বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দাম কমছে ইলিশের

  •    
  • ১১ নভেম্বর, ২০২২ ১৬:১২

কারওয়ান বাজারে শুক্রবার ১ কেজি ৪০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় এক হাজার ৩০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল এক হাজার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।

ইলিশকে অনেকেই বলে থাকেন ‘মাছের রাজা’। সে বিষয়ে বিতর্ক থাকলেও স্বাদে-গুণে অনন্য ইলিশ পছন্দ করেন না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন। ভরা মৌসুমেও চড়া দামের কারণে জাতীয় মাছ ইলিশ থাকে নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে।

প্রজনন মৌসুমের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও ইলিশ আহরণ শুরু হয়েছে। রাজধানীর বাজারে মাছটির সরবরাহ বৃদ্ধির সঙ্গে কমতে শুরু করেছে দাম। এরপরও নিম্নবিত্তের ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে মাছটি।

মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে প্রতি বছর ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ ধরা বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে মাছটির পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বিক্রেতারা জানান, পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও প্রজনন মৌসুমের আগের তুলনায় ইলিশের বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে। আকারভেদে দামও কমেছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত, তবে ক্রেতাদের দাবি, দাম এখনও অনেক বেশি।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে শুক্রবার এসব তথ্য জানা গেছে।

কারওয়ান বাজারে ১ কেজি ৪০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় এক হাজার ৩০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল এক হাজার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।

১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ থেকে ১০০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহে বিক্রি হয় এক হাজার ২০০ টাকায়।

৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ইলিশের কেজি ছিল এক হাজার টাকা, যা আজ বেচাকেনা হয় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায়। আর ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকা কেজি দরে।

বিক্রেতা মারুফ বলেন, ‘চাহিদা কমে গেছে অনেক। সিজিনের (সিজন বা মৌসুম বোঝাতে চেয়েছেন) মতো চলে না। সিজিনে চাহিদা এক রকম আর আনসিজিনে আরেক রকম।’

তিনি আরও বলেন, ‘অভিযান আছে না ২২ দিনের (প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞা), এরপর মানুষ ইলিশ কম খায়। কারণ ইলিশের স্বাদ কমে যায়।’

বিক্রি কমে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগে ১৪০ থেকে ১৬০ পিস (৯০ থেকে ১০০ কেজি) বিক্রি করতাম। এখন ৭০ থেকে ৮০ পিসের (৫০ থেকে ৬০ কেজি) মতো বিক্রি হচ্ছে।’

শীতকালে ইলিশের দাম কমে যায় বলে জানান আরেক বিক্রেতা জীবন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘অভিযানের (প্রজনন মৌসুম) ২, ৩ দিন পর থেকে চাহিদা কমতে থাকে। শীতকাল না?’

তিনি আরও বলেন, ‘শীতকাল আইব, স্বাদ কমব। শীতের মধ্যে সকালে ইলিশের তেল জমে যায়, গরম না করে খাওয়া যায় না। গরমের দিনে করতে হয় না। এসব কারণে চাহিদা কমে যায়।’

‘পূর্ণিমা যাওয়ার পর কয়েক দিন ইলিশ থাকব (আহরণ ও সরবরাহ)। এরপর আবার কমব আরকি।’

ইলিশের দাম কমার আরেকটি কারণ উল্লেখ করেন জীবন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এখন ১০০ পিস মাছের মধ্যে ১০ থেকে ১২টি বাদে সবগুলোর পেটেই ডিম পাওয়া যায়। এই মাছগুলা নরম, দুর্বল হয়, যার কারণে দাম কমে যায়, তবে যেগুলা শক্ত মাছ, সেগুলার আবার দাম বেশি।’

ইলিশের দাম এখনও বেশি বলে দাবি করেন ক্রেতারা। কারওয়ান বাজারে সস্ত্রীক ইলিশ কিনতে এসেছিলেন বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন বা পেট্রোবাংলার কর্মকর্তা সুমন।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এখনও দাম আছে। আমরা বরিশালের মানুষ। ইলিশ চিনি। এগুলো পদ্মার ইলিশ না, চিটাগংয়ের। এগুলোর স্বাদ কম হয়। এ জন্য হয়তো চাহিদা একটু কম থাকে।’

সুমনের স্ত্রী বিথী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মোটামুটি দাম আছে। আমাদের চাহিদা অনুযায়ী দাম অনেক বেশি।’

আরেক বিক্রেতা মাসুদ বলেন, ‘বিক্রি মোটামুটি হচ্ছে, তবে আগের তুলনায় চাহিদা কমে গেছে। এখন দিনে ৮০ পিস মাছ বিক্রি করি। আগে ২০০ থেকে ২৫০ পিস বিক্রি করতাম।’

শীতকালে ইলিশের চাহিদা কমে যাওয়ার প্রসঙ্গ টানেন এই বিক্রেতাও।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এখন শীতকাল। মানুষ কম খায়। কারণ গরমের দিনের মতো ইলিশের স্বাদ থাকে না; সামনে আরও কম খাইব।’

ইলিশের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে জানিয়ে মাসুদ বলেন, ‘এখনও মাল আসতেছে; কোনো সমস্যা নাই।’

বাজার থেকে ফেরার পথে কথা হয় রিকশাচালক কালামের সঙ্গে। ইলিশের দাম কমার প্রসঙ্গ তুলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুই-এক শ টাকা কমলেই কি আর আমরা কিনতে পারমু? ৫০০ টাকার ওপরে মানে ওইটা ধরা যাইব না।’

এদিকে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে বিভিন্ন সবজির দাম।

আগের সপ্তাহে ৬০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম কমে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়াও ১০ থেকে ২০ টাকা কমে প্রতি কেজি বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৩০ টাকা, মুলা ২০ থেকে ৩০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর