লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কোনো ব্যাংক কৃষি ও পল্লিঋণের টাকা পুরোপুরি বিতরণ করতে না পারলে অবশিষ্ট অর্থ জমা রাখবে বাংলাদেশ ব্যাংকে। এ লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কমন ফান্ড (বিবিএডিসিএফ)’ গঠন করেছে আর্থিক খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
সার্কুলার অনুযায়ী কোনো ব্যাংক যদি ১০০ টাকা কৃষি ও পল্লিঋণ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে, আর বছর শেষে যদি ৮০ টাকা বিতরণ করে, তাহলে অবশিষ্ট ২০ টাকা বিবিএডিসিএফে জমা রাখতে হবে।
এই তহবিল থেকে কৃষি খাতে ঋণ দিতে অন্য ব্যাংকগুলোকে এই অর্থ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চলতি বছরের ২৮ জুলাই জারি করা ২০২২-২৩ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লিঋণ নীতিমালার আওতায় ‘কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন’ শীর্ষক সার্কুলারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়েছে, ‘ব্যাংকগুলোর বার্ষিক কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার অনর্জিত অংশ কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে বিনিয়োগের লক্ষ্যে বিবিএডিসিএফ ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’
তহবিল পরিচালনার জন্য নীতিমালাও জারি করা হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়, কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রার অনর্জিত অংশের সমপরিমাণ অর্থ বিবিএডিসিএফে জমা রাখতে হবে। অর্থ জমাদানকারী ব্যাংক জমা করা অর্থের ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিবিএডিসিএফে জমা করা অর্থ ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী সক্ষমতার ভিত্তিতে বরাদ্দ করা হবে। বরাদ্দ প্রাপ্তির সর্বোচ্চ ১৮ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে ২ শতাংশ হারে সুদসহ আসল পরিশোধ করতে হবে।
ব্যাংকগুলোর অনুকূলে বরাদ্দ করা অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ও পল্লিঋণ নীতিমালা অনুযায়ী ৮ শতাংশ সুদহারে কেবল নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে (এমএফআই লিংকেজ ব্যতীত) কৃষি ও পল্লিঋণ হিসেবে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করতে হবে।
ঋণ প্রদানকারী ব্যাংকগুলোর ঋণঝুঁকি হ্রাস করতে বিবিএডিসিএফ থেকে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করা ঋণের ১ শতাংশ সুদের সমপরিমাণ অর্থ জমা করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে রিস্ক মাইগ্রেশন ফান্ড গঠন করতে হবে।
বিবিএডিসিএফ থেকে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করা ঋণের ১ শতাংশ সুদের সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের স্থিতিপত্রের কমন ইকুইটি টায়ার ১ মূলধনের উপাদান জেনারেল রিজার্ভ হিসাবের একটি খাত হিসেবে প্রদর্শন করতে যথাযথভাবে ডিসক্লোজার দিতে হবে।
বিবিএডিসিএফ থেকে বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে আদায় করা সুদের অবশিষ্ট ৪ শতাংশ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক আয় খাতে স্থানান্তর করতে পারবে।
এই নির্দেশনা চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।