বড় বড় বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ায় লেনদেন খরা কাটার আভাস মিলছে পুঁজিবাজারে। প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টানা তিন কর্মদিবস সূচক উত্থানের সঙ্গে লেনদেন দ্বিতীয় দিনের মতো ৫০০ কোটির ঘর ছাড়িয়েছে।
জুলাইয়ের শেষে ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর ঊর্ধ্বমুখী পুঁজিবাজারের লেনদেন সেপ্টেম্বরে তিন হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে যাওয়ার পর নভেম্বর-ডিসেম্বরে তলানিতে ঠেকে। ডিসেম্বর মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটির ঘরে লেনদেন হতে থাকে।
২১ ডিসেম্বর ১৬৯টি কোম্পানির ফ্লোর প্রত্যাহারের পরও অবস্থান পরিবর্তন হয়নি। তবে নতুন বছরে মন্দা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বাজার-সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বছরের প্রথম তিন দিন লেনদেন আরও তলানিতে নেমে দুই শ’ কোটির নিচে চলে যায়।
বছরের দ্বিতীয় দিন সোমবার লেনদেন নামে ১৫০ কোটি টাকার নিচে। এরপর পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ডেকে গত সপ্তাহের বুধবার বৈঠক করে বিএসইসি।
বৈঠকে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, বাজার ভালো করতে সবাইকে মাঠে নামতে হবে। আর যত দিন পুঁজিবাজারের স্বাস্থ্য ভালো না হবে ততদিন ফ্লোর প্রাইস পুরোপুরি উঠবে না।
বুধবার বৈঠকের পরের দুই দিন বাজারে প্রভাব না পড়লেও বিগত চার দিনই বেড়েছে লেনদেন।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে হাতবদল হয়েছে ৫০৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ২৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বেশি।
আগের দিন বুধবার ১৯ কর্মদিবস পরে লেনদেন ৫০০ কোটির ঘর অতিক্রম করে। হাতবদল হয় ৫৩২ কোটি ৪১ লাখ ৬২ হাজার টাকার শেয়ার, যা মঙ্গলবারের চেয়ে ৬৯ কোটি ৮৯ লাখ ৪৯ হাজার টাকা বেশি।
মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৪৬২ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার টাকা, যা সোমবারের চেয়ে ১২৭ কোটি ৮২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা বেশি।
সোমবার লেনদেন হয় ৩৩৪ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা, যা রোববারের চেয়ে ৫০ কোটি ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা বেশি ছিল।
দরপতনের হার বেশি হলেও টানা তৃতীয় দিনের মতো বাড়ল সূচক। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২১৫ পয়েন্টে।
মোট ৩৩৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, বন্ড ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ১১১টির।
এ ছাড়া অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে ১৭১টির, যার দুই-একটি বাদে সবই রয়েছে ফ্লোর প্রাইসে।
পুঁজিবাজারের লেনদেন প্রসঙ্গে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ায় দুই-তিন দিন থেকে লেনদেন বাড়ছে। আশা করা যায়, মন্দাবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াবে বাজার।’