বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টাকা পরিশোধ হলেও এনওসি দিচ্ছে না আইপিডিসি, অভিযোগ গ্রাহকের

  •    
  • ৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ২২:২৯

আল হাবিব এন্টারপ্রাইজের হাবিবুর রহমান বলেন- ২৫টি গাড়ি কেনার জন্য আইপিডিসি থেকে মোট ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ নেয়া হয়। শর্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট মেয়াদে সুদে-আসলে ১০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত অনাপত্তিপত্ত দিচ্ছে না লিজিং প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি। গাড়ির মালিকানাও বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে না।

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের কাছ থেকে আল হাবিব এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠান কয়েক কিস্তিতে ঋণ নিয়েছে আট কোটি ৪০ লাখ টাকা। সেই টাকার সুদ-আসলে ১০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা দেয়া হয়। এরপরেও নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) বা অনাপত্তি সনদ পাচ্ছে না আল হাবিব এন্টারপ্রাইজ।

সোমবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে আইপিডিসির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন আল হাবিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. হাবিবুর রহমান।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘গোপন সুদের নামে আমাদের কাছে এক কোটি টাকা অতিরিক্ত দাবি করছে আইপিডিসি। শুধু তাই নয়, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) রিপোর্টে গ্রাহককে খেলাপি দেখানো হয়েছে। বিষয়টি সমাধানে আইপিডিসি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনাও মানছে না।’

আল হাবিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বলেন, ‘২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আইপিডিসি থেকে ৬০টি কিস্তিতে পরিশোধের শর্তে ১০.৫০ শতাংশ সুদে গাড়ি কেনার জন্য ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। কিন্তু ঋণের টাকা ছাড় হওয়ার আগেই ঋণ পরিশোধ বাবদ ৭ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৩ টাকা করে ৬০টি চেক নিয়ে নেয় আইপিডিসি। ঋণের টাকায় নিটল টাটা থেকে ১০টি গাড়ি কেনা হয়। যা নিটল টাটাকে সরাসরি পরিশোধ করে আইপিডিসি। সেই ঋণের সর্বশেষ কিস্তি (সুদসহ) গত ৩০ জুন মোট ৪ কোটি ৩৮ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮০ টাকা আইপিডিসিকে পরিশোধ করে আল হাবিব এন্টারপ্রাইজ।’

তিনি জানান, গাড়ি কেনার জন্য ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ৬০ কিস্তিতে পরিশোধের শর্তে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশে সুদে আরও ৫ কোটি টাকা ঋণ নেয় আল হাবিব এন্টারপ্রাইজ। যথারীতি ঋণের টাকা ছাড়ের আগেই ঋণের বিপরীতে ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯৫ টাকা করে ৬০টি কিস্তির চেক জমা নেয় আইপিডিসি। এই ঋণের টাকায় র‌্যাংগস মটরস থেকে ১৫টি গাড়ি কেনা হয়। যা র‍্যাংগস মটরসকে সরাসরি পরিশোধ করে আইপিডিসি। গত ৩০ অক্টোবর এই ঋণের সর্বশেষ কিস্তিসহ (সুদে-আসল) মোট ৬ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ৭০০ টাকা আইপিডিসিকে পরিশোধ করা হয়।

হাবিবুর রহমান বলেন, ‘২৫টি গাড়ি কেনার জন্য আইপিডিসি থেকে মোট ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ নেয় আল হাবিব এন্টারপ্রাইজ। শর্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট মেয়াদে সুদে-আসলে ১০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু দুটি ঋণের সব টাকা পরিশোধ করা হলেও এখনও পর্যন্ত আমাদেরকে অনাপত্তিপত্ত দিচ্ছে না লিজিং প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি। যে কারণে গাড়ির মালিকানাও বুঝে পাচ্ছে না আল হাবিব এন্টারপ্রাইজ। উল্টো এখন ১ কোটি ৫ লাখ টাকা গোপন সুদ দাবি করছে আইপিডিসি।’

আইপিডিসির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে আল হাবিব এন্টারপ্রাইজের সংবাদ সম্মেলন

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘গোপন সুদ ও আইপিডিসির হুমকির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অভিযোগ করি। এরপর গত ২ নভেম্বর বিষয়টি গ্রাহক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কের ভিত্তিতে বিধি মোতাবেক নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চিঠি দেওয়া হলেও তাতে কর্ণপাত করেনি আইপিডিসি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিষয়টি জানানো হলে গত ২৯ ডিসেম্বর আইপিডিসিকে বৈঠকে ডাকা হয়। গুলশানে আইপিডিসির প্রধান কার্যালয়ের ওই বৈঠকে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইওকে উপস্থিত থাকার কথা বলা হলেও তিনি ছিলেন না। বৈঠকে আইপিডিসি কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত টাকা দাবির পক্ষে তেমন কোনো যুক্তি তুলে ধরতে পারেনি ও আমার প্রশ্নেরও সদুত্তর দিতে পারেনি।’

সবশেষে আইপিডিসির হেড অব কালেকশন-বিজনেস ফাইন্যান্স রফিকুল ইসলাম গত ৫ জানুয়ারি তাদের অতিরিক্ত সাড়ে ৩ শতাংশ হারে আরোপিত সুদ থেকে আমাকে ৫ লাখ টাকা মওকুফের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এ ধরনের প্রস্তাব সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও নিয়ম বহির্ভূত—বলেন হাবিবুর রহমান।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠি পাওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে আইপিডিসি আমারা অ্যাকাউন্টটি কোনো কিস্তি বাকি না থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ডিফল্ট করে রিপোর্ট করে। যা সব আইনকানুনকে ভূলুণ্ঠিত করেছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আল হাবিব এন্টারপ্রাইজ যে অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ অসত্য। তারা টাকা দিবে না বলেই এমন মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করেছে। আমরা সব সময় গ্রাহকের সমস্যা থাকলে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করে থাকি।’

মমিনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘আ হাবিব এন্টারপ্রাইজ এর আগেও বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগ করেছিল। তারপর আমরা বিস্তারিত সব ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে সন্তুষ্ট করেছি। এখন উনি আবারও আমাদের হয়রানি করছে। টাকা দিবে না বলেই তারা এ কাজ করছে।’

এ বিভাগের আরো খবর