বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এবার ২০ মাসে সর্বনিম্ন লেনদেন

  •    
  • ৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৫:১২

নভেম্বরে শীত পড়ার আগে আগে শীতঘুমে যায় পুঁজিবাজার। ২৪ নভেম্বর ২৩২ কোটি ৮০ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ২৪ অক্টোবর ৩৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা, ২৭ নভেম্বর ৩৩৯ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং ২১ নভেম্বর ৩৫১ কোটি ৯০ লাখ ২৩ হাজার টাকা লেনদেন হয়েছে। রোববারের আগে চলতি বছর সর্বনিম্ন লেনদেন ছিল গত ১৯ জুলাই। সেদিন ৩১৯ কোটি ৩৫ লাখ ২ হাজার টাকা লেনদেনের প্রধান কারণ ছিল কারিগরি ত্রুটি। সেদিন কয়েক ঘণ্টা লেনদেন বন্ধ ছিল।

শীতঘুমে থাকা পুঁজিবাজারের জেগে ওঠার কোনো লক্ষণই নেই। ফ্লোর থাকায় তিন শতাধিক কোম্পানির শেয়ারদর কমতে পারছে না, তবে শেয়ারের ক্রেতা নেই বললেই চলে। লেনদেন কোনো রকমে তিন শ কোটির ঘর পার করতে পারলেও সেটি গত ২০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

রোববার নতুন সপ্তাহের প্রথম দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে হাতবদল হয়েছে ৩১৩ কোটি ৫৬ লাখ ২ হাজার টাকার শেয়ার।

চলতি বছরের তো বটেই, ২০২১ সালের ৫ এপ্রিলের পর এটিই সর্বনিম্ন লেনদেন। সে সময় করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনের আগে আগে পুঁজিবাজারে লেনদের স্থগিত হয়ে যাবে, এমন আতঙ্কে লেনদেন নামে তলানিতে। দিনভর হাতবদল হয় কেবল ২৩৬ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। তবে পরদিন যখন পুঁজিবাজার চালু থাকার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে, পরদিন থেকেই বাড়তে থাকে লেনদেন।

তবে নভেম্বরে শীত পড়ার আগে আগে শীতঘুমে যায় পুঁজিবাজার। ২৪ নভেম্বর ৩২৩ কোটি ৮০ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ২৪ অক্টোবর ৩৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা, ২৭ নভেম্বর ৩৩৯ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং ২১ নভেম্বর ৩৫১ কোটি ৯০ লাখ ২৩ হাজার টাকা লেনদেন হয়েছে।

রোববারের আগে চলতি বছর সর্বনিম্ন লেনদেন ছিল গত ১৯ জুলাই। সেদিন ৩১৯ কোটি ৩৫ লাখ ২ হাজার টাকা লেনদেনের প্রধান কারণ ছিল কারিগরি ত্রুটি। সেদিন কয়েক ঘণ্টা লেনদেন বন্ধ ছিল।

করোনাকালের মতো না হলেও গত জুন থেকেই পুঁজিবাজার নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। জুলাইয়ে ডিএসসির সাধারণ সূচক ৬ হাজার পয়েন্টের নিজে নেমে এলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের পাশে দাঁড়ায়। সব শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়।

৩১ জুলাই থেকে উত্থানে ফেরে পুঁজিবাজার। এর মধ্যে বিনিয়োগকারীদের এক যুগের চাহিদাও পূরণ হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, শেয়ারের বাজারমূল্য নয়, ক্রয়মূল্য ধরেই গণনা হবে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট।

অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ফের চলে উত্থান। তবে অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়তে থাকলে ধীরে ধীরে গতি হারাতে থাকে পুঁজিবাজার।

এর মধ্যে ব্যাংকে টাকা রাখা নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়, সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা আরও বাড়ে। বেশ কিছু ব্যাংক থেকে বেআইনিভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের বিষয়টিও আসে সামনে। এতে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস নামতে থাকে তলানিতে।

রোববার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর শেয়ারের ক্রয়াদেশ ছিল না বললেই চলে। একপর্যায়ে মনে হয়েছিল তিন শ কোটি টাকার ঘরও ছাড়াবে না।

এদিন মোট ২২টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে, বিপরীতে দর হারিয়েছে ৬৪টি। আর ২১৪টি কোম্পানি ফ্লোর প্রাইসে হাতবদল হয়েছে।

যে লেনদেন হয়েছে, তার মধ্যে ৯২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা হাতবদল হয়েছে দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোতে। দর হারানো কোম্পানিগুলোতে হাতবদল হয় ১৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ ফ্লোরে থাকা বাকি কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন ৫০ কোটি টাকা ছাড়াতে পারেনি।

বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতনে কমেছে সূচকও। ২০ পয়েন্ট হারিয়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২২৪ পয়েন্টে।

রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

লেনদেনের বিষয়ে ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজের শীর্ষ নির্বাহী (সিইও) সুমন দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মানুষের ইনভলভমেন্ট কম। চিন্তা ভাবনা করে ইনভেস্টমেন্টে যাবেন, এমন পরিকল্পনায় রয়েছে। সেলারও নাই, বায়ারও নাই।’

এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানুষ ভাবছে, মার্কেট এর চেয়েও কমতে পারে বা খারাপ হতে পারে। এর জন্য তারা সাইডলাইনে রয়েছে, দেখে শুনে বিনিয়োগ করবেন।’

ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে কমার সুযোগ নেই এবং ফ্লোর উঠিয়ে নেয়ার কথাও ভাবছে না বিএসইসি, তাহলে কীভাবে কমবে? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস তুললে ডিপ্রেশনে চলে যাবে। সেটা কাটিয়ে ওঠার কোনো ইনস্ট্রুমেন্ট না রাখলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।’

উত্তরণে করণীয় কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়টা মানুষকে বোঝাতে হবে। মানুষ মূল্যস্ফীতি নিয়ে কথা বলবে, যদি বলা হয় উন্নত দেশেও মূল্যস্ফীতি ব্যাপক, তাহলে বলবে তাদের পারচেজ পাওয়ার আমাদের চেয়ে বেশি। কিন্তু তারপরেও আশেপাশের অনেক দেশের চেয়ে আমাদের অবস্থা কিছুটা হলেও ভালো- এই বিষয়টা মানুষকে না বোঝাতে পারলে আস্থা ফিরবে না। মানুষ তো প্যানিকড হয়ে আছে। এর দায় মিডিয়ার রয়েছে।’

সূচকে প্রভাব যাদের

সবচেয়ে বেশি ৫ দশমিক ২০ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। কোম্পানির দর কমেছে ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

বেক্সিমকো ফার্মার দর ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ হ্রাসে সূচক কমেছে ৪ দশমিক ২৫ পয়েন্ট।

বিকন ফার্মার কারণে সূচক হারিয়েছে ২ দশমিক ৭১ পয়েন্ট। এদিন কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

এ ছাড়াও কোহিনূর কেমিক্যাল, সোনালী পেপার, বসুন্ধরা পেপার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সি-পার্ল, ইউনিক হোটেল ও নাভানা ফার্মার দরপতনে সূচক কমেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২০ দশমিক ২৯ পয়েন্ট।

বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ।

বেক্সিমকো সুকুকের দর ২ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ১০ পয়েন্ট।

ইসলামী ব্যাংক সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ১ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ।

এর বাইরে সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে ওয়ান ব্যাংক, এডিএন টেলিকম, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, পদ্মা অয়েল, আমরা নেটওয়ার্কস, বিডি থাই ফুড ও যমুনা অয়েল।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৫ দশমিক ২৪ পয়েন্ট।

দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ দর বেড়ে কে অ্যান্ড কিউয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮৮ টাকা ৩০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ২৭০ টাকা ১০ পয়সা।

এরপরেই ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়ে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৭ টাকা ৯০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ১২২ টাকা ৭০ পয়সা।

তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল অ্যাডভেন্ট ফার্মা। ৪ দশমিক ০২ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ২৮ টাকা ৪০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ২৭ টাকা ৩০ পয়সা।

এ ছাড়া আমরা নেটওয়ার্কস, এডিএন টেলিকম ও অ্যাপেক্স ফুডসের দর বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি। বিডি থাই ফুড ও ওয়ান ব্যাংকের ২ শতাংশের বেশি এবং ইস্টার্ন ক্যাবলস ও মনোস্পুলের দর বেড়েছে ১ শতাংশের বেশি।

দরপতনের শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ দর কমেছে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৩ টাকা ৭০ পয়সায়, যা আগের দিন ছিল ৬৮ টাকা ৪০ পয়সা।

এর পরেই ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ দর কমে ই-জেনারেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৮ টাকা ৮০ পয়সায়। আগের দিনের দর ছিল ৬২ টাকা ৫০ পয়সা।

৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ দর কমে বসুন্ধরা পেপারে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৭ টাকা ৩০ পয়সায়। যা আগের দিন ছিল ৮২ টাকা ১০ পয়সা।

এ ছাড়া তালিকায় পরের স্থানে ছিল নাভানা ফার্মা, হাক্কানি পাল্প, ইস্টার্ন হাউজিং, মেঘনা সিমেন্ট, আইসিবি, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও বেক্সিমকো ফার্মা।

এ বিভাগের আরো খবর