বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুঁজিবাজারে উত্থান, ৮৯ কোম্পানি ঘিরে লেনদেন

  •    
  • ১১ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৬:১৮

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ৩১৪টির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দরপতনের তুলনায় দরবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় আট গুণ। আটটি শেয়ারের দাম কমার বিপরীতে বেড়েছে ৬৩টির। অন্যদিকে ২৪৩টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে আগের দরে, যার প্রায় সবই ফ্লোর প্রাইসে গড়াগড়ি খাচ্ছে।

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের পরের দিন রোববারই কিছুটা জেগে উঠল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

সূচকের সঙ্গে লেনদেন শতকোটি টাকার বেশি বেড়ে ৫ কর্মদিবস পরে ৪০০ কোটির ঘর অতিক্রম করল। এ লেনদেনের ৮২ শতাংশই হয় ৮৯টি কোম্পানিতে।

গত ৩১ জুলাই দ্বিতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর পুঁজিবাজার মাস দুয়েক চাঙা থাকলেও গত দুই মাস ধরে তা ক্রমশ নিম্নমুখী। ফ্লোর প্রাইস ছাড়িয়ে যেমন কোম্পানির শেয়ারের দর তরতর করে বাড়ছিল, এর মধ্যে সিংহভাগই ফ্লোর প্রাইস বা আশপাশের দরে নেমেছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক মন্দা ও দেশের ব্যাংক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির খবর সংবাদমাধ্যমে আসার পর পুঁজিবাজারে নতুন করে বিনিয়োগে সাহস হারিয়ে ফেলেন বিনিয়োগকারীরা। এর সঙ্গে ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশের ঘোষণায় আরও বিমুখ হয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা।

দেশে আবারও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংহিসতার পুনরাবৃত্তি ঘটার আশঙ্কায় ধীরে ধীরে নিজেদের গুটিয়ে নিতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা, যার ফলে লেনদেনখরায় ভুগতে থাকে দেশের পুঁজিবাজার।

বর্তমানে পুঁজিবাজারে নিয়মিত লেনদেন হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ কোটির ঘরে। ১৯ কর্মদিবস থেকে ৫০০ কোটির ঘর ছাড়িয়ে ওপরে উঠতে পারেনি লেনদেন। আর হাজার কোটির ঘরে লেনদেন হয়েছে সর্বশেষ ২২ কর্মদিবস আগে।

গোলাপবাগে বিএনপির সমাবেশের পর আশঙ্কাজনক কোনো পরিস্থিতি উদ্ভূত না হওয়ায় কিছুটা চাঙাভাব দেখা গেল পুঁজিবাজারে।

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার ডিএসইতে হাতবদল হয় ৪১৪ কোটি ৮৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১১৯ কোটি ১০ লাখ ১১ হাজার টাকা বেশি।

আগের সপ্তাহের সর্বশেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ২৯৫ কোটি ৭৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। তার আগে মঙ্গলবার আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ২৭১ কোটি ৯৭ লাখ ৬১ হাজার টাকার লেনদেন হয়।

এর চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল। লকডাউনে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে ওই দিন হাতবদল হয় ২৩৬ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।

রোববার ৭৬টি কোম্পানির একটির শেয়ারও লেনদেন হয়নি। এর মধ্যে ছয়টির লেনদেন বন্ধ ছিল লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের কারণে।

৩১৪টির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দরপতনের তুলনায় দরবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় আট গুণ। আটটি শেয়ারের দাম কমার বিপরীতে বেড়েছে ৬৩টির। অন্যদিকে ২৪৩টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে আগের দরে, যার প্রায় সবই ফ্লোর প্রাইসে গড়াগড়ি খাচ্ছে।

এর প্রভাবে সূচক বেড়েছে ১১ পয়েন্ট। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৩৯ পয়েন্টে। এটি বিগত ৬ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ১ ডিসেম্বর সূচক ছিল ৬ হাজার ২৪৫ পয়েন্ট।

কোন কোম্পানিতে লেনদেন কত

শতাধিক কোম্পানিতে শেয়ার লেনদেন হয়েছে নগণ্য। ১১৭টি কোম্পানিতে ১ থেকে ৯০০টির মধ্যে শেয়ার লেনদেন হয়।

১০ লাখ টাকার বেশি লেনদেন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা ৮৯। এ কোম্পানিগুলোতে হাতবদল হয় ৩৩৮ কোটি ৫৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকার শেয়ার, যা মোট লেনদেনের ৮১ দশমিক ৬০ শতাংশ।

১ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয় ৪৮টি কোম্পানিতে। এই লেনদেনের পরিমাণ ৩২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।

এর মধ্যে শীর্ষ ১০টি কোম্পানিতেই লেনদেন হয় ১৮৩ কোটি ৭৪ লাখ ৪ হাজার টাকা।

পুঁজিবাজার যখন চাঙা ছিল, তখন একটি কোম্পানিতেই এর দ্বিগুণ লেনদেন হতো।

আজ সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় সালভো কেমিক্যালের শেয়ার। ৬৪ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৯টি শেয়ার হাতবদল হয় ৪০ কোটি ১০ লাখ ৯৮ হাজার টাকায়।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৪ কোটি ৮৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা লেনদেন হয় ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের। কোম্পানির মোট ৮১ লাখ ১৭ হাজার ৫৩৯টি শেয়ার হাতবদল হয়।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৩০০টি শেয়ার হাতবদল হয় ২০ কোটি ৩২ লাখ ৯০ হাজার টাকায়।

এ ছাড়াও ১০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয় জেনেক্স ইনফোসিস, বেক্সিমকো ফার্মা, বিচ টেক হ্যাচারি, আমরা নেটওয়ার্কস, আমরা টেকনোলজিস, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও মুন্নু অ্যাগ্রোতে।

ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজ বেশ কিছু শেয়ার ফ্লোর ছেড়ে বেরিয়েছিল। এ কারণে কিছু ফান্ড রিলিজ হয়েছে। সেগুলোই আবার অন্যান্য শেয়ারে গেছে, যার কারণে লেনদেন বেড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিলেন। যে আতঙ্ক ছিল, সেটা কাটিয়ে বিনিয়োগকারীরা রিল্যাক্সড ছিলেন আজ, সেটাও বলা যাচ্ছে না। কয়েক দিনের ট্রেড দেখার পর বোঝা যাবে।’

সূচকে প্রভাব যাদের

সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।

ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশনের দর ১০ বাড়ায় সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৯৬ পয়েন্ট।

বেক্সিমকো ফার্মা সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ।

এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সামিট পোর্ট অ্যালায়েন্স, ওরিয়ন ফার্মা, আমরা টেকনোলজিস, বসুন্ধরা পেপার, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও সি-পার্ল।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৭ দশমিক ৯১ পয়েন্ট।

বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ২০ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে বার্জার পেইন্টস। কোম্পানিটির দর কমেছে শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ।

বাটা সুজের দর শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ হ্রাসে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৫১ পয়েন্ট।

সোনালী পেপারের কারণে সূচক হারিয়েছে শূন্য দশমিক ৩৯ পয়েন্ট। এদিন কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ৭৭ শতাংশ।

এছাড়াও বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক, অ্যাম্বি ফার্মা, বিকন ফার্মা, ইস্টার্ন ক্যাবলস ও বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের দরপতনে সূচক কমেছে।

সব মিলিয়ে এই ৮টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট।

দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বেড়ে ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৪ টাকায়, যা আগের দিন ছিল ৪০ টাকা।

৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ দর বেড়ে সোনালী আঁশের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৭১ টাকা ৯০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৪৩৪ টাকা।

তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল আমরা টেকনোলজিস। ৮ দশমিক ২০ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৪৩ টাকা ৫০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৪০ টাকা ২০ পয়সা।

এ ছাড়া তালিকায় ছিল ওরিয়ন ইনফিউশন, মুন্নু অ্যাগ্রো, জুট স্পিনার্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও ই-জেনারেশন।

দরপতন যেমন

যে ৮ কোম্পানির দর কমেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ২২ শতাংশ দর কমেছে অ্যাম্বি ফার্মার। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৪১ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৫৫৩ টাকা ৩০ পয়সা।

এর পরই ১ দশমিক ৬০ শতাংশ দর কমে বাটা সুজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৪৩ টাকা ৭০ পয়সায়। কোম্পানিটির আগের দিনের দর ছিল ৯৫০ টাকা ২০ পয়সা।

সোনালী আঁশের শূন্য দশমিক ৭৭ শতাংশ দর কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬১৫ টাকা ১০ পয়সায়। আগের দিন তা ছিল ৬১৯ টাকা ৯০ পয়সা।

এছাড়া তালিকায় পরের স্থানে ছিল বার্জার পেইন্টস, ইস্টার্ন ক্যাবলস, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও বিকন ফার্মা।

এ বিভাগের আরো খবর