আমদানিকারকের করা মামলায় মোংলা বন্দরে আটকে আছে পানামার পতাকাবাহী কয়লা বোঝাই দুই জাহাজ। আদালতের নির্দেশনার কারণে জাহাজ দুটিকে বন্দর ত্যাগের অনুমতি দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
‘এমভি সানবাল্ক’ ও ‘এমভি ইউনিভার্সি প্রোসটার্টি’ নামের জাহাজ দুটিতে ৫১ হাজার ২৪৩ টন কয়লা বহন করে আনা হয়। জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই কয়লা আমদানি করেছে।
আদালতে মামলার বিষয়টি নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাহাজগুলো বন্দরে থাকবে বলে জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ।
বিদেশি জাহাজ দুটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট মেসার্স কসমসের খুলনার ব্যবস্থাপক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এমভি সানবাল্ক জাহাজে আসা ২৭ হাজার ২৪৩ টন কয়লা পুরোপুরি খালাস করা হয়েছে। কিন্তু মামলার কারণে এমভি ইউনিভার্সি প্রোসটার্টি জাহাজের কয়লা খালাস প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশি এই জাহাজ দুটি ৪ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার একটি বন্দর থেকে কয়লা বোঝাই করার জন্য সেখানে যায়। এর মধ্যে জাহাজ মালিক ও জাহাজ ভাড়াকারী কোম্পানির মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বাধে।
‘দ্বন্দ্বের জের ধরে নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় দেড় মাস পর ওই বন্দর থেকে কয়লা বোঝাই করে জাহাজ দুটি মোংলা বন্দরে আসে। এই সময়ক্ষেপণে কয়লা আমদানিকারকরা ক্ষতির মুখে পড়েন।’
বিদেশি জাহাজে কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের মালিক আনিসুর রহমান বলেন, ‘জাহাজ মালিক ও জাহাজ ভাড়াকারী কোম্পানির দ্বন্দ্বের মাসুল দিতে হচ্ছে আমাকে। তাদের পারস্পরিক দ্বন্দ্বের কারণে আমদানি করা কয়লা নির্ধারিত সময়ে মোংলা বন্দরে আসেনি। এছাড়া জাহাজে থাকা কয়লার গুণগত মানও নষ্ট রয়েছে। ফলে এই কয়লার বাজারমূল্য কমে গেছে। এর ফলে আমাদের প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে আমরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছি। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সমান জারি করেছে।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ‘এমভি সানবাল্ক’ নামের জাহাজটি ২৭ হাজার ২৪৩ টন কয়লা নিয়ে ৭ জানুয়ারি বন্দরের হারবাড়িয়ায় নোঙর করেছে। পরবর্তীতে ওই জাহাজের কয়লা পুরোটাই খালাস করা হয়েছে।
অপর জাহাজ ‘এমভি ইউনিভার্সি প্রোসটার্টি’ ২৪ হাজার টন কয়লা নিয়ে ২৫ জানুয়ারি বন্দরে ভিড়লেও মামলার জটিলতায় পণ্য খালাস প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, ‘জাহাজ দুটির ব্যাপারে ৬ ফেব্রুয়ারি আদালতের একটি নির্দেশনা আসে। আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জাহাজ দুটিকে বন্দরে অবস্থান করতে বলেছি। তাদেরকে বন্দর ত্যাগের অনুমতি দেয়া হয়নি। আদালতের পক্ষ নির্দেশনা পাওয়ার পর জাহাজ দুটিকে বন্দর ত্যাগের অনুমতি দেয়া হবে।’