বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খাদ্যের দাম বাড়তি, সিরাজগঞ্জে বন্ধ বেশির ভাগ পোলট্রি খামার

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১১:২৪

খামারি হেলাল বলেন, ‘পোলট্রি খাদ্যের দাম বেড়েছে। মুরগির বিভিন্ন রোগের ওষুধের দামও বেড়েছে। ডিমের দাম বাড়লে কয়েক দিন পর তা আবার কমে যায়। কিন্তু পোলট্রি খাদ্য আর ওষুধের দাম বাড়লে আর কমে না।’

অস্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থা, পোলট্রি খাদ্য ও ওষুধের দাম বৃদ্ধির বিপরীতে উৎপাদিত মুরগি ও ডিমের দাম কম হওয়ায় ধস নেমেছে সিরাজগঞ্জের পোলট্রি শিল্পে। ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে জেলার বেশির ভাগ খামার। বেকার হয়ে পড়েছে এই শিল্পের কয়েক হাজার শ্রমিক।

সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকার আরও আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবেন এমনটি আশা করছেন এ শিল্প সংশ্লিষ্টরা।

পোলট্রি শিল্প কয়েক বছর আগেও ছিল লাভজনক একটি শিল্প। স্বল্পপুঁজির এই শিল্পে উৎসাহী হয়ে ওঠে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত বেকার যুবকরা। সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার পোলট্রি খামার। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় বেকারদের। কিন্তু বর্তমান চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। সরকারি নজরদারির অভাবে গত কয়েক বছরে এ শিল্পের বাজার হয়ে পড়েছে অস্থিতিশীল। পোলট্রি খাদ্য, মুরগির বাচ্চা ও ওষুধের দাম বেড়েছে দফায় দফায়। কিন্তু সে অনুপাতে উৎপাদিত ডিম ও মুরগির দাম না বাড়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রান্তিক খামারিদের। অধিকাংশ খামারিরা লোকসান দিয়ে তাদের পুঁজি হারিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই।

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে প্রতি বস্তা মুরগির খাদ্যের দাম বেড়েছে মানভেদে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। বর্তমানে ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা ব্রয়লার ‍মুরগির খাবার ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০, সোনালি মুরগির খাবার ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ ও লেয়ার মুরগির খাবার ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে উৎপাদিত ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকায়। আর ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি ও সোনালি মুরগি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায়।

পোলট্রি খাদ্যের দাম একবার বাড়লে তা আর কমছে না, কিন্তু মুরগি বা ডিমের দাম এক সপ্তাহ বাড়লে কমছে পরের সপ্তাহেই। এর ওপর যোগ হয়েছে ‘ফাউল টাইফয়েড’ নামক এক নতুন রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে এক দিনেই মারা যাচ্ছে খামারের শত শত মুরগি।

বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলায় ২ হাজার ৬৫৭টি নিবন্ধিত খামারে রয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৯ মুরগি। অনিবন্ধিত খামার ও খামারে থাকা মুরগির সংখ্যা এর প্রায় দ্বিগুণ।

জেলাটির একটি পোলট্রি খামারে কাজ করেন আরিফ। তিনি বলেন, ‘বেকার ছিলাম। এরপর খামারে কর্মস্থান হয়েছে। এই খামারের বেতন দিয়ে আমার সংসার চলে৷ সব কিছুর দাম বেড়েছে। এতে করে খামারের মালিকরা পড়েছেন মহাবিপদে। আমাদের বেতন দিতে হয়, তাদেরও চলতে হয়। তবে এভাবে চললে খামারিরা ব্যবসা বন্ধ করে দেবেন। এতে আমরা বেকার হয়ে পড়ব।’

পোলট্রি খামারি হেলাল বলেন, ‘পোলট্রি খাদ্যের দাম বেড়েছে। মুরগির বিভিন্ন রোগের ওষুধের দামও বেড়েছে। ডিমের দাম বাড়লে কয়েক দিন পরে তা আবার কমে যায়। কিন্তু পোলট্রি খাদ্য আর ওষুধের দাম বাড়লে আর কমে না। এতে খামারিরা লোকসানের মুখে আছে। ‍মুরগির নতুন একটা রোগ হয়েছে ‘ফাউল টাইফয়েড’। এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, মুরগির এ নতুন রোগ নিয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও কোনো পদক্ষেপ নেয় না।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার বলেন, ‘আমরা মাঝে মাঝে টিকা দিই সুলভমূল্যে। পোলট্রি খাদ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। খামারিদের সরকারিভাবে প্রণোদনা ও বাজার তদারকির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর