বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসলেও এখনও যত অর্থ আছে, তা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বলে দাবি করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতিই এখন চাপে। এর মধ্যে দেশকে তলানিতে নিতে কিছু মানুষ রাজনীতি করছে, এ নিয়ে মিথ্যাচার চলছে।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'বাংলাদেশের শিপিং খাত-বাস্তবতা ও করণীয়' বিষয়ে গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। এর আয়োজন করে দৈনিক ইত্তেফাক।
আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘তারা রিজার্ভসহ নানান বিষয়ে মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে। আপনারা জানেন, তিন মাসের মতো রিজার্ভ থাকাটা সন্তোষজনক। আমাদের তার চেয়ে বেশিই আছে।’
গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে ৫০ বিলিয়নের মাইলফলক ছোঁয়ার পথে ছিল যখন, তখন হয় ছন্দপতন।
আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য ও জ্বালানি মূল্যের উত্থানের পাশাপাশি মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি বেড়ে যাওয়ার কারণে এমনিতেই চাপে ছিল রিজার্ভ। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ হামলা হয়। এরপর থেকে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে।
এক বছরের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে রিজার্ভ নেমে আসে ৩৪ বিলিয়নে। এখন আবার রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে পড়েছে টান। ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী্ বলেন, ‘করোনা পরবর্তীতে লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়ায় রিজার্ভ কিছুটা কমে গেছে। তবে দেশের অর্থনীতি সচল আছে বলেই প্রধানমন্ত্রী আজ মীরেরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৫০ টি কল-কারখানা উদ্বোধন করেছেন।’
আগামী বছরের মাঝামাঝি ডানা মেলবে পায়রা
পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে ব্যবহার করা যাবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। বলেন, ‘কিছুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল ও ৮ টি জলযান উদ্বোধন করেছেন। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে আপনারা পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারবেন।
‘ছয় থেকে সাত শ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্ধারমানিক নদীর উপরে অত্যাধুনিক চার লেন বিশিষ্ট সেতু করা হচ্ছে। উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। আমাদের দেশে সর্বক্ষেত্রে এখন স্কিলড লোক তৈরি হয়ে গেছে।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবে দৈনিক ইত্তেফাক নিয়ে আলোচনায় নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী
খালিদ বলেন, ‘আমাদের সমস্যা রয়েছে, সরকারও সেই কথা বলছে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকার তাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আমরা চাই চট্টগ্রাম বন্দর,পায়রা বন্দর ও মংলা বন্দর দিয়ে পণ্যগুলো ওয়াটারওয়ে দিয়ে আসুক। প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
নৌপথকে কার্যকরী ব্যবহারের সমস্যাগুলো অনেকাংশেই কমে যাবে যাবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। বলেন, ‘মুক্তারপুর, কুমুদীনিতে টার্মিনাল তৈরি করা হয়েছে। খানপুরে টার্মিনাল তৈরির বিষয়ে টেন্ডার দেয়া হয়েছে। শিমুলিয়া ঘাটেও একটা টার্মিনাল তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।
‘ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডব্যাংকের ফান্ডে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পোর্টগুলোতে যেন ২০০ থেকে ৩০০ জাহাজ আসতে পারে সে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সর্বোপরি নৌপথকে কার্যকরীভাবে ব্যবহার করা হলে সমস্যাগুলো অনেকাংশেই কমে যাবে।’
চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ, পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমও এ সময় বক্তব্য রাখেন।