গ্যাসের দাম বাড়ানোর ব্যাখ্যা দিয়ে সরকার জানিয়েছে, চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট থেকে উচ্চমূল্যে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনতে হবে বলে দাম বাড়ানো হয়েছে।
আবাসিকের রান্নার চুলা, যানবাহনের সিএনজি ও সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাস ছাড়া সব ধরনের গ্যাসের দাম বাড়ানোর পর বুধবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো লিখিত বার্তায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এই ব্যাখা দেয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান বৈশ্বিক বিশেষ জ্বালানি পরিস্থিতিতে ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী সব ধরনের জ্বালানির মূল্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এ ছাড়া, জ্বালানি সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যয়, যেমন বিমা খরচ, ঝুঁকি ব্যয়, ব্যাংক সুদ, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকা দুর্বল হওয়ায় সামগ্রিকভাবে জ্বালানি খাতে ব্যয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এতে বলা হয়, তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববাজারে এলএনজি আমদানি মূল্যও অস্বাভাবিক পরিমাণে বেড়ে যাওয়ায় এ খাতে সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি বাবদ প্রদান করতে হচ্ছিল। গত বছরের জুলাই থেকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বিদ্যমান উৎপাদন/সরবরাহ সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ও শিল্পসহ সব খাতে গ্যাস রেশনিং করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলমান কৃষি সেচ মৌসুম, আসন্ন রমজান ও গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বর্ধিত চাহিদা মেটানো, শিল্প খাতে উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখা এবং রপ্তানিমুখী বিভিন্ন কলকারখানার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎপাদিত ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখার উদ্দেশে করনীয় সম্পর্কে সকল অংশীজনের মতামত গ্রহণ করা হয়। যেহেতু স্পট মার্কেট থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানিপূর্বক উক্ত বর্ধিত চাহিদা পূরণ করতে হবে, সে কারণে সরকার বিদ্যুৎ, শিল্প, ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ও বাণিজ্যিক খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
গ্যাসের দাম কতটা বাড়ল
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে বুধবার এক প্রজ্ঞাপনে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি জানানো হয়। নতুন এ দাম ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। গ্যাসের দাম বাড়ায় শিল্পকারখানায় উৎপাদনের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে, যার প্রভাব পড়বে পণ্যের দামের ওপর।
বৃহৎ শিল্পে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ১১ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (ক্যাপটিভ) জন্য ইউনিটপ্রতি গ্যাসের দাম ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে।
হোটেল ও রেস্তোরাঁ খাতে ব্যবহৃত বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহকের জন্য প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ২৬ টাকা ৬৪ পয়সা থেকে ৩০ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১০ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে ৩০ টাকা করা হয়েছে। মাঝারি শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১১ টাকা ৭৮ পয়সা ৩০ টাকা করা হয়েছে।