ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে ১০ শতাংশ কমে শেয়ার বেচাকেনা করা যাবে- আগের দিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির এমন নির্দেশনার পর বুধবার ব্লক মার্কেটে ৫০টি কোম্পানির মধ্যে ৩৩টির লেনদেন হয়েছে মূল বাজারের চেয়ে কম দরে।
তবে সবগুলোর দর সর্বোচ্চ সীমায় কমেনি। উল্টো দাম বেড়ে লেনদেন হয়েছে অনেকগুলোর। এ ছাড়া একই দরেও হাতবদল হয়েছে বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ার।
বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে কম দামে বেচা গেলেও সার্কিট ব্রেকারের নিচে নামা যাবে না। যদি কোনো কোম্পানির সার্কিট ব্রেকার ৬.৫ শতাংশ হয়, তাহলে একদিন সাড়ে ৬ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দিন সাড়ে ৩ শতাংশ কমতে পারবে।
সুযোগটি কাজে লাগিয়ে অনেকেই ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা শেয়ার কম দামে বিক্রি করে দিতে পারেন, এবং সেটা মূল বাজারের চেয়ে কমেই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে কিছু কোম্পানির শেয়ার বিক্রি হয়েছে মূল মার্কেটের চেয়েও বেশি দামে, এই সংখ্যাটি ১০।
এ ছাড়া দুই বাজারেও সমান দরে বিক্রি হয়েছে ৭টি কোম্পানির শেয়ার।
ব্লকে মার্কেটে বুধবার ১৩০ বারে ৩১ লাখ ৩০ হাজার ২৮১টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ২৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার টাকায়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ কোটি ৩৭ লাখ ১৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে রেনাটার শেয়ার। মূল বাজারে শেয়ারটি ১ হাজার ২১৭ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হলেও ব্লকে হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ২৩০ টাকায়। অর্থাৎ মূল বাজারের চেয়ে ব্লক মার্কেটে ৪১ টাকা ৯০ পয়সা বেশিতে দরে লেনদেন হয়।
আর বেক্সিমকো ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর লেনদেন হয়েছে ২ কোটির বেশি।
ব্লক মার্কেটে সর্বনিম্ন ১০৬ টাকা ও সর্বোচ্চ ১১৫ টাকা ৬০ পয়সায় বেক্সিমকোর ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৬৪টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ২ কোটি ৪ লাখ ২৪ হাজার টাকায়। আর মূল বাজারেও বিক্রি হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে।
মূল বাজারের চেয়ে ৩৩ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেয়ার। ৪৮৫ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে ২ কোটি ৭৬ লাখ ৬২ হাজার টাকার শেয়ার। ফ্লোর প্রাইস ৫১৮ টাকা ৭০ পয়সায় ক্রেতা নেই মূলবাজারে।
কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন ও কেডিএস অ্যাক্সেসরিজের। ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার মূল বাজারে লেনদেন হয়েছে ৮৪০ টাকা ৫০ পয়সায়। ৪০ টাকা ৫০ পয়সা কমে ব্লকে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮০০ টাকা। মোট লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৬৭ লাখ ২৪ হাজার টাকার।
মূল বাজারের চেয়ে ৪ টাকা ৫০ পয়সা বেশিতে কেডিএস অ্যাক্সেসরিজের শেয়ার ব্লকে হাতবদল হয়েছে ৯৫ টাকা ৪০ পয়সায়। ১ লাখ ১৭ হাজার ৪০৬টি শেয়ার ১ কোটি ৬ লাখ ১৭ হাজার টাকা লেনদেন হয়েছে।
বাকি যাদের দর কমেছে
এসিআই, একমি ল্যাব, একমি পেস্টিসাইডস, আলহাজ্ব টেক্সটাইল, আমান ফিড, আনলিমায়ার্ন ডায়িং, বিবিএস ক্যাবলস, বেঙ্গল উইন্ডসর, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, বেক্সিমকো ফার্মা, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ই-জেনারেশন, ইস্টার্ন হাউজিং, ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড, জেনেক্স ইনফোসিস, জিপিএইচ ইস্পাত, আইএফআইসি ব্যাংক, ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং, আইপিডিসি, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, ম্যাকসন স্পিনিং, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ন্যাশনাল পলিমার, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, সালভো কেমিক্যাল, সি-পার্ল, শাইনপুকুর সিরামিকস ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
যেগুলোর দর বেড়েছে
বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, বসুন্ধরা পেপার, ফরচুন সুজ, লাফার্জ হোলসিম, মেট্রো স্পিনিং, ওরিয়ন ফার্মা, সোনালী আঁশ ও সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার ব্লক মার্কেটে মূল বাজারের চেয়ে বেশি দরে বিক্রি হয়েছে।
একই দর
অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, বিচ হ্যাচারি, সেন্ট্রাল ফার্মা, সিএনএ টেক্সটাইল, এইচআর টেক্সটাইল ও স্কয়ার টেক্সটাইলের দর মূল বাজার আর ব্লক মার্কেটে ছিল সমান সমান।
ব্লক মার্কেট কী
ব্লক মার্কেট হচ্ছে এমন একটা মার্কেট যেখানে বেশি পরিমাণের শেয়ার কেনাবেচা হয় যার শেয়ারের দাম এবং ভলিউম বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আগে থেকেই ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে ঠিক করা থাকে। মূল বাজারের মতো শেয়ারের দর হেঁকে সেখানে অচেনা কারও কাছ থেকে কেনার সুযোগ নেই।
ডিএসই এর যেই ট্রেডিং প্লাটফর্ম বা সফটওয়্যার আছে তার মাধ্যমেই এই ব্লক মার্কেটে লেনদেন করা হয়। সাধারণ মার্কেটের লেনদেনের মতই ব্লক মার্কেটে লেনদেন সম্পন্ন হয়।