বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিজিএমইএ সভাপতি বললেন সংকট নেই, অন্যদের দ্বিমত

  •    
  • ১২ নভেম্বর, ২০২২ ২২:০৭

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কথা বলে দেশের ভেতরে ও বাইরে অনেকেই ক্রেতাদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করছেন। এটা ঠিক না। যতটা সংকট বলা হচ্ছে, ততটা নয়। আমাদের যথেষ্ট সক্ষমতা আছে।’

পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, পোশাক শিল্প বর্তমানে কোনো সংকটের মধ্যে নেই। তিনি বলেন, ‘অনেকেই সংকটের কথা বললেও আমি কোনো সংকট দেখছি না। এলসি খুলতে কোনো সমস্যা নেই। পণ্য রপ্তানিতেও সমস্যা দেখছি না।’

শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‌‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’ উপলক্ষে বিজিএমইএ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ফারুক হাসান বলেন, ‘সবাই খালি নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করে। কেউ ইতিবাচক সংবাদ প্রচারে এগিয়ে আসে না। আমাদের ভালো খবর পরিবেশন করা উচিত।’

তবে তার এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন তৈরি পোশাক খাতের অনেক ব্যবসায়ী। তারা বলছেন, এ খাতে সংকট ঘণীভূত হচ্ছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কথা বলে দেশের ভেতরে ও বাইরে অনেকেই ক্রেতাদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করছেন। এটা ঠিক না। যতটা সংকট বলা হচ্ছে, ততটা নয়। আমাদের যথেষ্ট সক্ষমতা আছে। অনেক ফ্যাক্টরিতে নিজস্ব সোলার ব্যবহার করা হয়। তবে যে সংকটের কথা বলা হচ্ছে, এটা বৈশ্বিক সমস্যা। সৃষ্ট সংকট নিরসনে আমরা সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।’

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে কেন এত বড় আয়োজন করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক হাসান বলেন, ‘বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা পণ্যের মান নিশ্চিত করেই কাজ করছি।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রদর্শনীতে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৭০০ বিদেশি অতিথি আসছেন। তারা এখানে ডলার নিয়ে আসবেন। এতে সরকারের বিপুল আয় হবে।’

তিনি বলেন, ‘মহামারি করোনা থেকে আমরা বের হয়ে এসেছি। এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নতুন করে বিশ্ব অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এ চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমরা ক্রেতাদের দেখাতে চাই, আমরাও পারি। এ জন্যই আয়োজন করা হচ্ছে “মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’’।’

বিজিএমইএ-এর এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘সবাই বলে আমাদের সংকট চলছে। তবে আমরা সংকটের কথা বলে ক্রেতাদের মাঝে আতংক তৈরি করতে চাই না। সবাইকে নিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করাই আমাদের উদ্দেশ্য।

রাজধানীর একটি হোটেলে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। ছবি: নিউজবাংলা

ফারুক হাসান বর্তমান পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক বললেও অন্যান্য নেতারা বলেন, সামনে আরও সংকট গভীর হবে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে পোশাক শিল্পকে বাঁচানো কঠিন হবে। এ শিল্পকে রক্ষায় জরুরিভাবে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন বিজিএমইএ-এর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল, সংগঠনের সহসভাপতি শহীদুল্লা আজিম।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ-এর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে পোশাক খাত সংকটের মধ্যে রয়েছে। দ্রুত এ সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া না গেলে যে কোনো সময় কারখানাগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা কঠিন সমস্যার মধ্যে আছি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নির্দেশনায় বলেছে, ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির দায় যদি এক দিনও কেউ দেরি করে, তাহলে তাদের এডি লাইসেন্স বাতিলসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

‘এই চিঠি পাওয়ার পর থেকে সব ব্যাংক ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের বেশিরভাগেরই ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি ওভারডিউ হচ্ছে। কারণ, বায়াররা পেমেন্ট দিচ্ছে না। শিপমেন্ট নিচ্ছে না। শিপমেন্ট গেলেও ১৮০ দিন পর পেমেন্ট দেবে। এ সব কারণে দেখা যাচ্ছে, আমরাও পেমেন্ট পাচ্ছি না, তাই আমরা পেমেন্ট দিতেও পারছি না। যেহেতু পেমেন্ট দিতে পারছি না, সেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠি পাওয়ার পর থেকে সব ব্যাংক হাত-পা গুটিয়ে বসে গেছে।’

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা আমাদের ওপর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে বায়ারদের যা অর্ডার আছে, সেগুলোও রপ্তানি করতে পারব না।’

মিরপুরের একটি পোশাক কারখানার মালিক জানান, বিজিএমইএর নেতারা সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হয়। এখনও প্রতিদিন ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। আর গ্যাসের সমস্যা তো বহু পুরনো।

বিজিএমইএ-এর সহসভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখনও শঙ্কার মধ্য দিয়ে দিন যাচ্ছে। ডিসেম্বরে কী হয় তা বলা কঠিন। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের মধ্যে নতুন করে বৈশ্বিক কারণে অনেক ক্রেতা অর্ডার করা পোশাকের ২০ শতাংশের বেশি নিচ্ছে না। আবার নতুন অর্ডার না থাকায় আমাদের উৎপাদনও কমে গেছে প্রায় ৩০ শতাংশ।’

এ বিভাগের আরো খবর