বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণ নাও হতে পারে

  •    
  • ১ ডিসেম্বর, ২০২২ ২১:১৮

বিআইডিএসের বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনে মূল প্রবন্ধে সাদিক আহমেদ বলেন, ‘করোনা মহামারি-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে  বর্তমানে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেগুলো অব্যাহত রাখা ঠিক হবে না। কেননা, এখন প্রবৃদ্ধির দিকে নজর নয়, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে।

বৈশ্বিক মন্দার কারণে চলতি ও আগামী বছর সরকারের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তবে বর্তমান সংকটময় মুহূর্তে প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা চিন্তা করলে হবে না। আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া জরুরি।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনে এমন তাগিদ দেয়া হয়। রাজধানীর লেকশোর হোটেলে আয়োজিত তিন দিনের এই সম্মেলন শুরু হয়েছে। প্রথম দিন প্রায় ৯টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়।

উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই-এর ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ।

দ্বিতীয় অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এ সময় সভাপতিত্ব করেন সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান।

মূল প্রবন্ধে সাদিক আহমেদ বলেন, ‘করোনা মহামারি-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বর্তমানে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেগুলো অব্যাহত রাখা ঠিক হবে না। কেননা, এখন প্রবৃদ্ধির দিকে নজর নয়, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে। এ জন্য সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেয়া, মুদ্রা বিনিয়ম হার বাজারের হাতে ছেড়ে দেয়া, আমদানি নিয়ন্ত্রণ না করা এবং এলসি খোলা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। চাহিদার ওপর ছেড়ে দিতে হবে। রাজস্ব আদায় বাড়ানোসহ কাঠামোগত সংস্কার বিশেষ করে একটি কর কমিশন গঠন করা দরকার। কারণ, বাংলাদেশের কর আদায় হার বিশ্বের প্রায় সব দেশের চেয়ে কম। এসব উদ্যোগ নিলে চলতি অর্থবছর হয়তো প্রবৃদ্ধি কমে ৬ শতাংশ হতে পারে। কিন্তু সেটিও খারাপ হবে না।’

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘অর্থনীতিতে ইতিবাচক মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। জিডিপির তুলনায় কর আদায়কে মন্দ বলা হয়েছে। কিন্তু এত যদি ভয়ংকর অবস্থা হয়, তাহলে ৫-৬-৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয় কীভাবে? নিশ্চই রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি কিছু একটা দিয়ে পুষিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রাজস্ব খাতে বড় উল্লম্ফন আশা করা যায় না। যদিও আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে কর আদায় বাড়ানো। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপর ধরে রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিবিএসর তথ্য বলছে, মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে কমে এসেছে। আমরা বিবিএস এবং বিআইডিএসের ওপর আস্থা রাখতে চাই।’

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ হবে। কিন্তু এটা অতি সংরক্ষণশীল তথ্য। বুঝতে পারছি না আইএমএফ-এর পূর্বাভাসকে কেন প্রবন্ধে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। গত অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরের চার মাসে অর্থনৈতিক সূচকগুলো ভালো অবস্থানে আছে। তাই এ বছর ৭ শতাংশের উপর অবশ্যই জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে।’

তিনি বলেন, ‘ব্যাংক ঋণের সুদ হার ৯ ও ৬ এর পরিবর্তে ৯ এবং ১২ শতাংশ পর্যন্ত করা যেতে পারে। এ ছাড়া কর কমিশন গঠন না করে রাজস্ব বোর্ডকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে আলাদা করে স্বাধীন করা যায় কিনা সেটি ভাবতে হবে।’

এ সময় তিনি বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকের আগের ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বলেন, ‘প্রধান সূচকগুলো উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় আছে।’

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘অবৈধভাবে বিদেশে মুনাফা পাচারের কারণে কিছু বড় শিল্প গ্রুপ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ খেলাপি হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে বাববার ঋণ পুনঃতফসিলীকরণ, সুদ মওকুফ ইত্যাদি সুবিধা দিতে হয়। কিন্তু এর পরিবর্তে সরকার আর্থিক সহায়তার অংশ হিসেবে মুনাফা অর্জনকারী কোম্পানিগুলোর কিছু শেয়ার সমমূল্যে অর্থাৎ শেয়ারপত্রে উল্লিখিত দামে কিনে নিতে পারে। এ ছাড়া ভালো কোম্পানি বাজারে শেয়ার ছাড়লেও সরকার আইন করে তার কিছু অংশও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উল্লিখিত দামে কিনে নিতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘কর নীতির কিছু বড় পরিবর্তনও বিবেচনা করা যায়। আমাদের দেশে সম্পত্তির উত্তরাধিকারে কর নেই, অথচ শিল্পোন্নত দেশগুলোতে উচ্চ হারে এ ধরনের কর আরোপ করা হয়। অর্থনৈতিক সাম্যের প্রশ্ন আমাদের মতো অর্থনীতির একটি বড় চালিকা শক্তি। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি উল্লেখ করা দরকার। বিনিয়োগের বাধা হিসেবে ব্যবসায় পরিবেশের নানা ক্রুটিবিচ্যুতি, বিশেষ করে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাই তুলনামুলকভাবে এই বৈরি ব্যবসায় পরিবেশের বেশি ভুক্তভোগী।’

এ বিভাগের আরো খবর