বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অর্ধেক কোম্পানির ফ্লোর তোলার সিদ্ধান্তে ‘বুমেরাং’

  •    
  • ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৫:৪০

এসব কোম্পানি বাছাইপ্রক্রিয়ায় যে গলদ ছিল, তা বোঝা যায় এর পরেই। প্রথমত এমন একটি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তোলা হয়েছে, যেটির লেনদেন স্থগিত। আবার বেশ কিছু কোম্পানির দর ফ্লোরের চেয়ে অনেক বেশি। কোনোদিন এর দর বাড়ত ৫ থেকে ৮ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি। কোনো দিন কমত এ রকম। কিন্তু এখন সেসব কোম্পানির দর কমতে পারছে না। ফলে ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে না। বিএসইসির আশা ছিল, ফ্লোর প্রাইস ওঠার পর এসব কোম্পানির লেনদেন বাড়বে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তা কমিয়ে দিয়েছে আরও।

বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দরের বেশিতে হাতবদল হতে থাকা বেশ কিছু কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দরপতনের সীমা কমিয়ে আনার পর মন্দা পুঁজিবাজারে দেখা যাচ্ছে আরও মন্দা। টানা চার কর্মদিবস লেনদেন হলো তিন শ কোটি টাকার নিচে।

বুধবার হাতবদল হয়েছে কেবল ২৫৮ কোটি ২২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা, চাঙা পুঁজিবাজারে শীর্ষে থাকা একটি কোম্পানিতেই এই পরিমাণ লেনদেন দেখা গেছে।

গত ৩১ জুলাই দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর মাস তিনেক পুঁজিবাজারে চাঙাভাব থাকলেও অক্টোবরের শেষ থেকে আবার দেখা দেয় মন্দাভাব। ফ্লোর প্রাইসে নেমে আসা তিন শতাধিক কোম্পানির শেয়ার দর আর কমতে পারবে না, এই অবস্থানে আসার পর সেই দরে শেয়ার কিনতে আগ্রহী ছিল না বিনিয়োগকারীরা।

এই অবস্থায় গত ২২ ডিসেম্বর থেকে ১৬৯টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দিয়ে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা এক শতাংশ করে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

তবে এসব কোম্পানি বাছাইপ্রক্রিয়ায় যে গলদ ছিল, তা বোঝা যায় এর পরেই। প্রথমত এমন একটি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তোলা হয়েছে, যেটির লেনদেন স্থগিত। আবার বেশ কিছু কোম্পানির দর ফ্লোরের চেয়ে অনেক বেশি। কোনোদিন এর দর বাড়তি ৫ থেকে ৮ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি। কোনো দিন কমত এ রকম। কিন্তু এখন সেসব কোম্পানির দর কমতে পারছে না। ফলে ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে না।

বিএসইসির আশা ছিল, ফ্লোর প্রাইস ওঠার পর এসব কোম্পানির লেনদেন বাড়বে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তা কমিয়ে দিয়েছে আরও।

অর্ধেক কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস ওঠার আগে ২১ ডিসেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন ছিল ৩৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। পরের কর্মদিবসেই তা নেমে আসে ২২৭ কোটি ৭৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকায়। দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটির পর রোববার বড়দিনের ছুটি শেষে সোমবার লেনদেন নেমে আসে দুই শ কোটির নিচে। সেদিন হাতবদল হয় ১৯৮ কোটি ৮০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।

মঙ্গলবার তা কিছুটা বেড়ে হয় ২৬৯ কোটি ৫৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। বুধবার সেখান থেকে কমল আরও।

আগের দুই কর্মদিবসে সূচক কমলেও এদিন কিছুটা বাড়ে। এই ১৫ পয়েন্ট উত্থানের পেছনে ওরিয়ন গ্রুপের চার কোম্পানি ছাড়া ভূমিকা ছিল বসুন্ধরা পেপার আর বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের।

সূচক বাড়লেও কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। ৭৪টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৯১টির। ১৬৮টি কোম্পানি আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে। দুটি কোম্পানির লেনদেন স্থগিত। ছয়টির লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটে লেনদেন হয়নি। বাকি ৫১টির একটি শেয়ারও হাতবদল হয়নি।

বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনেদেনের চিত্র

লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ্ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজারের মন্দাবস্থায় বিভিন্ন সময় বলা হয়, আস্থা নেই। শুধু স্টক মার্কেট নয়, আস্থা নেই পুরো অর্থনীতির ওপরেই। এই পরিস্থিতিতে ১ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার দিয়ে ১৬৯টি কোম্পানির ফ্লোর তোলার মতো কিছু একটা করে খুব একটা কাজ হবে না। জুট স্পিনার্স, পেপার প্রসেসিংয়ের মতো শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের ওপর ছিল, সেগুলো আগে ৭, ৮ শতাংশ দর কমতে পারলেও এখন আর ১ শতাংশের নিচে কমতে পারবে না। এগুলো তো হলো না।’

দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ দর বেড়ে ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫ টাকা ৬০ পয়সা, যা আগের দিন ছিল ২৩ টাকা ৩০ পয়সা।

৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ দর বেড়ে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৮৫ টাকায়, যা আগের দিন ছিল ৪৪৬ টাকা।

তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল ই-জেনারেশন। ৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৫১ টাকা ২০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৪৭ টাকা ৭০ পয়সা।

এ ছাড়া তালিকায় ছিল নাভানা ফার্মা, মনোস্পুল, ইস্টার্ন হাউজিং, কোহিনূর কেমিক্যাল, বসুন্ধরা পেপার, অ্যাডভেন্ট ফার্মা ও বেঙ্গল উইন্ডসর।

দরপতনের শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি ১ শতাংশ দর কমেছে তাল্লু স্পিনিংয়ের। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯ টাকা ৯০ পয়সায়।

শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ দর কমে রেনউইক যজ্ঞেশরের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৬৪ টাকা ৩০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৯৭৪ টাকা।

ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের শেয়ারদর শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৬২১ টাকা ২০ পয়সায়। আগের দিন ছিল এক হাজার ৬৩৭ টাকা ৫০ পয়সা।

এ ছাড়া তালিকায় পরের স্থানে ছিল লিবরা ইনফিউশন, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড-১, নর্দার্ন ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, রহিম টেক্সটাইল, প্রাইম টেক্সটাইল, বিচ হ্যাচারি ও সাভার রিফ্যাক্টরিজ।

সূচকে প্রভাব যাদের

সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ২৪ পয়েন্ট।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ১৫ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৪ দশমিক ১১ শতাংশ।

এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে বসুন্ধরা পেপার, কোহিনূর কেমিক্যাল, নাভানা ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মা, ইস্টার্ন হাউজিং, ইউনিক হোটেল ও জেনেক্স ইনফোসিস।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট।

বিপরীতে কোনো কোম্পানিই ১ পয়েন্ট সূচক কমাতে পারেনি। শীর্ষ ১০টি কোম্পানির প্রত্যেকের দরপতনে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ০৩ পয়েন্ট করে।

সূচক কমিয়েছে অ্যাপেক্স ট্যানারি, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, বিচ হ্যাচারি, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, এমারেল্ড অয়েল, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স ও ডমিনেজ স্টিল।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে শূন্য দশমিক ৩০ পয়েন্ট।

এ বিভাগের আরো খবর