গ্রামের প্রতিটি মানুষ এখন থেকে ব্যাংকের সব সেবা পাবে। এ লক্ষ্যে চালু হচ্ছে ‘ভিলেজ ডিজিটাল বুথ’। এই বুথে গ্রামের লোকজন সহজে ব্যাংকের হিসাব খুলতে পারবেন; মিলবে অন্য সেবাও।
প্রান্তিক এলাকার সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবা দিতে ভিলেজ ডিজিটাল বুথ প্রতিষ্ঠায় এটুআই-এর পেমেন্ট এগ্রিগেটর প্ল্যাটফর্ম ‘একপে’ এবং জয়তুন বিজনেস সলিউশনস একসঙ্গে কাজ করবে।
এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর ও জয়তুন বিজনেস সলিউশনস-এর চেয়ারম্যান মো. আরফান আলী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারক সই করেন।
নতুন এ সেবার মাধ্যমে ব্যাংক লেনদেন, রেমিট্যান্সের অর্থ উত্তোলন, কার্ডের লেনদেন, বিভিন্ন পরিষেবার বিল, শেয়ার বাজার ও মোবাইল ফাইন্যান্সের পেমেন্টসহ মিলবে ব্যাংকের সব ধরনের সেবা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমকে আরও দ্রুত করতে ভিলেজ ডিজিটাল বুথ থেকে প্রান্তিক এলাকায় বসবাসকারী সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবা প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে এটুআইয়ের প্ল্যাটফর্ম ‘একপে’ এই কার্যক্রমে কারিগরি ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাস্তবায়নাধীন এবং ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত ‘এটুআই’ পেমেন্ট এগ্রিগেটর প্ল্যাটফর্ম ‘একপে’ পরিচালনা করছে।
ভিলেজ বুথের মাধ্যমে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের সেবা এক জায়গা থেকে পাওয়া যাবে। জয়তুন বিজনেস সলিউশনস-এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় একজন স্থানীয় উদ্যোক্তার মাধ্যমে এই ভিলেজ ডিজিটাল বুথ পরিচালিত হবে।
এই বুথ থেকে ডিজিটাল আর্থিক সেবাসহ বিভিন্ন প্রকার ই-সেবা প্রদান নিশ্চিত করা হবে। এর মাধ্যমে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সেবা, সরকারি পরিষেবা বিল পরিশোধ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত বিল পরিশোধ, টেলিমেডিসিন, ই-টিকেটিং ইত্যাদি সেবা বিশেষভাবে দেয়া হবে।
এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘ভিলেজ বুথের মাধ্যমে নিরাপদ ও উন্নত মানের সেবা প্রদান, পল্লী এলাকায় আর্থিক উন্নয়ন, সব ধরনের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণ, এসডিজি কাউকে পেছনে ফেলে নয়- স্লোগানের বাস্তবায়ন করবে।’
জয়তুন বিজনেস সলিউশনস-এর চেয়ারম্যান মো. আরফান আলী বলেন, ‘ডিজিটাল বুথ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে ব্যাংকিং, ইন্স্যুরেন্স, পরিষেবা ফি প্রদানসহ অন্য সব ধরনের পেমেন্ট, আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত করে গ্রামীণ পর্যায়ে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, চেইন এজেন্ট হিসেবে কাজ করবে ভিলেজ ডিজিটাল বুথ। প্রতিটি বুথের উদ্যোক্তা হবে নিজ গ্রামের শিক্ষিত তরুণ, তরুণী ও যুবকরা। তাদের অবশ্যই ন্যূনতম এইচএসসি পাস হতে হবে। নতুন এই সেবার মাধ্যমে ব্যাংকের হিসাব খোলা, ব্যাংক ও মোবাইল ফাইন্যান্সের ছোট ছোট লেনদেন করা যাবে। ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডে লেনদেন ও শেয়ারবাজারের পেমেন্টও করা যাবে। এছাড়া আগামীতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পিছিয়ে পড়া ঋণ কার্যক্রমও বিস্তার হবে।
পাইলট পকল্প হিসেবে খুব শিগগিরই মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ভিলেজ ডিজিটাল বুথ চালু হবে। এরপর ৫০টি বুথ নিয়ে কার্যক্রম চালানো হবে। আগামী তিন বছরে দেশের সব গ্রামে ডিজিটাল বুথ স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানান জয়তুন বিজনেস সলিউশনস-এর চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানে জয়তুন বিজনেস সলিউশনস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকবর হোসাইন, এটুআইয়ের হেড অফ ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যান্ড ডিজিটাল সেন্টার মো. তহুরুল হাসান এবং এটুআই, জয়তুন বিজনেস সলিউশনস-এর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।