বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ই-কমার্স বিপর্যয় ঠেকাতে নতুন আইন আনছে ভোক্তা অধিকার

  •    
  • ১০ নভেম্বর, ২০২২ ২৩:১৯

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘২০০৯ এর আইনে ই-কমার্স না থাকায় হাজার হাজার মামলা পেন্ডিং হয়ে গেছে। এর মধ্যে একটি একক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই ৭ থেকে ৮ হাজার মামলা পেন্ডিং হয়ে আছে।’

২০০৯ সালের 'ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে’ ই-কমার্স নিয়ে কোনো বিধিমালা নেই। এ কারণে বর্তমান সময়ে এসে ই-কমার্স নিয়ে যে সব প্রতারণার অভিযোগ উঠছে, সেগুলো নিষ্পত্তি করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষে। তবে আইনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে আর নতুন আইনে ই-কমার্স নিয়ে বিধিমালা যুক্ত হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অবহিতকরণ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এসব কথা বলেন। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং প্রেসক্লাবের যৌথ উদ্যোগে এই সেমিনার আয়োজিত হয়।

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘২০০৯ এর আইনে ই-কমার্স না থাকায় হাজার হাজার মামলা পেন্ডিং হয়ে গেছে। এর মধ্যে একটি একক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই ৭ থেকে ৮ হাজার মামলা পেন্ডিং হয়ে আছে। ২০২১ সালের জুনের আগেও আমরা কেইস-টু-কেইস ধরে মামলা নিষ্পত্তি করতাম। কিন্তু যখন মালিক পালিয়ে যাচ্ছে বা মানি লন্ডারিং হচ্ছে, তখন আমরা নিষ্পত্তি করতে পারছি না।

‘আমরা নতুন আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় পাঠিয়েছিলাম। সেখান থেকে অবজারভেশন দিয়ে আবার আমাদের কাছে পাঠিয়েছে। আমরা সেটা ঠিক করে আবার দিয়েছি। সেখানে ই-কমার্স নামে আলাদা চ্যাপ্টার থাকবে। তাহলে আমরা এই ডিজাস্টার কাভার করতে পারব।’

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘ভোক্তা অধিদপ্তরের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো সঠিক তথ্যের অভাব। এই সংস্থার তথ্যের বৈধ উৎস নেই। ভোক্তা বা ব্যক্তিগত উৎস থেকে যে তথ্য পাওয়া যায়, সেগুলোর সঠিকতা যাচাই করারও সুযোগ নেই।’

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে আমাদের আভিযান নিয়মিত চলছে। আমাদেরও বেশ কিছু কিছু দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো ফিল্ড পর্যায়ে আমাদের শক্তিশালী সোর্স বা ইনফরমার না থাকা। এ জন্য আমরা দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করছি, যেন তারা তাদের গোয়েন্দা সোর্স থেকে প্রাপ্ত তথ্য আমাদেরকে অবহিত করে। '

তিনি বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে আমরা প্রতিনিয়তই কাজ করে যাচ্ছি। তবে জনবল সংকট আছে। প্রতিদিন ৪০-৫০টি অপারেশন চালানো হয়। তবে দেশের বাজার এতটা বিস্তৃত, এর ১০ গুণ কার্যক্রম পরিচালনা করলেও তা যথেষ্ট নয়।’

তিনি বলনে, ‘২০০৯ সালের আইনকে পরিবর্তন করে নতুন কিছু বিষয় যোগ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শাস্তির মাত্রা বাড়ানো, ই-কমার্স নিয়ে বিধিমালা। তবে আইনের তিনটি বিষয় আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’

তিনি বলনে, ‘ভোক্তার অধিকার সম্পর্কে ভোক্তা জানেন না। আমাদের আইনের মধ্যে এটি একটি বড় বিষয় যে আমরা কীভাবে ভোক্তাকে তার অধিকার সম্পর্কে জানাব। আমাদের জনবল মাত্র ২১৬ জন, সেখানে এই সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আর একটি বিষয় হচ্ছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ। বাজার মনিটরিং করা। আমরা সেটা করছি। কিছু কিছু ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার জন্য এমন কাজ করে থাকে। তারা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর জন্য। আমরা কিন্তু ডিম, তেল ও চিনি নিয়ে অভিযান করে এইগুলো ধরেছি।’

তিনি বলেন, ‘ভোক্তা প্রতারিত বলে মনে করলে আইনের বিভিন্ন ধারায় সে অভিযোগ করতে পারে। এটা একটা ইউনিক আইন। এই আইনে যে ক্ষতিপূরণ তার ২৫ ভাগ যিনি অভিযোগ করেন তিনি পান। আর আইনটা এই জন্য করা যাতে তিনি অভিযোগ জানাতে আগ্রহী হন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোক্তারা প্রতারিত হতে হতে এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, এখন তাদের যে অধিকার খর্ব হচ্ছে, সেটাই আর বুঝতে পারে না। তথ্য অনুযায়ী তেলের সংকট হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সংকট হয়েছে। কোম্পানিগুলো উৎপাদন কমিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সরবরাহ আদেশ ধরে রাখছে। এক কথায় এই বাজারে এক ধরনের মনোপলি বা সিন্ডিকেট হয়ে গেছে।’

মহাপরিচালক বলেন, ‘একজন ভোক্তার ভোগ করার যে অধিকারগুলো আছে, তা আমরা জানতে চাই। ভোক্তা অধিকার সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে সুষ্ঠু সমাজ গড়ে উঠবে। রাষ্ট্রের যেমন দায়িত্ব রয়েছে ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণের ঠিক তেমনি ভাবে ভোক্তাদের ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবে সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন।

এ বিভাগের আরো খবর