দেশে ব্যাংক খাতের অবস্থা ভালো নয়- এমনটা মানতে নারাজ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। উল্টো দেশের ব্যাংকগুলোর অবস্থা কোথায় খারাপ তা লিখিতভাবে জানাতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে মঙ্গলবার সরকারি কর্মচারীদের গৃহনির্মাণ ঋণ ব্যবস্থাপনা মডিউল উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী। অনুষ্ঠান শেষে চলে যাওয়ার সময় ইসলামী ব্যাংকসহ দেশের সার্বিক ব্যাংক ব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্য জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যাংকের অবস্থা কোথায় খারাপ তা লিখিত দিয়ে যান, আমরা খতিয়ে দেখব।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক মো. নুরুল ইসলাম, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুরশেদুল কবীর, ইসলামী ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা প্রমুখ।
সরকারি কর্মচারীদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা’ প্রণয়ন করে সরকার। এরপর ২০১৯ সালের ডিসেম্বর প্রণয়ন করা হয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের শিক্ষক/কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা। একই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের জুনে প্রণয়ন করা হয় প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গৃহনির্মাণ ঋণের জন্য যে ব্যবস্থা চালু রয়েছে, তাতে অধিকাংশ সময় আবেদনকারীর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বেশ সময় লেগে যায়। আবেদনের অবস্থা কী বা কোন পর্যায়ে আছে, তা জানারও কোনো সুযোগ থাকে না আবেদনকারীদের। আশা করি ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করা হলে এ ধরনের সমস্যা দূর হবে।’
অর্থমন্ত্রীর মতে, ঋণ আবেদনপ্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করা হলে আবেদনকারী সরাসরি অনলাইনে অর্থ বিভাগে আবেদন করতে পারবেন। ব্যাংক ও মন্ত্রণালয় মিলে অল্প সময়ের মধ্যে অর্থ বিভাগ থেকে সুদ-ভর্তুকির মঞ্জুরি আদেশ জারি করাও সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে হলে আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। সবচেয়ে বড় কথা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।
এদিকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য গৃহনির্মাণ ঋণ দেয়ার পদ্ধতি সহজ করা বা অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া করা হলেও সাধারণ মানুষের জন্য একই পদ্ধতি চালুর বিষয়ে সরকার এখনও কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবকিছুতেই পরিবর্তন এনেছি। আগে যেভাবে বাজেট পেশ করতাম, সেখানেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। সবকিছু ডিজিটাল করা হয়েছে।’
‘আমি নিজেও একজন নিরীক্ষক ছিলাম। তখন একটাই অভিযোগ পেতাম, মাস শেষে লাইন ধরে বসে থেকেও পেনশনের টাকা পাওয়া যায় না। ভাবতাম, এটা কী করে সম্ভব? পেনশন কেন পাওয়া যাবে না? আসলে তখন সবকিছু ছিল কাগজে-কলমে। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা না থাকার কারণেই সমস্যা ছিল বেশি। এখন কোনও সমস্যা হচ্ছে না।’
সরকার সর্বজনীন পেনশনের যে কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে, তা দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দেন অর্থমন্ত্রী।