বাংলাদেশ ও আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক, বিনিয়োগ এবং সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।বাংলাদেশে সফররত আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই আগ্রহের কথা জানান এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। সোমবার দুপুরে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘বাংলাদেশ মোজাম্বিকে প্রধানত ফার্মাসিউটিক্যাল, রাবার এবং আরএমজি পণ্য রপ্তানি করে। যেখানে প্রধান আমদানি পণ্য হলো তুলা।’
পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ, হিমায়িত সামুদ্রিক খাবার, প্লাস্টিক পণ্য, সিরামিক, পাট ও চামড়াজাত পণ্য, আইসিটি, এফএমসিজি, হোম অ্যাপ্লায়েন্স এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক শক্তি রয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের মোজাম্বিকে এসব খাতের কারখানা গড়ে তোলার সুযোগ অনুসন্ধানের পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি সেখানের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগ করার বিষয়েও তিনি পরামর্শ দেন।
তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক ভালো সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর বৃহৎ অবদানের কারণে বাংলাদেশ সেখানে দারুণ সুপরিচিতি। তবে এর বাইরেও এখন আমরা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়িয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় অর্থনৈতিক ব্লকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’
দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে দুই দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংস্থার মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করার আহ্বান জানান মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
মোজাম্বিক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন মোজাম্বিকের এশিয়া ও ওশেনিয়া মহাপরিচালক জোসে মাতসিনহা।
তিনি বলেন, ‘মোজাম্বিক ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাবনাময় যেসব খাতে দুই দেশ কাজ করতে পারে সেগুলো অনুসন্ধানেই আমরা বাংলাদেশে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পারস্পরিক স্বার্থে কৌশলগত ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা পেতে পারি। মোজাম্বিকে প্রচুর পরিমাণে জমি এবং পানি রয়েছে, তবে আমাদের দক্ষতারও অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি খাতে আমাদের সাহায্য করতে পারে।’
এফিবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি এম মোমেন বলেন, ‘বিদেশ থেকে নিজেদের উদ্যোগে প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তাই মোজাম্বিক থেকে গ্যাস আমদানিসহ কৃষি, মৎস্য, পর্যটন ইত্যাদি খাতে দু’দেশের বাণিজ্য বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।’
এ ছাড়া সম্ভাবনাময় খাতসমূহে বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতে নিযুক্ত মোজাম্বিকের হাইকমিশনার এরমিন্দো ফেরেইরা, অর্থনীতি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি জোসে ফার্নান্দো মেসিয়াস, এফবিসিসিআই পরিচালক হাসিনা নেওয়াজ, এমজিআর নাসির মজুমদার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, এসএম শাফিউজ্জামান, মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারি, আক্কাস মাহমুদ, এফবিসিসিআই মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক প্রমুখ।