বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুঁজিবাজারের লেনদেন ফের ২০০ কোটির ঘরে

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৫:৪৪

৮৯টি কোম্পানির একটি শেয়ারও হাতবদল হয়নি। ১১৮টি কোম্পানিতে শেয়ার লেনদেন নগণ্য। ২১৪টি হাতবদল হয়েছে ফ্লোর প্রাইসের সর্বনিম্ন দরে। তবে লাখ লাখ শেয়ার বসিয়েও পাওয়া যায়নি ক্রেতা।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হলেও পুঁজিবাজারে চলমান খরা কাটার কোনো লক্ষণই দৃশ্যমান হচ্ছে না। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ফের একবার লেনদেন হলো ২০০ কোটির ঘরে।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার হাতবদল হয়েছে ২৯৫ কোটি ৭৪ লাখ ৪১ হাজার টাকার শেয়ার, বন্ড ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।

এ নিয়ে গত তিন দিনে দুই বার তিন শ কোটি টাকার নিচে নামল লেনদেন। বুধবার তিন শ কোটি ছাড়ালেও মঙ্গলবার তা ছিল বৃহস্পতিবারের চেয়ে কম।

গত ১১ কর্মদিবসে লেনদেন ৫০০ কোটির ঘর ছুঁতে পারেনি একবারও। সর্বশেষ ওই অংক ছুঁয়ে লেনদেন হয়েছে ২৩ নভেম্বর, ৫৪০ কোটি ৬৮ লাখ ১৯ হাজার টাকা।

সর্বশেষ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে ২১ কর্মদিবস আগে ৯ নভেম্বর। ওই দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ১৮ কোটি ৮৫ লাখ ৩২ হাজার।

আজকের চেয়ে কম লেনদেন হয়েছে মঙ্গলবার ২৭১ কোটি ৯৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা। যা বিগত আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

লকডাউনে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাবে, এমন আতঙ্কে ২০২১ সালের ৫ এপ্রিলের পর এটিই সর্বনিম্ন লেনদেন। সেদিন হাতবদল হয় ২৩৬ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।

গত ৩১ জুলাই দ্বিতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর পুঁজিবাজার মাস দুয়েক চাঙা থাকলেও গত দুই মাস ধরে তা ক্রমেই নিম্নমুখি। ফ্লোর প্রাইস ছাড়িয়ে যেমন কোম্পানির শেয়ারের দর তরতর করে বাড়ছিল, এর মধ্যে সিংহভাগই ফ্লোর প্রাইস বা আশপাশের দরে নেমেছে।

শক্তিশালী বহু কোম্পানি, যেগুলো বছরের পর বছর বিনিয়োগকারীদের দারুণ মুনাফা দিয়ে আসছে, সেগুলোর শেয়ারেরও ক্রেতা নেই। এখন আলোচনা হচ্ছে, ফ্লোর প্রাইসের কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বিএসইসি চেয়ারম্যান প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। এর মধ্যে বিএসইসি যোগাযোগ করেছে আইসিবির সঙ্গে। পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলোর অবণ্টিত লভ্যাংশ দিয়ে যে তহবিল করা হয়েছে, সেখান থেকে অর্থ দেয়ার কথা রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ কোম্পানিকে জানিয়েছে তারা। এই তহবিল ছাড়াও জনতা ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংকের সঙ্গে তহবিলের জন্য আলোচনা চালাচ্ছে আইসিবি।

এ ছাড়াও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের তথ্য জানতে দেশের ২৬টি বিমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বৈঠকে ডেকেছিল বিএসইসি। বুধবার বিকেলে কমিশনের মাল্টিপারপাস হলে এ বৈঠকটি হয়।

তবে পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ করে পুঁজি হারানোর ঝুঁকি রয়েছে, তাই স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের নিশ্চয়তা না পেলে বিনিয়োগে আগ্রহী নয় তারা।

এসব প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অনাস্থার কারণ পুঁজিবাজারের লেনদেনেই দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার ১১টির লেনদেন বন্ধ ছিল লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের কারণে। এর বাইরে ৮৯টি কোম্পানির একটি শেয়ারও হাতবদল হয়নি।

