বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক বাজারের ১০ শতাংশ বাংলাদেশের দখলে

  •    
  • ৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৮:৪২

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য-যুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালে দেশটির অনেক প্রতিষ্ঠান বিকল্প উৎস হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নেয়। তবে করোনার কারণে রপ্তানি আবার নিম্নমুখী হতে থাকে। গত বছরের মে মাস থেকে বাজারটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ফের উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে শুরু করে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ তৃতীয় স্থান দখল করে আছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দেশের পোশাক রপ্তানি সুখবর দিয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে দেশটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ৫০ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্র পুরো বিশ্ব থেকে পোশাক আমদানি করেছে ৭ হাজার ৮৮৫ কোটি ডলার বা ৭৮ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকেই তারা কিনেছে ৭৫৫ কোটি বা ৭ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।

আগের বছর প্রথম ৯ মাসে দেশটিতে পোশাক রপ্তানি হয় ৫০০ কোটি ডলার বা ৫০ বিলিয়ন ডলার। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানির দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

আমেরিকার অফিশিয়াল সোর্স অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) চলতি বছরের ৯ মাসের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তালিকায় প্রথম স্থানে থাকা চীন দেশটিতে পোশাক রপ্তানি করেছে ১ হাজার ৭৭২ কোটি ডলার বা ১৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

আগের বছরের একই সময়ে দেশটির রপ্তানি ছিল ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ডলার বা ১৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। এতে দেশটি গত বছরও এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানিতে প্রথম ছিল। যা এ বছরও ধরে রেখেছে।

ভিয়েতনাম গত বছরের মতো তাদের দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দেশটি চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে পোশাক রপ্তানি করেছে ১ হাজার ৪৫৯ কোটি ডলার। এতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আগের বছর প্রথম ৯ মাসে দেশটি রপ্তানি করেছিল ১ হাজার ৮৩ কোটি বা ১০ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশের পরই রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটি এ সময়ে পোশাক রপ্তানি করেছে ৪৪৫ কোটি ডলার বা ৪ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। এর মাধ্যমে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দেশটির পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এতে প্রবৃদ্ধির দিক দিয়ে দেশটি সবার শীর্ষে অবস্থান করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শীর্ষ পোশাক সরবরাহকারীদের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। উচ্চ প্রবৃদ্ধিসহ অন্যান্য শীর্ষ দেশগুলো হলো ভারত ৫৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ, কম্বোডিয়া ৪৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ, পাকিস্তান ৪০ দশমিক ১১ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া ৩৯ দশমিক ৬১ শতাংশ।

প্রায় ১০ বছর আগে সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি কমে যায়। তারপর কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ব্যাপক সংস্কারকাজ করেন উদ্যোক্তারা। ফলে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি।

অন্যদিকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য-যুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালে দেশটির অনেক প্রতিষ্ঠান বিকল্প উৎস হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নেয়। তবে করোনার কারণে রপ্তানি আবার নিম্নমুখী হতে থাকে। গত বছরের মে মাস থেকে বাজারটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ফের উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে শুরু করে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ তৃতীয় স্থান দখল করে আছে।

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্বজুড়েই চলছে মন্দা। আর এমন সময়ে এ সুংসংবাদ আমাদের জন্য সত্যিই অনেক আনন্দের। এটা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পাওয়া।’

তিনি বলেন, ‘প্রচলিত বাজারের পাশাপাশি অপ্রচলিত বাজারেও আমাদের রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ কারণে অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বাড়ছে। আগামী দিনগুলোতেও এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশা করছি।’

বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির প্রভাবে পোশাকের ইউনিটের মূল্যবৃদ্ধি, কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি এবং সেই সঙ্গে আগের মাসগুলোতে অর্ডার বৃদ্ধি রপ্তানির পরিমাণ বাড়ার কারণ হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি হতাশাজনক বলে মনে হচ্ছে এবং বিশ্বব্যাপী খুচরা ব্যবসা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই এ ধরনের রপ্তানির বৃদ্ধিকে আত্মতুষ্টির কারণ হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক হবে না। আমরা সতর্ক এবং একই সঙ্গে ভবিষ্যতের বিষয়ে আশাবাদী। কারণ পোশাকশিল্পটি একটি টেকসই শিল্পে রূপান্তরিত হচ্ছে, যা আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।’

এ বিভাগের আরো খবর