বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অর্থনীতিতে মাঝারি ধাক্কাতেও বিশ্বমন্দার ঝুঁকি: বিশ্বব্যাংক 

  •    
  • ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ২১:৪৭

বিশ্বব্যাংক বলছে, ‘২০২২ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে, যা ৫২ বছর আগে ১৯৭০ সালের মন্দার পর আর দেখা যায়নি। বৈশ্বিক অর্থনীতি এখন সবচেয়ে মন্থর গতিতে রয়েছে। বিশ্বের তিনটি বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং ইউরো অঞ্চল তীব্র সংকটের মধ্যে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ২০২৩ সাল অর্থনীতিতে মাঝারি ধাক্কাও বিশ্বকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে।’

বিদায়ী ২০২২ সাল জুড়ে ছিল অনিশ্চয়তা। এই বছরটিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রকল্পগুলো ব্যাহত হওয়ায় সংকটে পড়েছে গোটা পৃথিবী। মন্থর জিডিপি প্রবৃদ্ধি (অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি) বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনের প্রচেষ্টাকে চরমভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে। এমন অবস্থায় আগামী বছর মাঝারি ধাক্কাতেও বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার দিকে যেতে পারে।

বিশ্ব আর্থিক খাতের বহুপাক্ষিক ঋণদাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক বিদায়ী ২০২২ সালকে নিয়ে এমন মূল্যায়ন করেছে। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে সোমবার এ মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

করোনা মহামারির প্রভাব এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া সংকটকে দায়ী করে বিশ্বব্যাংক বলছে ২০২২ সাল ছিল বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ‘ঘটনাবহুল উদ্বেগের’ বছর।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে শিক্ষার ক্ষতি, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত এবং অন্যান্য বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ বিশ্বকে মনে করিয়ে দেয়, করোনা মহামারির প্রভাবগুলো দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।

‘২০২২ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে, যা ৫২ বছর আগে ১৯৭০ সালের মন্দার পর আর দেখা যায়নি। বৈশ্বিক অর্থনীতি এখন সবচেয়ে মন্থর গতিতে রয়েছে। বিশ্বের তিনটি বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং ইউরো অঞ্চল তীব্র সংকটের মধ্যে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ২০২৩ সাল অর্থনীতিতে মাঝারি ধাক্কাও বিশ্বকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে।’

বিশ্বব্যাংক বলছে, গত এক বছরে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এক দশকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সামগ্রিক ঋণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর প্রায় ৬০ শতাংশ হয় ঋণ সংকটে অথবা এর ঝুঁকিতে রয়েছে।

ঋণের চাপে জর্জরিত বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলো অর্থনৈতিক সংস্কার, স্বাস্থ্য, জলবায়ুর প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মোকাবিলা করে টিকে থাকা, শিক্ষাসহ অন্যান্য মৌলিক উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট অগ্রাধিকার খাতগুলোতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে সক্ষম হবে না। ২০১০ সাল থেকে ঋণের গঠন নাটকীয়ভাবে পরিবর্তত হয়েছে, ব্যক্তিগত ঋণদাতারা ক্রমবর্ধমান বৃহত্তর ভূমিকা পালন করছে।

২০২১ সালের শেষ নাগাদ ২০২২ সালের আন্তর্জাতিক ঋণ প্রতিবেদন অনুসারে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর সরকারি এবং সর্বজনীনভাবে গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের ৬১ শতাংশ বেসরকারি ঋণদাতাদের দখলে ছিল। ইতোমধ্যে নন-প্যারিস ক্লাব দেশগুলো (যারা ঐতিহ্যবাহী ঋণদাতা নয়, যেমন- চীন, ভারত, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত) দ্বিপাক্ষিক ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও একটি বৃহত্তর ভূমিকা পালন করছে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, একদিকে পাওনাদার পুল বাড়ানোর ঝুঁকিকে বহুমুখী এবং ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে; অন্যদিকে এটি ঋণ পুনর্গঠনকে আরও কঠিন করে তোলে। এটি বিশেষ করে এমন সময়ে উদ্বেগজনক অবস্থা তৈরি করেছে যখন বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি স্থবির হয়ে পড়ছে, যা ‘স্ট্যাগফ্লেশন’ এর ভয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা

বিশ্বব্যাংক বলেছে, বিদায়ী ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি প্রকট হয়েছে। বিশ্ববাজারে সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খাবারের দামে। বিশেষ করে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর থেকে ছোট বড় সব দেশেই মূল্যস্ফীতির পারদ চড়ছে। সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা- সব মিলিয়ে অনেক কৃষিপণ্য এবং খাদ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সারসহ অন্য উপকরণের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বিশ্বব্যাংক ১৫ মাস মেয়াদে ৩০ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, “বিশ্বব্যাংক খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য তার অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে চলেছে এবং খাদ্য নিরাপত্তার উন্নতি, ‘পুষ্টি-সংবেদনশীল কৃষি’র প্রচার এবং খাদ্য নিরাপত্তার উন্নতির মাধ্যমে সবার খাদ্য নিশ্চিতে কাজ করছে।”

বিশ্বব্যাংক খাদ্য ব্যবস্থাপনা খাতে নেতৃস্থানীয় দাতা সংস্থা। ২০২২ সালে কৃষি এবং সংশ্লিষ্ট খাতে তারা ৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে বলে ওয়াশিংটনভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থাটি জানিয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে জলবায়ুরজনিত প্রভাবও খারাপ হয়েছে। পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন শত শত মানুষ, বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা লাখ লাখ। চীনে খরা এবং ইউরোপে যে মাত্রায় তাপপ্রবাহ, তা গত ৫০০ বছরেও দেখা যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর