উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার। এটিকে বাংলাদেশের ‘উন্নয়নের সফল আখ্যান’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ঢাকার তেজগাঁওয়ের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের মধ্য দিয়ে তাক লাগিয়ে দেয়া দেশগুলোর একটি হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।’
আলোচনায় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ মুক্ত ও স্বচ্ছ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি সংকটে পড়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য এ যুদ্ধ বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে বিশ্বব্যাংকের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব সম্পদ দিয়েই জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন ও প্রশমনে কাজ করছে তার সরকার। উন্নয়নের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করতে আন্তঃযোগাযোগ শক্তিশালী করণের ওপর জোর দেন সরকারপ্রধান।
ক্ষুদ্র, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করার পাশাপাশি তার সরকার আগামী প্রজন্মের জন্য উন্নত ও সুন্দর জীবন নিশ্চিত করতে ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নেও কাজ করছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে অঙ্গীকার করেন মার্টিন রাইজার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার এমডিজি সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে এবং এখন এসডিজি বাস্তবায়নে কাজ করছে।
বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের পারস্পরিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী যৌথভাবে উদযাপনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি গণভবনে জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তোলা বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট রবার্ট স্ট্রেঞ্জ ম্যাকনামারারের একটি ছবিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি।
প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলা সেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্থিতিশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিশ্বব্যাংক। এদিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে দাতাপ্রতিষ্ঠানটি।
এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন এবং দুর্যোগ প্রস্তুতিতে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান রাইজার।
রাইজার বলেন, ‘গত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়নে অংশীদার হতে পেরে বিশ্বব্যাংক গর্বিত। দ্রুত দারিদ্র্য হ্রাস এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উদাহরণ হতে পারে।’
এছাড়াও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গেও তার সাক্ষাতের বিষয়টি উল্লেখ করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। সাম্প্রতিক বৈশ্বিক ধাক্কা মোকাবিলা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা তৈরি করতে নীতিগত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।