সারা দেশে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে চট্টগ্রাম বন্দর স্থবির হয়ে পড়েছে। বন্দরে জাহাজের পণ্য লোড-আনলোড বন্ধ রয়েছে। অচলাবস্থার দেখা দিয়েছে বহির্নোঙরেও।
শনিবার রাত থেকে সারা দেশে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হয়। রোববার সকাল থেকে বন্দরে লাইটারেজর জাহাজে লোড-আনলোড, সেইলিংসহ সব কার্যক্রম বন্ধ করে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মোহাম্মদ নবী আলম বলেন, ‘নৌযান শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, নৌপথে চাঁদাবাজি বন্ধ, শ্রমিকদের পরিচয়পত্র প্রদানসহ ১০ দফা দাবিতে এই ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে। রাতে কিছু কিছু শ্রমিক কাজ করলেও সকাল থেকে পুরোপুরি ধর্মঘট চলছে।’
শ্রমিকদের ১০ দফা দাবি হলো নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক দেয়াসহ সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা।
এ ছাড়াও রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌ-পথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ করা।
দাবির মধ্যে আরও রয়েছে ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেয়াসহ ভারতীয় সীমানায় হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সব লাইটার জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশে নৌ-শ্রমিকদের এই ধর্মঘট চলবে বলে জানান তিনি।
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বন্দরের কার্যক্রমে স্বাভাবিকভাবেই শ্রমিক ধর্মঘটের প্রথম পড়বে। তবে কনটেইনার জাহাজ বা কনটেইনার কার্গোতে কোনো সমস্যা নেই। আউটার অ্যাংকরেজ (বহির্নোঙর) থেকে পণ্য লোড-আনলোড বন্ধ আছে।’
এর আগে ১১ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান ও পতেঙ্গা থানার ওসিকে প্রত্যাহারসহ ৫ দফা দাবিতে বন্দর নগরীতে সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট পালন করেন লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিকরা।