বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও খেলাপি ঋণের পাহাড়

  •    
  • ১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০৩

আহসান মনসুর বলেন, ‘বিতরণ করা এসব ঋণের বেশির ভাগই অসৎ উপায় অবলম্বন করে দেয়া হয়েছে। এমন লোকদের ঋণ দেয়া হয়েছে, যারা পরবর্তী সময়ে এসব টাকা আর পরিশোধ করছে না। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এসব ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে জড়িত থাকে। এসব ঋণ এখন আর ফেরত আসছে না।’

ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও খেলাপি ঋণের ভারে জর্জরিত। সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে (এনবিএফআইএস) খেলাপি ঋণের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। এই অঙ্ক মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ২৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার এই হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।

সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মোট ৭০ হাজার ৪১৬ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে।

তথ্যে দেখা যায়, ব্যাংকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতি প্রান্তিকেই বাড়ছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। তিন মাস আগে জুন পর্যন্ত দেশের ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা, যা ছিল বিতরণ করা ঋণের ২২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এ হিসাবে তিন মাসে খেলাপি ঋণে বেড়েছে ১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। এপ্রিল শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ১৬ কোটি টাকা।

ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিতরণ করা এসব ঋণের বেশির ভাগই অসৎ উপায় অবলম্বন করে দেয়া হয়েছে। এমন লোকদের ঋণ দেয়া হয়েছে, যারা পরবর্তী সময়ে এসব টাকা আর পরিশোধ করছে না। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এসব ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে জড়িত থাকে। এসব ঋণ এখন আর ফেরত আসছে না। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দিন দিন খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। আর্থিক খাত দুর্বল হওয়ার কারণ খেলাপি ঋণ বাড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আর্থিক খাতে নানা রকমের কেলেঙ্কারি সংঘটিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব খেলাপি ঋণের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। যেসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি, সেসব বিষয়ে তারা এড়িয়ে যায়।’

আহসান মনসুর বলেন, ‘যারা ভালো কাজ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের শাস্তি দেয়। আর যারা খারাপ কাজ করে তাদের বিষয়ে কোনো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।’

আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) রিসার্চ ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোভিডের সময় ঋণ পরিশোধে ছাড় দিয়েছিল। ফলে সে সময় খেলাপিরা কিছুটা হলেও চাপমুক্ত ছিল। তখন খারাপ লোনগুলোকে খেলাপির আওতায় আনা হয়নি। এখন সেগুলো বাড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠানকে অনেক বেশি ঋণ দিয়েছে। যখন ঋণ সুদে-আসলে পাওয়ার কথা, তখন আর ফেরত পাচ্ছে না। ফলে খেলাপির সংখ্যা বাড়ছে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

বছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। জুন শেষে খেলাপি ‍ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকার বেশি, যা মোট ঋণের প্রায় ৮ শতাংশ। অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর নয় মাসে খেলাপি বেড়েছে ৩১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর