্ষায় জালিয়াতির বিষয়েটি ধরা পড়ে। পণ্য চালানগুলোর বিপরীতে নথিপত্রে উল্লেখ করা ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে ভুয়া এলসির বিষয়েও নিশ্চিত হয় গোয়েন্দারা।

জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানি করা এসব পণ্যের বিনিময় হিসেবে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসবে না। তাছাড়া ঘোষণা অনুযায়ী এসব পণ্য চালানে টি শার্ট ও লেডিস ড্রেস রপ্তানির কথা থাকলেও কায়িক পরীক্ষায় বেবি ড্রেস, জিন্স প্যান্ট, শার্ট, লেগিনস, শালসহ ঘোষণাবহির্ভূত অনেক পণ্য পাওয়া যায়। তবে ১৫টি চালানের মধ্যে ৯টি ডিপোতে পাওয়া গেলেও বাকি ৬টি চালান ইতোমধ্যে রপ্তানি হয়ে গেছে।

পরবর্তীতে বিষয়টি তদন্তে নামে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এজন্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক মো. সাইফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়।

কাস্টমসের এই কমিটির তদন্তে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের বিষয়টি উঠে আসে। তদন্তে জানা যায়, সাবিহা সাইকি ফ্যাশনের নামে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৯৪টি পণ্য চালান রপ্তানি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৯টি পণ্য চালানে ১১৮ টন পণ্য জব্দ করা হলেও বাকি ৮৬টি চালানে ৮৮২ টন পণ্য ইতোমধ্যে রপ্তানি হয়ে গেছে। সেসবের অধিকাংশই সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, সিংগাপুর, কাতার ও যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করা হয়েছে৷ এর মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে ১৮ কোটি টাকা।

এই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও একইভাবে অর্থপাচারে জড়িত ঢাকার কাকরাইল এলাকার ‘এশিয়া ট্রেডিং করপোরেশন’, দক্ষিণখান এলাকার ‘ইমু ট্রেডিং করপোরেশন’ ও উত্তরার ‘ইলহাম’।

এই তিন প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের পর থেকে ১ হাজার ৬৯৪টি পণ্য চালানে ১৭ হাজার ২৬৫ টন পণ্য রপ্তানি করেছে বিভিন্ন দেশে। তবে এসব পণ্য চালানের বিপরীতে রপ্তানি দলিলাদি জাল হওয়ায় কোনো বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসেনি। সে হিসাবে এসব পণ্য চালানের বিপরীতে মোট ৩৬১ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাকিল খন্দকার বলেন, ‘এই চার প্রতিষ্ঠান রপ্তানি দলিলাদি জালিয়াতির মাধ্যমে ১ হাজার ৭৮০টি চালানের বিপরীতে ১৮ হাজার ২৬৫ টন পণ্য বিদেশে রপ্তানি করেছে। সেসবের অধিকাংশই গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, সিংগাপুর, কাতার, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব ও নাইজেরিয়ায়।

‘এর মাধ্যমে চার প্রতিষ্ঠান মোট ৩ কোটি ৭৮ লাখ ১৭ হাজার ১০ ডলার বিদেশে পাচার করেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩৭৯ কোটি টাকা। অর্থপাচারের অভিযোগে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

এই চার প্রতিষ্ঠান ছাড়াও এরকম আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একইভাবে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে৷ তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত কার্যক্রম চলছে বলে জানান কাস্টমসের এই কর্মকর্তা।

এ বিভাগের আরো খবর