আগের সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছিল লাফ দিয়ে। শুক্রবার এ ধরনের মুরগির দর কেজিতে বেড়েছে আরও ১০ থেকে ২০ টাকা।
মূল্যবৃদ্ধির উত্তাপ ছড়িয়েছে মাছের বাজারেও। বিভিন্ন রকম মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি সবজির দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর কয়েকটি বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
তারা বলছেন, সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। মেনে নেয়া ছাড়া সাধারণের কিছুই করার নেই।
কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আগের সপ্তাহে দাম বেড়ে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি হওয়া ব্রয়লারের মূল্য আরও অন্তত ২০ টাকা বেড়েছে। এ মুরগি বিক্রি হয় ২১০ টাকা কেজিতে।
সোনালি মুরগির দাম আগের মতোই ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। আর লেয়ার মুরগি বিক্রি হয় ২৭০ টাকা কেজিতে।
নূরজাহান চিকেন ব্রয়লার হাউজের স্বত্বাধিকারী শামসুল হক বলেন, ‘চাহিদা ও জোগানের ওপর দাম নির্ভর করে। চাহিদা অনুযায়ী মুরগি দিতে পারছেন না ডিলাররা। তাই দাম বাড়তি।’
অন্যদিকে ইলিশ, রূপচাঁদা ও চিংড়ি মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। অন্যান্য মাছের দর কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, রকমভেদে গলদা চিংড়ি বিক্রি হয় ৬০০, ৮০০ ও ১২০০ টাকা কেজিতে, যা আগের সপ্তাহেও ছিল ৫০০, ৭০০ ও ১ হাজার টাকা।
বিক্রেতা আবু সাঈদ মালদ বলেন, ‘গরম আসলে চিংড়ি মাছের দাম বেড়ে যায়। ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ছে।’
বিক্রেতা মাসুদ জানান, ৯০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ছিল ৮০০ টাকা, সেটা ১০০ টাকা বেড়ে হয় ৯০০ টাকা। ৪০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশের কেজি ৪৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০০ টাকা।
১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হয় ১ হাজার ২০০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বেচাকেনা হয়।
কেজিতে রূপচাঁদা মাছের দর বেড়েছে ২০০ টাকা। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১ হাজার ১০০ টাকায়, যা ৯০০ টাকা ছিল বলে জানান বিক্রেতা মো. রোকন।
রকমভেদে প্রতি কেজি পাঙ্গাস বিক্রি হয় ১৭০ থেকে ২০০ টাকায়। আগে দর ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।
তেলাপিয়া মাছের কেজি ছিল ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, যা দাঁড়িয়েছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত।
এ ছাড়াও কই ৭০০ থেকে ৮০০, আইড় ৬০০ থেকে ৬৫০, শোল ৭০০ থেকে ৮০০, সরপুঁটি ২০০, তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০, রুই ২৩০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
বেসরকারি চাকরিজীবী হারুন-অর-রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সবকিছুর দামই বেড়েছে। বিদ্যুৎ, গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। ডিম, মুরগির দাম বেড়েছে। মাছের দাম বাড়বে; আরও অনেক কিছুরই দাম বাড়বে।
‘সাধারণ মানুষের মেনে নেয়া ছাড়া কিছুই করার নেই। সমস্যা একটাই যে, আমাদের আয় সেভাবে বাড়ছে না।’
সবজির বাজারে দাম ওঠানামা করতে দেখা যায়। বিক্রেতা জাকারিয়া হোসেন বলেন, ‘কয়েকটার দাম বাড়ছে। আবার কয়েকটার দাম কমছে।’
তিনি জানান, সরবরাহ কম থাকার প্রভাব পড়েছে সবজির দামে।
কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে পেঁয়াজ ৩০ টাকা, আলু ২০ টাকা, ফুলকপি ২০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া, টমেটো ও ক্ষীরা ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়।
অন্যদিকে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বরবটি ১০০, করলা ১০০, চিচিঙ্গা ৮০, কাঁচামরিচ ১১০ ও বেগুন ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়।
এ ছাড়াও আমদানিকৃত রসুন ২০০ ও দেশিটা ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। অন্যদিকে আমদানিকৃত আদা ২৪০ ও দেশিটা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।