বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিশ্বব্যাংকের ঋণ নিয়েও আসছে সুখবর

  •    
  • ১১ নভেম্বর, ২০২২ ২৩:৪১

আইএমএফের ঋণের সুখবরের মধ্যেই ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে আলোচনার জন্য তিন দিনের সফরে ঢাকা আসছেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার। বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের নতুন আবাসিক প্রতিনিধি আব্দুল্লাই শেখকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সংস্থাটির ঢাকা অফিস।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বহুল প্রতিক্ষিত ঋণের সুসংবাদের মধ্যেই বিশ্ব আর্থিক খাতের আরেক মোড়ল সংস্থা বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ১০০ কোটি (১ বিলিয়ন) ডলার ঋণ দেয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে। খুব শিগগিরই ওয়াটিংটনভিত্তিক এই উন্নয়ন সংস্থাটির কাছ থেকে বাংলাদেশ আরেকটি সুখবর পাবে বলে আশা করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।

আড়াই বছরের করোনাভাইরাস মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় তছনছ হয়ে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি। ওলোটপালট হয়ে গেছে সব হিসাবনিকাশ। যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। আমদানি বাড়ায় এবং রপ্তানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কমায় বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ কমছেই; বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট) ঘাটতি বাড়ছে।

এই কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ আইএমএফের পাশাপাশি বাজেট সহায়তা হিসাবে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চেয়েছিল। এই ঋণ নিয়ে গত মধ্য অক্টোবরে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভা চলাকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সংস্থা দুটির কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনাও করেছিলেন।

সেই আলোচনার ধারাবাহিকতায় আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল গত ২৬ অক্টোবর ঢাকায় এসেছিলেন। দুই সপ্তাহ ঢাকায় অবস্থান করে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা শেষে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের চাওয়া সাড়ে ৪ বিলিয়ন (৪৫০ কোটি) ডলারের পুরোটাই সাত কিস্তিতে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে গেছেন তারা।

এবার ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে আলোচনার জন্য তিন দিনের সফরে ঢাকা আসছেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার। বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের নতুন আবাসিক প্রতিনিধি আব্দুল্লাই শেখকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সংস্থাটির ঢাকা অফিস।

এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ছাড়াও সরকারের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূলত বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুল্লাই শেখকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী এবং বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার ঢাকায় আসছেন। সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশ যে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছিল, সেটা নিয়েও আলোচনা হবে।’

সরকারের নীতিনির্ধারকদের একজন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইএমএফ ঋণ দেয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর এখন অন্য সব দাতা সংস্থাও বাংলাদেশকে ঋণ দিতে চাইবে-এটাই স্বাভাবিক। কেননা, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যে কোনো উন্নয়ন সংস্থা বা দাতা দেশ আইএমএফেল মূল্যায়নকে একটি মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে। আইএমএফ যেহেতু আমাদের ঋণ দিচ্ছে, এখন শুধু বিশ্বব্যাংক নয়, এডিবি, জাইকাসহ অন্য সব দাতা সংস্থা ও দেশও বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়াবে। আমরা এখন করোনার মতো যুদ্ধের ধাক্কাও দ্রুত সামলে উঠতে পারবো।’

দেড় মাসের মধ্যে ফের ঢাকায় আসছেন রাইজার

গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এসেছিলেন বিশ্বব্যাংক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার। তিন দিনের সফর শেষে ফিরে গিয়েছিলেন ২৪ সেপ্টেম্বর। দেড় মাস না যেতেই তিন দিনের সফরে আবার ঢাকা আসছেন তিনি।

বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের নতুন আবাসিক প্রতিনিধি (বাংলাদেশ-ভুটান ও নেপাল) আব্দুল্লাই শেখকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ছাড়াও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে আবার আসতে পেরে ও গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার উদ্যোগগুলো নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। এসব সংস্কার বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করবে, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি এবং সব মানুষের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে।’

সফরকালে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের পরবর্তী কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুল্লাই শেখকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন রাইজার। আব্দুল্লাই শেখ ২০২৩ সাল থেকে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করবেন। এবারের সফরে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্পও ঘুরে দেখবেন তারা।

আব্দুল্লাই শেখ বিবৃতিতে বলেন, ‘উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য পেয়েছে। বিশেষ করে দারিদ্র্য কমিয়ে আনা, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর বিভিন্ন উদোগ, দুর্যোগ মোকাবিলা এবং বিদ্যালয়ে উপস্থিতির ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতার দিকগুলোতে বাংলাদেশ বেশ ভালো করেছে। বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমি এ দেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।’

আফ্রিকার দেশ সেনেগালের নাগরিকক শেখ আব্দুল্লাই ১৯৯৫ সাল থেকে বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করছেন। ইতিমধ্যে তিনি বিভিন্ন দেশে নেতৃস্থানীয় পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্যামেরুন, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, গিনি, গ্যাবন ও কঙ্গোতে তিনি বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেছেন। আফগানিস্তান, মিয়ানমার ও মালদ্বীপে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ম্যানেজার।

স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। অনুদান ও ঋণ হিসেবে এ পর্যন্ত ৩৭ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশকে দিয়েছে আন্তর্জাতিক এ আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের মোট ৫৫টি প্রকল্প প্রকল্প চলমান আছে বাংলাদেশে।

এ বিভাগের আরো খবর