বড় বড় ঋণখেলাপিরা বিচারের ঊর্ধ্বে থাকবেন কি না, সে প্রশ্ন তুলেছে হাইকোর্ট।
ঋণ জালিয়াতির মামলায় এক ব্যাংক কর্মকর্তার জামিন বাতিল আবেদনের শুনানিকালে রোববার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ প্রশ্ন তোলে।
সমবায় ব্যাংক হতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় ১২ কৃষকের গ্রেপ্তার নিয়ে আলোচনার মধ্যেই হাইকোর্ট উল্লিখিত প্রশ্ন তুলল। ঈশ্বরদীর ওই ১২ কৃষককে রোববার জামিন দিয়েছে পাবনার আদালত।
হাইকোর্টের বেঞ্চ বলে, ‘যারা অর্থশালী তারা কি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে? আর দুদক কি তাদের রেখে চুনোপুঁটিদের ধরতে ব্যস্ত থাকবে?’
দুদকের উদ্দেশে হাইকোর্ট আরও বলে, ‘ঋণখেলাপিরা আইনের চেয়ে শক্তিশালী নয়। তাহলে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? হাজার হাজার কোটি টাকা লোন নিয়ে খেলাপি হচ্ছে। আপনারা ধরছেন না কেন?
‘যারা বড় বড় ঋণখেলাপি, তারা কি বিচারের ঊর্ধ্বে থাকবে? যারা অর্থশালী, তারা কি ধরাছোঁয়ার বাইরে?’
আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এম এ আজিজ খান ও খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন।
বিসমিল্লাহ গ্রুপের ঋণ জালিয়াতির মামলায় শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা এ এস এম হাসানুল কবিরের জামিন বাতিল চেয়ে আবেদন করে দুদক। ওই আবেদনের শুনানির সময় আদালত এসব কথা বলে।
দীর্ঘদিনেও এ মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্ট।
বিসমিল্লাহ গ্রুপের এমডি খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ ১২ জনের নামে রমনা থানায় ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ মামলা করেন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ইস্কাটন শাখার ম্যানেজার নকীবুল ইসলাম। এ মামলায় ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর ব্যাংকটির তৎকালীন ডেপুটি ম্যানেজার এএসএম হাসানুল কবীর ও জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মান্নাতুল মাওয়াসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
এ মামলায় ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর দুজনকে জামিন দেয় বিচারিক আদালত। সেই জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক।
দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে।