শত কোটি টাকার বেশি বেড়ে শেয়ারবাজারে প্রায় এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে মঙ্গলবার। একইসঙ্গে চলতি বছরের ৮ কর্মদিবসের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সূচকের উত্থান ঘটেছে. যা ক্ষীণ আশার আলো দেখাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১৪ কর্মদিবস পর লেনদেন ৪০০ কোটির ঘর ছাড়িয়েছে। হাতবদল হয়েছে ৪৬২ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১২৭ কোটি ৮২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা বেশি।
এর আগে সবশেষ ১৯ ডিসেম্বর লেনদেন ৪০০ কোটির ঘর অতিক্রম করেছিল। ওইদিন লেনদেন হয়েছিল ৪৫৬ কোটি ৯৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।
তবে মঙ্গলবারের চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল আরও ১৯ কর্মদিবস আগে, ১৩ ডিসেম্বর। সেদিন হাতবদল হয় ৬১৬ কোটি ৪১ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
সদ্য সমাপ্ত বছরের শেষ মাসে পুঁজিবাজারের লেনদেনে খরা দেখা দেয়ার পর নতুন বছরে তা ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বাজার-সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বছরের প্রথম তিন দিন লেনদেন আরও তলানিতে নেমে দুই শ’ কোটির নিচে চলে যায়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বুধবার পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বৈঠকে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, বাজার ভালো করতে সবাইকে নামতে হবে। আর যত দিন পুঁজিবাজারের স্বাস্থ্য ভালো না হবে ততদিন ফ্লোর প্রাইস পুরোপুরি উঠবে না।
পরদিন পুঁজিবাজারে ওই বৈঠকের প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন চার কর্মদিবস পরও নতুন বছরে প্রথমবারের মতো তিন শ’ কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করলেও সূচক কমে ৮ পয়েন্ট।
সেখান থেকে ৩৩ কোটি ৮১ লাখ ৫১ হাজার টাকা কমে রোববার লেনদেন হয় ২৮৪ কোটি ২০ লাখ ৩ হাজার টাকা। সঙ্গে সূচক পড়ে ১ পয়েন্টের কিছু বেশি।
সোমবার আগের কর্মদিবসের চেয়ে ৫০ কোটি ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা বেশি লেনদেন হলেও সূচক কমে শূন্য দশমিক ৭৬ পয়েন্ট।
মঙ্গলবার বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পয়েন্ট যোগ হয় সূচকে। ১৩ পয়েন্ট বেড়ে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৬ হাজার ২০৫ পয়েন্টে। চলতি বছরে আরও দুই দিন সূচক বাড়লেও মঙ্গলবারের চেয়ে বেশি বেড়েছে একদিনই। গত ৪ জানুয়ারি সূচক বেড়েছিল ১৭ পয়েন্ট।
সূচক বাড়লেও মঙ্গলবার দরবৃদ্ধির তুলনায় দরপতনই বেশি হয়েছে। ৬৬টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ৯৬টির। আগের দিন ৩২টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির তুলনায় দরপতন হয়েছে ১৩১টির।
আর অপরিবর্তিত দরে লেনদেন করা কোম্পানির সংখ্যা ১০টি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৪টি, যার দুই-একটি বাদে প্রায় সবই ফ্লোর প্রাইসে রয়েছে।
এদিন লেনদেন না হওয়া কোম্পানির সংখ্যা কমেছে। একটি কোম্পানির লেনদেন রেকর্ড ডেটের কারণে বন্ধ ছিল। এর বাইরে ৫৫টি কোম্পানির কোনো শেয়ার লেনদেন হয়নি। আগের দিন এ সংখ্যা ছিল ৬৪টি।
লেনদেনে অংশ নেয় ৩৩৬টি কোম্পানি। এর মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে ৫১টি কোম্পানিতে। আগের দিন এই অংকে লেনদেন হয় ৪৭টি কোম্পানিতে। ওই ৫১টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ৩৮৪ কোটি ৭২ লাখ ২০ হাজার টাকা। বাকি ২৮৫টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে কেবল ৭৭ কোটি ৭৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।
বাজারের লেনদেন প্রসঙ্গে বিএনবি সিকিউরিটিজের চিফ অপারেটিং অফিসার আবু ফারাহ মোহাম্মদ ইকবাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে কিছু বাই প্রেশার ছিল। কিছু শেয়ার ফ্লোর প্রাইস থেকে বের হয়েছে, আবার কিছু ঢুকেছে। সব মিলিয়ে লেনদেন বেড়েছে।’