বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি ৯৯ টাকায়

  •    
  • ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ২৩:৩৯

তবে সব ব্যাংক এই দরে ডলার পাচ্ছে না। সরকারের প্রয়োজনীয় আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য শুধুমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ৯৯ টাকায় ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অন্য ব্যাংকগুলোকে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে ডলার কিনে আমদানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে।

বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির দর আরও ১ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সোমবার থেকে ৯৯ টাকা দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে। তার আগে প্রতি ডলারের জন্য ৯৮ টাকা নেয়া হতো।

একাধিক ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

তবে সব ব্যাংক এই দরে ডলার পাচ্ছে না। সরকারের প্রয়োজনীয় আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য শুধুমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ৯৯ টাকায় ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অন্য ব্যাংকগুলোকে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে ডলার কিনে আমদানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের সর্বোচ্চ দর ছিল ১০৭ টাকা; সর্বনিম্ন ১০২ টাকা ৬৯ পয়সা।

সব ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী ডলার বিক্রি করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সঞ্চিত রিজার্ভ আরও কমে যাবে। সেজন্য সরকারের প্রয়োজনেই শুধু রিজার্ভ থেকে ডলার ছাড়া হচ্ছে। গত সোমবার ডলারের দর ৯৮ টাকা থেকে ১ টাকা বাড়িয়ে ৯৯ টাকা করা হয়েছে। এর আগে গত নভেম্বরে ব্যাংকগুলোর চাহিদা মেটাতে রিজার্ভ থেকে ৯৭ টাকা থেকে ১ টাকা বাড়িয়ে ৯৮ টাকায় প্রতি ডলার বিক্রি করা হচ্ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার সরকারি কেনাকাটায় প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এ নিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত (৫ মাস ৬ দিন) ৬৬০ কোটি (৬.৬ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করা হয়েছে।’

আন্তব্যাংক ও গ্রাহক পর্যায়ে সব ব্যাংকেই বর্তমানে ভাসমান বিনিময় দর অনুসরণ করছে। তবে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির ক্ষেত্রে নিজেদের নির্ধারিত আলাদা দর অনুসরণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যাকে বলা হচ্ছে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সেলিং রেট’। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক যে দামে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করত সেটিকে ‘ইন্টারব্যাংক এক্সচেঞ্জ রেট’ বা আন্তব্যাংক লেনদেন হার নামে অভিহিত করা হতো।

তবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ছাড়া অন্য কোনো ব্যাংকের কাছে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছর জুলাই থেকে রিজার্ভ থেকে ১০ বার ডলার বিক্রির দাম বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটি বাজারের সঙ্গে অ্যাডজাস্টমেন্ট করা হচ্ছে। বর্তমানে আন্তব্যাংক লেনদেনের গড় দরের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেলিং রেট সমানে নিয়ে আসবে। সে জন্য এই দর বাড়ছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেলিং রেট আন্তব্যাংকের সঙ্গে এক দরে নিয়ে এলে সামস্টিক অর্থনীতির জন্য ভালো হবে।’

এর আগে সর্বশেষ নভেম্বর মাসে ১ টাকা বাড়িয়ে ৯৮ টাকা করা হয়েছিল। এই দামেই ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তবে এই নতুন বিনিময় হার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে আন্তব্যাংক লেনদেন সর্বনিম্ন ছিল ১০২ টাকা ৬৯ পয়সা ও সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা।

চলমান ডলারসংকটের কারণে আন্তব্যাংক মুদ্রা বাজারে ডলারের চাহিদা ও জোগানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডলারের দর নির্ধারিত না হওয়ায় ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে ডলার লেনদেন বন্ধ করে দেয়।

এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশ কয়েকবার টাকার অবমূল্যায়ন করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করলেও আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের বাজার নিষ্ক্রিয়ই থাকে।

চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ডলারের আন্তব্যাংক বিনিময় হার ছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় বাজারের স্থিতিশীলতা আনতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) এক সভায় রেমিট্যান্স আনতে ১০৭ টাকা এবং রপ্তানি বিল নগদায়ন করতে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে রপ্তানি বিল নগদায়ন ও রেমিট্যান্স দরের মধ্যে পার্থক্য কমিয়ে আনতে চাচ্ছে এবিবি ও বাফেদা।

১২ সেপ্টেম্বর ব্যাংকগুলো রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স প্রেরকদের জন্য ১০৩ টাকা ৫০ পয়সা অভিন্ন হার নির্ধারণ করলে দীর্ঘ পাঁচ মাস নিষ্ক্রিয় থাকার পর ফের সচল হয় আন্তব্যাংক ফরেক্স বাজার।

ওই একই দিনে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রির হারের পরিবর্তে আন্তব্যাংক ডলার রেট হিসাবে ভাসমান হার প্রকাশ করা শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই দরের ব্যাখ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট বলছে, এটি আন্তব্যাংক লেনদেন, যা বাফেদা নির্ধারিত দর।

ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের বাজারদরের সঙ্গে মিলিয়ে ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ রেট চালুর কথা বললেও তারা নিজেরা ডলার বিক্রির ক্ষেত্রে আন্তব্যাংক দরটি অনুসরণ করছে না।

চাহিদা অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনছে। তবে ডলার কত দরে বিক্রি করা হচ্ছে-সে বিষয়ে বিস্তারিত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হচ্ছে না। ফলে এই দর বাড়ায় টাকার অবমূল্যায়ন হলো কি না, এ সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছুই বলছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির এই দরকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার সেলিং রেট’। ফলে যে ১ টাকা বাড়ানো হয়েছে সেটিকে বলা হচ্ছে বাজারের সঙ্গে ‘অ্যাডজাস্টমেন্ট’। এর আগে অবশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেলিং রেট বাড়লে সেটিকে ‘টাকার অবমূল্যায়ন’ বলা হতো।

এ বিভাগের আরো খবর