বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ ছোট বিষয়: বিশ্বব্যাংক এমডি

  • প্রতিবেদক, ঢাকা   
  • ২২ জানুয়ারি, ২০২৩ ২৩:৩৪

ঢাকা সফররত বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ বলেন, ‘বাংলাদেশে ৩৭০টি প্রকল্পে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে একটি প্রকল্পে অর্থায়ন না করার বিষয়টি অনেক ছোট। পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও মতপার্থক্য হয়। এটাকে সে রকমভাবে দেখাই ভালো।’

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগ প্রত্যাহারকে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মতপার্থক্যের মতো ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ।

ঢাকা সফররত বিশ্বব্যাংকের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান।

‘পদ্মা সেতু থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নেয়া ঠিক হয়েছিল কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসান চাই আমরা। বাংলাদেশে ৩৭০টি প্রকল্পে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। গত কয়েক বছর ধরে গড়ে এক বিলিয়ন ডলার বা তার বেশি বিনিয়োগ করেছি।

‘৩৭০টির মধ্যে একটি প্রকল্পে অর্থায়ন না করার বিষয়টি অনেক ছোট। পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও মতপার্থক্য হয়। এটাকে সে রকমভাবে দেখাই ভালো। আমরা চাই বাংলাদেশের উন্নয়নের সহযোগী হতে।’

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক। তারপর থেকে এই দাতা সংস্থাটি প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ঋণ সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যার বেশির ভাগই অনুদান বা রেয়াতি ঋণের (কম সুদে)। বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) বৃহত্তম কর্মসূচি চলমান।

পদ্মা সেতুতে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর বিশ্ব আর্থিক খাতের এই মোড়ল সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়ে। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ বার বার নাকচ করেছে সরকার। এ নিয়ে কানাডার আদালতে হওয়া মামলায়ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদিও তার আগেই দেশের এই মেগাপ্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধে ঘোষণা দেয় বিশ্ব আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বাতিলের ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় সরকার। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ওয়াশিংটনভিত্তিক বহুজাতিক এই সংস্থার সমালোচনা আসে। তখনই ২০১২ সালের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে প্রয়োজনে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন।

বিশ্বব্যাংকের এমডি অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্ব সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তার সঙ্গে ছিলেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার আর বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেক।

বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্ব সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি এবং বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন অর্জন উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে শনিবার তিন দিনের এই সফরে ঢাকা এসেছেন তিনি।

অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ বলেন, ‘বাংলাদেশের গল্পটা সবার কাছে বলার মতো। বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের যে সম্পর্ক, এটা এমন একটি গল্প যেটা আমরা উদযাপন করতে চাই। কারণ গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ দারিদ্র্যের হার ভালোভাবে কমাতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি আয় বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।

‘বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়েছিল আমরা একটি প্রতিবেদন করেছিলাম। সেখানে দেখা গিয়েছিল যে, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ৫০ থেকে ৭০ ডলারের মধ্যে। আর কোনো পরিবর্তন ছিল না ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে। সেখান থেকে বাংলাদেশের আজকের আয় ২ হাজার ৫০০ ডলারে উন্নতি করেছে। বাংলাদেশ এই পর্যন্ত ভালো করেছে।’

ট্রটসেনবার্গ বলেন. ‘আমি বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সম্পর্ক উদযাপন করতে বাংলাদেশে এসেছি। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করছে। আমরা গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়নে ৩৯ বিলিয়ন ডলার দিয়েছি। যদি আমরা আমাদের বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এবং মাল্টিল্যাটারাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সি (মিগা)- এর বিনিয়োগ ধরি তাহলে আরও ৩ বিলিয়ন ডলার হয়। সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ বাংলাদেশকে গত ৫০ বছরে ৪২ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে ৩৭০টি প্রকেল্পে কাজ করছি। এর মধ্যে আছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষি, অবকাঠামো, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস। এ ছাড়া আরও অনেক আছে।

‘এখন বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ করা। এর সঙ্গে দারিদ্র্য কমাতে হবে, আর মানব সম্পদে বেশি বিনিয়োগ করতে হবে, বিশেষ করে শিক্ষায়। বিশ্ব ব্যাংকের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা ছিল আনন্দের। আমাদের বাংলাদেশ থেকে শেখার আছে। বাংলাদেশের গল্পটা অন্যদের বলার মতো।’

অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ বলেন, ‘আমরা এখন খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি কীভাবে আমরা বাংলাদেশকে তাদের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে পারি। তাদের নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে আমরা কীভাবে সহযোগিতা করব।

‘আমরা সহযোগিতা করতে চাই, যাতে বাংলাদেশ পরিবেশ ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারে। বাংলাদেশ যাতে রপ্তানি বাড়াতে পারে সেদিকে আমরা সহযোগিতা করতে চাই।’

এ বিভাগের আরো খবর