১১৮টি কোম্পানিতে শেয়ার লেনদেন হয়েছে নগণ্য। এসব কোম্পানিতে মোট ২২ হাজার ১৩৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যার আর্থিক মূল্যমান ৩৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

গোটা সপ্তাহের মতোই বৃহস্পতিবারের লেনদেনও বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেছে

দরবৃদ্ধির তুলনায় দরপতনের সংখ্যা তিনগুণের বেশি। ১৭টি কোম্পানির দর বাড়ার বিপরীতে কমেছে ৫৫টির। আর অপরিবর্তিত দরে বা ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হয়েছে ২১৮টির।

এর প্রভাবে আগের দিন যতটুকু বেড়েছিল তার বেশি সূচক কমেছে। ৫ পয়েন্ট কমে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৬ হাজার ২২৭ পয়েন্টে।

লেনদেনের বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অর্থনৈতিক সংকট ও ব্যাংকিং খাতের উদ্বেগজনক খবরেও আগে থেকেই পুঁজিবাজার মন্থর। তার ওপর গতকালের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিচেনায় নিয়ে মানুষ আরও সতর্ক অবস্থানে চলে গেছেন। বলা যেতে পারে স্বাভাবিক আচরণ থেকে একটু নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।’

সূচকে প্রভাব যাদের

সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৪০ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে সোনালী আঁশ। কোম্পানির দর কমেছে ৪৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

ইউনিক হোটেলের দর ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ হ্রাসে সূচক কমেছে শূন্য দশমিক ৬৭ পয়েন্ট।

অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের কারণে সূচক হারিয়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ পয়েন্ট। এদিন কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৬১ শতাংশ।

এ ছাড়াও ওরিয়ন ফার্মা, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, পূবালী ব্যাংক, বিকন ফার্মা, নাভানা ফার্মা, সোনালী পেপার ও বসুন্ধরা পেপারের দরপতনে সূচক কমেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট।

বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৪১ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

মুন্নু সিরামিকসের দর ৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ২৩ পয়েন্ট।

মুন্নু অ্যাগ্রো সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ২১ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।

এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে যমুনা অয়েল, মেঘনা সিমেন্ট, অ্যাম্বি ফার্মা, বিডি থাই ফুড, এডিএন টেলিকম, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ও অ্যাডভেন্ট ফার্মা।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট।

দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ দর বেড়ে মুন্নু অ্যাগ্রোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৬৭ টাকা ৩০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৭১৩ টাকা ৮০ পয়সা।

একই সমান দর বেড়ে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭০৪ টাকা ৩০ পয়সা, যা আগের দিন ছিল ৬৫৫ টাকা ২০ পয়সা।

তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল অ্যাম্বি ফার্মা। ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৫৫৩ টাকা ৩০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৫২৮ টাকা।

এ ছাড়া তালিকায় ছিল জুট স্পিনার্স, মুন্নু সিরামিকস, মেঘনা সিমেন্ট, ফাইন ফুডস, বিডি থাই ফুড, কে অ্যান্ড কিউ ইন্ডাস্ট্রিজ ও অ্যাডভেন্ট ফার্মা।

দরপতনের শীর্ষ ১০

বোনাস লভ্যাংশ সমন্বয়ের কারণে সোনালী আঁশের দর ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ কমলেও আসলে দরবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪ টাকা ৯০ পয়সা। ১০০ শতাংশ বোনাস পুরোপুরি সমন্বয় হলে দর হতো ৩৯৯ টাকা ১০ পয়সা। কিন্তু ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৩৪ টাকা।

সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ দর কমেছে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৭ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের দিন ছিল ৪৮ টাকা ৭০ পয়সা।

এর পরেই ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ দর কমে ই-জেনারেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৫ টাকা ৫০ পয়সা। আগের দিনের দর ছিল ৫৭ টাকা ৩০ পয়সা।

২ দশমিক ৬৯ শতাংশ দর কমে ইউনিক হোটেলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৭ টাকা ৮০ পয়সায়। যা আগের দিন ছিল ৫৯ টাকা ৪০ পয়সা।

এ ছাড়া তালিকায় পরের স্থানে ছিল নাভানা ফার্মা, আইটি কনসালট্যান্টস, জেমিনি সি ফুড, অগ্নি সিস্টেমস, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ফার্মা ও পেপার প্রসেসিং।

এ বিভাগের আরো খবর