রমজান মাসের চাহিদা মেটাতে সরকার ২ কোটি ৯ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ও ৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে।
সরকারি বিপণনকারী সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এসব পণ্য কিনে সাশ্রয়ী দামে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করবে। তেল ও মসুর ডাল কিনতে সরকারের ব্যয় হবে মোট ৩৩৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ক্রয় কমিটির নিয়মিত বৈঠকে এই দর প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
বর্তমানে টিসিবির অধীনে ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ড আছে। এর আওতায় একজন কার্ডধারীর কাছে সর্বোচ্চ ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি মসুর ডাল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি।
প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১১০ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ৬০ টাকা, ১ কেজি মসুর ডাল ৭০ টাকা ও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
বাজারমূল্য অপেক্ষা কম দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। এ জন্য সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের জন্য সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে সেনা এডিবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রির কাছ থেকে ৪৪ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৮১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। প্রতি লিটারের দাম পড়বে ১৮৪ টাকা ৫০ পয়সা।
একই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে শুন শিং এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। প্রতি লিটারের দাম পড়বে ১৮৪ টাকা ৫০ পয়সা।
তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে ওমানের জাদ আল রাহিল ইন্টারন্যাশনাল এলএলসি সুলতানাত থেকে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। প্রতি লিটারের জন্য খরচ হবে ১৩৭ টাকা ৯৪ পয়সা। সব মিলে ২ কোটি ৯ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার দরপ্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।
এছাড়া উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ভারতের আরবেল বাকলিয়াত হুবুবাত সান্তিক এএস থেকে ৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ৮১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
বৈঠকে কমিটির অনুমোদনের জন্য ৯টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চারটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের একটি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি প্রস্তাব রয়েছে। সব দরপ্রস্তাবেরই অনুমোদন দেয়া হয়।
অনুমোদিত ৯টি দরপ্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে সরকার ব্যয় করবে ৯৩২ কোটি টাকা। বাকি ১ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা আসবে এডিবি, জাইকা ও দেশীয় ব্যাংকঋণ থেকে।