বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুঁজিবাজারে এক বছরে সূচক কমেছে ৮ শতাংশের বেশি

  •    
  • ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৯:৪১

পতনের এই হারকে স্বাভাবিক বলছেন বিশ্লেষকরা। তাদের ভাষ্য, অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও যে পতন হয়েছে তা খুবই স্বাভাবিক। এর চেয়ে কিছু বেশি হলেও আপত্তি করা যেত না বলে জানান তারা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাবমুক্ত ছিল না দেশের পুঁজিবাজারও। অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে এক বছরে পুঁজিবাজারে সূচক কমেছে ৮ শতাংশের বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত ‘উইকলি সিলেক্টেড ইকোনমিক ইনডিকেটরস’ প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

পতনের এই হারকে স্বাভাবিক বলছেন বিশ্লেষকরা। তাদের ভাষ্য, অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও যে পতন হয়েছে তা খুবই স্বাভাবিক। এর চেয়ে কিছু বেশি হলেও আপত্তি করা যেত না বলে জানান তারা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইস আরোপের কারণে পুঁজিবাজারের স্বাভাবিকতা নষ্ট করা হয়েছে। যদি তা না করা হতো তাহলে সূচক হয়তো আরও কয়েক শ পয়েন্ট বেশি নিচে নামতো, কিন্তু বাজারের গতি শ্লথ হতো না।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এক বছর আগে ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বরে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৭৫৭ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বরে এসে এর অবস্থান দাঁড়ায় ৬ হাজার ১৯৮ দশমিক ৮২ পয়েন্ট। অর্থাৎ এক বছরে সূচক কমেছে ৫৫৮ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ।

অন্যদিকে গত বছরের ২১ ডিসেম্বরে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকের অবস্থান ছিল ১৯ হাজার ৬৯০ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট, যা চলতি বছরের ২১ ডিসেম্বরে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩০৮ দশমিক ১৫ পয়েন্টে। অর্থাৎ এক বছরে সূচক কমেছে ১ হাজার ৩৮২ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা ৭ দশমিক ০২ শতাংশ।

তবে গত ছয় মাসে পুঁজিবাজারে সূচক পতনের হার তার আগের ছয় মাসের তুলনায় কম। চলতি বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ডিএসইর সূচক কমেছে ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ, আর সিএসইর সূচক কমেছে ২ দশমিক ২৪ শতাংশ।

এর কারণ ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে পতন ঠেকাতে জুলায়ের শেষ দিকে এসে শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। ৩১ জুলাই থেকে ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের পরে উত্থান দেখা দেয় পুঁজিবাজারে।

তবে এই উত্থান ভারসাম্যপূর্ণ ছিল না। ৭০ থেকে ৮০টির মতো শেয়ারের দরবৃদ্ধির ওপর ভর করে মাস দুয়েক সূচক বাড়তে থাকে। এগুলোর দর যেভাবে বেড়েছিল মাস দুয়েক পরেই সেই হারে কমতে থাকে। এক পর্যায়ের সিংহভাগ শেয়ার নেমে আসে ফ্লোর প্রাইসে। এই দরে লাখ লাখ শেয়ারের বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতা সংকটে ভুগতে থাকে পুঁজিবাজার।

সেপ্টেম্বরে তিন হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে যাওয়া লেনদেন ডিসেম্বরে এসে নিয়মিতভাবে ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে ওঠানামা করছে।

সূচক পতনের বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দিস ইজ কোয়াইট নর্মাল। ৫৫৮ পয়েন্ট কমতেই পারে। এটা নির্ভর করছে অর্থনীতির স্বাস্থ্যের ওপর, কোম্পানিগুলোর পার্ফর্ম্যান্সের ওপর। এই দুইটা জিনিসের ওপর নির্ভর করে স্টকের দাম কোথায় থাকবে, বা ওভার অল মার্কেটের উচ্চতা বা নিম্নতা কোথায় থাকবে বা না থাকবে সেটা।’

তিনি আরও বলেন, ‘কারও কারও ধারণা এটা আরও ওপরে যাওয়া উচিত ছিল। আমার ধারণা ছিল না। আমি মনে করেছিলাম, ৬ হাজার ২০০ থেকে ৫০০ পয়েন্টের মধ্যে থাকলে সহনীয় হবে। প্রকৃত জ্ঞানী বিনিয়োগকারীরা উঁচু বাজারকে ভয় করে, আর অজ্ঞরা চায় এটা উঁচুকে যাক। ওপরে যাওয়া মানেই তো হলো ভয়ের মধ্যে ঢোকা।’

আবু আহমেদ বলেন, ‘প্রথম ছয় মাস ভালো ছিল, অর্থনৈতিক অবস্থার সঙ্গে পুঁজিবাজারের গতিপথ ঠিক ছিল। কিন্তু বিএসইসির মাথার মধ্যে একটা পোকা ঢুকেছে যে, মূল্য সূচকটাকে নিচে যেতে দেবে না। ওইটা করতে গিয়ে তারা ফ্লোর প্রাইস আরোপ করল। কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য যদি ভালো না হয়, তাহলে দর নিচে নামতে পারবে না কেন? এটার জবাব তাদের কাছে নেই। পৃথিবীর কোথাও ফ্লোর প্রাইস বলে কিছু নাই।

‘ফ্লোর প্রাইস না থাকলে যে ৫৫৮ পয়েন্ট সূচক পড়েছে তার সঙ্গে হয়তো আরও ৩০০ থেকে ৪০০ পয়েন্ট যোগ হতো। কিন্তু তাতে কী হয়েছে, সেটা আবার উঠতো। মার্কেট ভালো থাকতো। এখন মার্কেট তো চালু নাই। বিনিয়োগকারীরা এখন ব্রোকারেজ হাউজে যায় না। ব্রোকাররা বসে মশা-মাছি মারে।’

এ বিভাগের আরো খবর