গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রাজধানীর ডিপিডিসির আওতাভুক্ত বিভিন্ন এলাকা বৃহস্পতিবার পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
গত ২১ নভেম্বর পাইকারি পর্যায়ে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সে সময় বিইআরসি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দর বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। আগে পাইকারি পর্যায়ে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দর ছিল ৫ টাকা ১৭ পয়সা, এখন যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ২০ পয়সা। এ দফায় প্রতি ইউনিটে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১ টাকা ৩ পয়সা।
পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ার পর এবার গ্রাহক পর্যায়েও বাড়তি দামের ইঙ্গিত রয়েছে প্রতিমন্ত্রীর কথায়।
রাজধানীর বেশির ভাগ বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা ভূগর্ভস্থ করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ধানমন্ডির বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থা পুরোপুরি আন্ডারগ্রাউন্ড করা হবে।
‘আর পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে রাজধানীর বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার বড় অংশ আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকবে। বিতরণ নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা হবে। ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তার ও সাবস্টেশন এবং অটোমেশন, সেন্ট্রাল স্ক্যাডা বিতরণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে। অপটিক্যাল ফাইবারসহ ভূগর্ভস্থ ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডুয়েল সোর্সের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।’
সার্বিক জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি সরবরাহ বাড়াতে ব্রুনাই, কাতার, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এলএনজি কেনা হবে।
তিনি বলেন, ‘আগামী বছর যেন লোডশেডিং না থাকে সরকার সেই চেষ্টা করছে। আশা করছি লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। তবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার যে প্রভাব সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এর মধ্যেও আমরা জনভোগান্তি কমাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, আগামী মার্চের পর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে বিদ্যুৎ-সংকট কেটে যাবে।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ‘ডিপিডিসি’র আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির আওতায় নতুন ১৪টি ১৩২/৩৩ কেভি ও ২৬টি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে এবং বিদ্যমান আটটি ১৩২/৩৩ কেভি ও চারটি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। ঢাকা শহরের ভূমির দুষ্প্রাপ্যতা বিবেচনায় আধুনিক এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ৩৫/৫০ এমভিএ ৩৩/১১ কেভি পাওয়ার ট্রান্সফর্মার স্থাপন করা হচ্ছে।