সূচক উঠা-নামার খেলা চললেও গত চার দিনে শেয়ারবাজারে লেনদেনে যে জোয়ার এসেছিল, সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে তাতে ভাটার টান পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার লেনদেন কমেছে ৩৭ শতাংশের মতো।
এদিকে সূচক বাড়লেও দর বৃদ্ধির চেয়ে দরপতন বেশি ছিল। এ কারণে বেশিরভাগ খাতই নেতিবাচক ছিল। এর মধ্যেও ভালো দিন গেছে সাধারণ বিমা ও আইটি খাতের বিনিয়োগকারীদের।
ডিসেম্বরে ২০০ কোটির নিচে নামা লেনদেন গত সপ্তাহের শেষ দুই কর্মদিবস থেকে বাড়তে থাকে। চলতি সপ্তাহের বিগত চার দিনই লেনদেন বেড়েছে। এর মধ্যে গত দুই কর্মদিবস ৯০০ কোটির বেশি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
কিন্তু বৃহস্পতিবার লেনদেন কমে নেমে আসে ৫৯০ কোটি ৬৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকায়, যা আগের দিনের চেয়ে ৩৪৩ কোটি ৬১ লাখ ২৯ হাজার টাকা কম। এটা চলতি সপ্তাহের সর্বনিম্ন। এর চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল আগের বৃহস্পতিবার, ৫০৭ কোটি ৫৭ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এদিন ৭৬টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ১০০টির। এছাড়া অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে আরও ১৮৪টি কোম্পানির।
দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির প্রায় অর্ধেকই সাধারণ বিমা খাতের। এ খাতে ৩৬টি কোম্পানির দর বেড়েছে। আর ৩টি করে কোম্পানির লেনদেন হয়েছে দরপতন ও অপরিবর্তিত দরে। এ খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
লেনদেনের শীর্ষে থাকা প্রযুক্তি খাতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯টি কোম্পানির দর বেড়েছে। বাকি দুটি কোম্পানির দরপতন ও অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়। একমাত্র এ খাতেই লেনদেন শত কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করতে পেরেছে। হাতবদল হয়েছে ১৩৪ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার।
এর বাইরে ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৫৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। ৫টি কোম্পানির দর বৃদ্ধি, ১৮টি আগের দরে ও ৮টির দরপতনে লেনদেন হয়েছে।
চতুর্থ সর্বোচ্চ জীবন বিমায় ৪৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। ৬টি করে ১২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও দরপতন হয়েছে। ২টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।
আর কোনো খাতে ৩টির বেশি কোম্পানির দর বৃদ্ধি হয়নি। পঞ্চম অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতে ৩৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা ছাড়া আর কোনো খাতের লেনদেন ৩০ কোটির ঘর স্পর্শ করতে পারেনি।
দর পতনের হার বেশি হলেও সূচক বেড়েছে। এর কারণ কয়েকটি বড় মূলধনি ও বিমা খাতের দর বৃদ্ধি। আগের দিন ২৩ পয়েন্ট পতনের পর ৭ পয়েন্ট বেড়ে ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৬৫ পয়েন্টে।
সূচক বাড়াতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে বিকন ফার্মা। কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট। ১ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট যোগ করেছে সি পার্ল।
বেক্সিমকো ফার্মা ও জেনেক্স ইনফোসিস ১ দশমিক ২৬ পয়েন্ট করে সূচক বাড়িয়েছে। আর কোনো কোম্পানি সূচকে ১ পয়েন্টের বেশি যোগ করতে পারেনি।
এছাড়াও সূচক বাড়িয়েছে আইটি কনসালট্যান্টস, বসুন্ধরা পেপার, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সি ফুড, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স ও গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স। এই দশটি কোম্পানির কারণে সূচক বেড়েছে ৮ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট।
বিপরীতে ইসলামী ব্যাংক ২ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট ও লাফার্জ হোলসিম ২ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে। আর কোনো কোম্পানি এককভাবে ১ পয়েন্ট সূচক কমাতে পারেনি।
এছাড়া বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, প্রাইম ব্যাংক, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বাটা সুজ, ওরিয়ন ইনফিউশন, মালেক স্পিনিং, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশনের দর পতনে সূচক কমেছে। সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানির দরপতনে সূচক কমেছে ৮ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট।
ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাফিজ আল তারিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেন লেনদেন কমল তার কোনো দৃশ্যত কারণ নেই। এখনও বেশ কিছু ফ্লোর প্রাইসে রয়েছে। সে কারণে মুভমেন্ট কম হতে পারে।’