জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীনে তিনটি বড় কাস্টম হাউসে বসছে ৬টি অত্যাধুনিক ও শক্তিশালী স্ক্যানার মেশিন।
নাচট্যাক নামে একটি প্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে মেশিনগুলো সরবরাহ করবে। এতে সরকারের ব্যয় হবে ৩২৭ কোটি টাকা।
বুধবার ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত দরপত্রের অনুমোদন দেয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এতে সভাপতিত্ব করেন।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে চারটি, সড়কপথের সবচেয়ে বড় বেনাপোল কাস্টম হাউসে একটি ও সাতক্ষীরার ভোমরা কাস্টম হাউসে একটি স্ক্যানার মেশিন বসবে।
মোট আমদানি শুল্ক আদায়ের ৮০ শতাংশ সংগৃহীত হয় এই তনটি কাস্টম হাউসের মাধ্যমে। এর মধ্যে সিংহভাগ আদায় হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস থেকে।
এনবিআর সূত্র বলেছে, বাংলাদেশ কাস্টম বিভাগকে আধুনিকায়ন করতে সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে অত্যাধুনিক স্ক্যনার মেশিন স্থাপন করা হচ্ছে তারই অংশ হিসেবে।
দেশের বিভিন্ন কাস্টম হাউসে বর্তমানে ১০টি স্ক্যনার মেশিন রয়েছে। এর মধ্যে চারটি অনেক পুরোনো। সাধারণত একটি স্ক্যানার মেশিনের ব্যবহারযোগ্য মেয়াদ ১০ বছর। এসব মেশিনের আয়ুষ্কাল প্রায় শেষ পযার্য়ে। ফলে পুরোনো স্ক্যানারগুলো ভালো কাজ করছে না।
জানা যায়, যেসব স্ক্যানার আনা হচ্ছে সেগুলো খুবই আধুনিক। স্ক্যানারগুলো বসানো হলে কনটেইনারের ভেতরে যা থাকবে সবই ধরা পড়বে। এতে অস্ত্র, মাদক, গোলাবারুদসহ অবৈধ পণ্য আনা বন্ধ হবে। পণ্য আামদনিতে মিথ্যা ঘোষণা নিয়ন্ত্রিত হবে। ফলে কমবে শুল্ক ফাঁকি।
এনবিআরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, সরকারের লক্ষ্য ব্যবসা সহজ করা। এর জন্য কাস্টম বিভাগকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কাস্টমসকে আধুনিক করতে হলে আমাদের আরও স্ক্যানার মেশিন বসাতে হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে মাদক, স্বর্ণসহ অবৈধ পণ্যের চোরাচালান প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। কমবে শুল্ক ফাঁকি।
এনবিআরের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা যায়, যেসব কারণে বন্দরে পণ্য খালাসে বিলম্ব হয় তার মধ্যে অন্যতম কারণ পণ্যের সরেজমিন পরীক্ষা বা ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন।
এনবিআর বলেছে, আধুনিক স্ক্যানার মেশিন বসানো হলে কায়িক পরীক্ষা কমে আসবে। কনটেইনারের ভেতরে অবৈধ পণ্য আছে কি না, এসব স্ক্যানার মেশিনের মাধ্যমে সহজেই শনাক্ত করা যাবে। এতে পণ্য খালাসের সময় কমে আসবে।
এনবিআরের সাম্প্রতিক করা টাইম রিলিজ স্টাডিতে দেখা যায়, বন্দরে জাহাজ ভেড়ার পর কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পণ্য খালাস করতে সময় লাগে গড়ে ১১ দিন। যা বিশ্বের আধুনিক বন্দরগুলোর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।
এই প্রেক্ষাপটে, ব্যবসার সহজ করতে বাংলাদেশ কাস্টম বিভাগে আধুনিকায়নের পরিকল্পনা নিয়েছে এনবিআর। এ জন্য বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকিগুলো বাস্তবায়নাধীন।
এনবিআর আশা করছে, সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী ৯ থেকে ১০ মাসের মধ্যে স্ক্যানার মেশিনগুলো স্থাপন করা সম্ভব হবে।