বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাজনৈতিক উত্তেজনা কমার পর গতি ফিরছে পুঁজিবাজারে

  •    
  • ১২ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৫:৫৭

নানা শঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে সমাবেশটি হয়েছে শান্তিপূর্ণ। আর বিএনপি যে কর্মসূচি দিয়েছে, তাও অনেকটাই নমনীয়। আর এরপর থেকেই হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন বিনিয়োগকারীরা। ধীরে ধীরে সক্রিয় হতে শুরু করার ইঙ্গিত মিলছে।

বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের বিভাগীয় সমাবেশের আগে আগে পুঁজিবাজারে করুণ চিত্র তৈরি হলেও শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ হওয়ার পর ধীরে ধীরে গতি ফিরতে শুরু করেছে পুঁজিবাজারে।

টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইতে লেনদেন ১২ কর্মদিবস পর ছাড়াল পাঁচ শ কোটি টাকার ঘর।

আগের দিনও লেনদেন গত বৃহস্পতিবারের উত্তেজনার তুলনায় বেড়েছিল ১২০ কোটি টাকার মতো। সোমবার সেখান থেকে বাড়ল আরও দেড় শ কোটি টাকা।

সব মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ৫৬৮ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। এর আগে সবশেষ পাঁচ শ কোটি ছাড়িয়ে লেনদেন হয় গত ২৩ নভেম্বর। আর সোমবারের চেয়ে চেয়ে বেশি লেনদেন হয় এক মাস আগে গত ১৪ নভেম্বর। সেদিন হাতবদল ঞয় ৭১৪ কোটি টাকার বেশি।

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার শঙ্কার মধ্যে দেশে রিজার্ভের পতন ছাড়াও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নিয় উৎকণ্ঠার কারণে গত মাস দুয়েক ধরেই পুঁজিবাজার টালমাটাল। ফ্লোর প্রাইসের কারণে শ তিনেক কোম্পানির শেয়ার একটি নির্ধারিত দরের নিচে নামতে না পারার বাস্তবতার মধ্যে লেনদেনও দৃশ্যত আটকে ৭০ থেকে ৮০টি কোম্পানিতে।

কোনো দিন ৬০টির বেশি, কোনো দিন ৭০ টির বেশি, কোনো দিন ৮০টির বেশি কোম্পানির ক্রেতা উধাও হয়ে যায়। আর দুই শতাধিক কোম্পানির ক্রেতা থাকলেও লেনদেন হওয়া শেয়ারের সংখ্যা খুবই কম।

এর মধ্যে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে ঘিরে রাজনীতিতে উত্তাপের কারণে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর থেকে পুঁজিবাজারে লেনদেন কমতে কমতে দুই শ কোটি টাকার ঘরে নেমে যায়।

তবে শেষমেশ নানা শঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে সমাবেশটি হয়েছে শান্তিপূর্ণ। আর বিএনপি যে কর্মসূচি দিয়েছে, তাও অনেকটাই নমনীয়। আর এরপর থেকেই হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন বিনিয়োগকারীরা। ধীরে ধীরে সক্রিয় হতে শুরু করার ইঙ্গিত মিলছে।

এর মধ্যে আবার রিজার্ভের ইউটার্ন, বিশ্ববাজারে পণ্য ও জ্বালানির মূল্য কমে আসতে থাকা, নভেম্বরে রপ্তানি প্রথমবারের মতো পাঁচ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম, গত বছরের তুলনায় নভেম্বরে আমদানি অর্ধেকে নেমে আসা, রেমিট্যান্সের পতন থামা- সব মিলিয়ে অর্থনীতির এখন ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

অর্থনীতি আর রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা থাকলে পুঁজিবাজারেও বিনিয়োগকারীরা ফিরবেন বলেও মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

লেনদেন বৃদ্ধির সঙ্গে কমে এসেছে লেনদেন না হওয়া কোম্পানির সংখ্যাও। অর্থাৎ আগের দিনের যতগুলো কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছিল তার চেয়ে বেশি সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে।

এদিন ৩৫৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন এ সংখ্যাটা ছিল ৩১৪। তার আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৯০ কোম্পানির শেয়ার।

লেনদেনের সঙ্গে দরবৃদ্ধির সংখ্যাও বেড়েছে। দরপতনের তুলনায় এ সংখ্যা চার গুণের বেশি। ১৭টি কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ৭৪টির।

এর প্রভাবে আগের দিনের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি সূচক বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে, যা ২১ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সূচকের অবস্থান এর চেয়ে বেশি ছিল ১৩ নভেম্বর, ৬ হাজার ৩০৪ পয়েন্ট।

আজ একটি শেয়ারও লেনদেন হয়নি এমন শেয়ারের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৪টিতে। এর মধ্যে ২টির লেনদেন বন্ধ ছিল লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের কারণে।

আগের দিন এ সংখ্যাটা ছিল ৭৬, যার মধ্যে ছয়টির লেনদেন বন্ধ ছিল লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের কারণে। তার আগের দিন একটি শেয়ারও লেনদেন হয়নি ৮৯টি কোম্পানির।

এ ছাড়া অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে ২৬৫টির, যার প্রায় সবই ফ্লোর প্রাইসে রয়েছে। আগের দিন অবশ্য এমন কোম্পানির সংখ্যা ছিল ২৪৩টি।

ক্যাল সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী (সিইও) রাজেশ সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমান অবস্থায় বলতে গেলে প্রায় সবাই স্টাকড হয়ে আছেন বিভিন্ন শেয়ারে। কোনো শেয়ারে কিছু মুভমেন্টের কারণে ফান্ড রিলিজ হলে সেটা অন্যদিকে যাচ্ছে।

‘আমাদের দেশের যারা মিড লেভেলের ইনভেস্টর, অর্থাৎ যাদের ৫ থেকে ১০ কোটি টাকার মধ্যে পোর্টফোলিও, তাদের হাতে নগদ থাকলেও এরকম পরিস্থিতি টাকা ইন করাতে চান না। কারণ তারা প্রায় সবাই মাইনাসে রয়েছেন। এমন সময় কোনোটাতে যদি একটু মুভমেন্ট হয় তখন হয়তো তারাও কিছুটা অ্যাক্টিভ হন। এভাবে সবার একটু করে অংশগ্রহণে লেনদেন বাড়ছে।’

সূচকে প্রভাব যাদের

সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মা। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

ওরিয়ন ইনফিউশনের দর ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট।

বেক্সিমকো ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ২ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে বসুন্ধরা পেপার, কোহিনূর কেমিক্যাল, ওরিয়ন ফার্মা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইউনিক হোটেল, জেএমআই হসপিটাল ও ইস্টার্ন হাউজিং।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২০ দশমিক ৭০ পয়েন্ট।

বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে মেঘনা পেট্রোলিয়াম। কোম্পানির দর কমেছে ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

বার্জার পেইন্টসের দর শূন্য দশমিক ৬৬ শতাংশ হ্রাসে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৯০ পয়েন্ট।

সি-পার্লের কারণে সূচক হারিয়েছে শূন্য দশমিক ৬১ পয়েন্ট। এদিন কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ২৭ শতাংশ।

এ ছাড়াও ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, বাটা সুজ, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, মুন্নু সিরামিকস, বিডি থাই ফুড, মুন্নু অ্যাগ্রো ও রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দরপতনে সূচক কমেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৪ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট।

দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০

এই তালিকার শীর্ষে দেখা গেছে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোকে।

সবচেয়ে বেশি ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ দর বেড়ে মনোস্পুলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১২ টাকায়, যা আগের দিন ছিল ২৮৬ টাকা ৯০ পয়সা।

৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ দর বেড়ে জুট স্পিনার্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৭৩ টাকা ৭০ পয়সা, যা আগের দিন ছিল ২৫১ টাকা ৭০ পয়সা।

তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল কোহিনূর কেমিক্যাল। ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৪২১ টাকা ৮০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৩৮৭ টাকা ৯০ পয়সা।

এ ছাড়া তালিকায় ছিল সোনালী আঁশ, পেপার প্রসেসিং, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বসুন্ধরা পেপার, ওরিয়ন ইনফিউশন, বিডি কম ও ইস্টার্ন হাউজিং।

দরপতনের শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ দর কমেছে ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৮৭ টাকা ৫০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ৮৫৬ টাকা ৩০ পয়সা।

এর পরেই ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ দর কমে মুন্নু অ্যাগ্রোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৯৭ টাকা ৯০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৮২০ টাকা ৩০ পয়সা।

মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারদর ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ কমে লেনদেন হয়েছে ১৯৮ টাকা ৬০ পয়সায়। আগের দিন ছিল ২০৪ টাকা ৪০ পয়সা।

এ ছাড়া তালিকায় পরের স্থানে ছিল মুন্নু সিরামিকস, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিডি থাই ফুড, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেঙ্গল উইন্ডসর, বাটা সুজ ও সি-পার্ল।

এ বিভাগের আরো খবর